নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরামের ৬ দফা দাবি ইসির কাছে

নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসি নিউজ, (২৪ সেপ্টেম্বর) : ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনি আইন সংস্কারে ৬ দফা দাবি তুলে ধরেছে নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরাম। মঙ্গলবার (২৩সেপ্টেম্বর) বিকেলে আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকে এসব দাবি তুলে ধরেন ফোরামের প্রতিনিধিরা।

নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরামের দাবিগুলো হলো- নারী প্রার্থীর বাধ্যতামূলক মনোনয়ন, দলীয় কাঠামোতে নারীর নেতৃত্ব, নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যয়সীমার সমপরিমাণ অর্থ মঞ্জুরি, অনলাইন ও অফলাইনে হয়রানি প্রতিরোধে নীতি ও নির্দেশনা, সংসদে সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচন এবং সব আসনে ‘না’ ভোট রাখার বিষয়ে দাবি জানানো হয়। ইসিতে জমা দেওয়া এ সংক্রান্ত লিখিত আবেদনও ফোরামের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়।

নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য মাহীন সুলতানের নেতৃত্বে নারী পক্ষের নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাদাফ সায, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের সভাপতি সীমা দত্ত এবং নারী সংহতির সভাপ্রধান শ্যামলী শীল বৈঠকে অংশ নেন। এসময় চার নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ও ইসি সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে মাহীন সুলতান সাংবাদিকেদের বলেন, ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে এবং অনেক বিষয়ে ভালো আউটকাম পেয়েছি আমরা। নারী ভোটার, নারী প্রার্থী ও নারী নাগরিকদের সমান মর্যাদা নিশ্চিতকরণে আমাদের দাবি ও প্রত্যাশা তুলে ধরেছি। নির্বাচন কমিশনও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।’ দলগুলোর কাছে ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়নে বাধ্যবাধকতা আরোপের বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সকল পার্টি থেকে ৩৩ শতাংশ নারী প্রার্থীর মনোনয়ন চাই, যাতে নির্বাচনে যথাযথ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা যায়। আলোচনায় আমাদের চিন্তাভাবনা ও দাবিগুলো ইলেকশন কমিশনের সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে।’

মাহীন সুলতান জানান, আচরণবিধিতে নারী প্রার্থী বা ভোটারের বিরুদ্ধে সহিংসতা বা হয়রানির ক্ষেত্রে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান এবং নারী প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন রকমের হয়রানি, বিশেষ করে সাইবার ভায়োলেন্সের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান যুক্ত করা হয়েছে বলে ইসি জানিয়েছে। নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরামের উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণে নতুন দিগন্ত খুলবে এবং নারীর প্রতি সমান মর্যাদা নিশ্চিত হবে বলে জানান তারা।

ইতোমধ্যে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার বিধানটি যুক্ত রাখা হয়েছে বলে বৈঠকে তুলে ধরে নির্বাচন কমিশন। আগামীতে নারী নেতৃত্ব বাড়াতে দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা ফোরামের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়।

নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরামভুক্ত সংগঠনগুলো হচ্ছে- ক্ষুব্ধ নারী সমাজ, গণসাক্ষরতা অভিযান, দর্বার নেটওয়ার্ক ফাউন্ডেশন, নাগরিক কোয়ালিশন, নারী উদ্যোগ কেন্দ্র (নউক), নারীগ্রন্থ প্রবর্তনা, নারী সংহতি, নারী পক্ষ, নারীর ডাকে রাজনীতি, ফেমিনিস্ট অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশ (ফ্যাব), বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র ও ভয়ের ফর রিফর্ম।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ