সাবধান, ঘরে ঘরে চিকুনগুনিয়া
স্বাস্থ্য ডেস্ক, এবিসি নিউজ, ঢাকা (১০অক্টোবর) : ডেঙ্গুর পরে এখন চাকুনগুনিয়ার সঙ্গে পরিচিত হয়ে গেছেন সবাই। এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ, যা মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। এটি সাধারণত প্রাণঘাতী নয়, তবে সংক্রমণের পরে কিছুদিন বা কখনও কখনও কয়েক মাস পর্যন্ত জয়েন্ট পেইন (গাঁটে ব্যথা) টিকে থাকতে পারে। চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে এখানে কিছু বিষয়ের উল্লেখ করা হলো, এই রোগের ক্ষেত্রে যেসব বিষয়ে বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে-
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
সাধারণ চিকুনগুনিয়া ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে জ্বর সেরে যায়। কিন্তু জয়েন্টে ব্যথা ও ক্লান্তি কয়েক সপ্তাহ বা মাস থাকতে পারে। তবে যে উপসর্গগুলো থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন সেগুলো হলো প্রচণ্ড পেটে ব্যথা, রক্ত বমি বা পায়খানায় রক্ত, শ্বাসকষ্ট, ঘন জ্বর যেটা নেমে যাচ্ছে না, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। রোগ নির্ণয়টা সবার আগে জরুরি। নিশ্চিত করতে হবে এটি চিকুনগুনিয়া, না অন্য কিছু। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খেতে হবে।
মহাঔষধ বিশ্রাম আর তরল খাবার
এই অসুখে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, তাই পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। একইসঙ্গে পানিশূন্যতা এড়াতে পানি পান করুন। প্রচুর পানি, স্যালাইন, জুস ইত্যাদি পান করুন। সহজপাচ্য ও পুষ্টিকর খাবার খান যেন শরীর দ্রুত সুস্থ হতে পারে।
আরও যা খাবেন
ভাত, ডাল, সবজি সেদ্ধ সবজি, স্যুপ, খিচুড়ি (কম তেল-মসলা দিয়ে) খেতে পারেন। ফলমূলের ভেতরে (ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ) কমলা, মাল্টা, আমলকি, পেঁপে, কলা, আপেল, ডালিম (রক্তশূন্যতা রোধে)। প্রোটিনযুক্ত খাবার খান। এরমধ্যে রাখতে পারেন ডিম (সেদ্ধ হলে ভালো), মুরগির স্যুপ বা সেদ্ধ মাংস, ডাল, ছোলা। তরল খাবারের জায়গায় নরমাল পানি, ওরস্যালাইন, ডাবের পানি, ফলের রস (চিনি ছাড়া হলে ভালো), ভেজানো চিঁড়া, স্যুপ, সেদ্ধ খাবার খাওয়া দরকার।
মশা নিয়ন্ত্রণে রাখুন
নিজেকে মশার কামড় থেকে বাঁচান (মশারি, স্প্রে ব্যবহার করুন)। আশপাশ পরিষ্কার রাখুন যেন এডিস মশা বংশবিস্তার করতে না পারে। শিশুকে স্কুলে দেওয়ার সময়ে শরীরে মশার ওষুধ লাগিয়ে দিন। স্কুল থেকে ফেরার পরে আবারও লাগিয়ে দিন।
এসময় একেবারেই খাবেন না
এসময় তেল-মসলা ও ভাজাভুজি খাবার একেবারেই খাবেন না। ফাস্টফুড, চিপস, স্ন্যাকস এড়িয়ে চলবেন। কোমল পানীয়, প্যাকেট জুস, আইসক্রিম, ক্যান্ডি বা অতিরিক্ত মিষ্টান্ন একেবারেই খাবেন না। চা-কফি কম খান (খুব বেশি না)। চিকিৎসকরা বলছেন, ঠাণ্ডা ও সংক্রমণ বাড়ায় এমন খাবার খাওয়া যাবে না। যেমন ইচ্ছে করলেও বরফযুক্ত পানি বা ঠাণ্ডা পানীয় খাবেন না। ঠাণ্ডা দুধ, দই (কারও ঠাণ্ডা লেগে গেলে) এড়িয়ে চলবেন। ওজন কমে গেলে ভয় পাবেন না-পরে স্বাভাবিক ডায়েট শুরু করলে আগের মতো স্বাস্থ্য ফিরবে।