শীঘ্রই মেট্রো রেলের ভিত্তিপ্রস্তর

ctgObaidulkaderরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ অর্থায়নকারী সংস্থা জাইকা মেট্রোরেল প্রকল্পের জন্য পরামর্শক নিয়োগের সবুজ সংকেত দিয়েছে জানিয়ে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিগগিরই এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

শুক্রবার খাগড়াছড়ি যাওয়ার পথে চট্টগ্রামে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পরামর্শক নিয়োগের অনুমতি পাওয়ায় মেট্রোরেল প্রকল্পের এক ধাপ অগ্রগতি হলো।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “জাইকার সাথে ২২ হাজার কোটি টাকার মেট্রো রেল চুক্তি করেছিলাম। ইতোমধ্যে জাইকা কনসলটেন্ট নিয়োগের অনুমতি দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অচিরেই উত্তরায় এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন।”

ঢাকায় মেট্রো রেল প্রকল্প বাস্তবায়নে জাপান সরকারের দাতা সংস্থা জাইকার সঙ্গে গত ২০ ফেব্রুয়ারি চুক্তি করে সরকার।

চুক্তি অনুযায়ী ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (এমআরটি) আওতায় মেট্রোরেলের পরামর্শক নিয়োগে প্রায় ৯২৪ কোটি টাকা (১১ কোটি ৬৩ লাখ ডলার) ঋণ দেবে জাইকা।

পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা লাগবে, যার ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকাই জাইকা দেবে। বাকি ৫ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা যোগাবে সরকার।

২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই উড়াল রেলপথ উত্তরা তৃতীয় পর্যায় থেকে শুরু হয়ে পল্লবী হয়ে সংসদ ভবনের পাশ দিয়ে খামারবাড়ি হয়ে ফার্মগেইট দিয়ে মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত যাবে।

মেট্রোরেল চালু নিয়ে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সমীক্ষা শুরু হয় এবং বর্তমান সরকার আমলে তা এগিয়ে চলে। তবে প্রথম নকশায় বিজয় সরণী রুট নিয়ে বিমানবাহিনীর আপত্তির কারণে ঝুলে যায় প্রকল্পটি।

সবশেষে গত ১৮ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি- একনেকে এই প্রকল্প অনুমোদন পায়। সিদ্ধান্ত হয়, তিন পর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে ২০২২ সালের মধ্যে।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মেট্রোরেল চালু হলে এই পথে ঘণ্টায় ৬০ হাজার মানুষ চলাচল করতে পারবে।

পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলবে তিন ধাপে। প্রথমে পল্লবী থেকে সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত (১১ কিলোমিটার) ২০১৯ সালের মধ্যে, দ্বিতীয় পর্যায় সোনারগাঁও হোটেল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত (৪ দশমিক ৪০ কিলোমিটার) ২০২০ সালের মধ্যে এবং তৃতীয় পর্যায় পল্লবী থেকে উত্তরা পর্যন্ত (৪ দশমিক ৭ কিলোমিটার) ২০২২ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে।

 

‘সড়কের কাজে কানামাছি খেল’

চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কের ১৬টি সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে এই সফরে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের অক্সিজেন-হাটহাজারি সড়কের ছড়ারপুল এলাকায় নেমে সংস্কার কাজ দেখেন যোগাযোগ মন্ত্রী।

এ সময় কাজের অগ্রগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (চট্টগ্রাম) রানা প্রিয় বড়ুয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিস দিতে বলেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “সড়কের কাজ নিয়ে কানামাছি খেলা হচ্ছে। এ সড়কটা যতটা গুরুত্ব পাওয়া দরকার ততটা গুরুত্ব পায়নি। দায়িত্ব নেয়ার পর গত ১৯ মাসে আমি সাতবার এ সড়কের কাজ পরিদর্শনে এলেও কাজ চলছে শম্ভুক গতিতে।”

এজন্য ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের কাজে গাফলতি আছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।

যোগাযোগমন্ত্রী বলেন, “এ সড়কের জন্য বরাদ্দ ১২৯ কোটি টাকা। পাওয়া গেছে ৩৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩২ কোটি টাকাই আমার মেয়াদে পাওয়া গেছে। এ বছরও এ সড়কের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ আরো বাড়ানো হবে।”

পরিদর্শনের সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিষয়েও ক্ষোভ  প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

কাজের অগ্রগতি না দেখলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।

তবে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে তা এড়িয়ে যান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান বীর বাহাদুর এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ