সিনিয়র সচিব মোখলেসের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ

বিশেষ প্রতিনিধি, এবিসি নিউজ, ঢাকা (২২ সেপ্টেম্বর) : চুক্তি-ভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমানকে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সিনিয়র সচিব) হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

বদলি করে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

এরআগে গত বছর ২৮ আগস্ট তাকে চুক্তিতে দুই বছরের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

নিয়োগের ১৩ মাসের মাথায় মোখলেস উর রহমানকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো।

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলে তৎকালীন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরীকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

সংক্ষুব্ধদের অনেকে জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগে আর্থিক লেনদেন এবং ফ্যাসিবাদের দোসর হিসাবে চিহ্নিত বিতর্কিত কর্মকর্তাদের পুনর্বাসনসহ পাহাড়সম অভিযোগ রয়েছে মোখলেস উর রহমানের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন পর্যায়ের সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও তার ব্যাচমেটদের অনেকেও চরম ক্ষুব্ধ। এই সিনিয়র সচিবের বিরুদ্ধে উত্থাপন হওয়া সব অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত ও বিচার দাবি করেন ভুক্তভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পরপরই তার বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহারের অভিযোগ সামনে আসতে থাকে। প্রথমেই তিনি ৫১ জেলায় ডিসি নিয়োগ দিতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। ডিসি নিয়োগে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের খবরে গত বছর সেপ্টেম্বরে দেশজুড়ে সৃষ্টি হয় তোলপাড়। একপর্যায়ে সরকার তদন্ত কমিটি করে। তবে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে প্রধান করে গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে দাবি করা হয়। যদিও তদন্ত রিপোর্টটি প্রকাশ না করায় জনমনে নানা প্রশ্ন ও সন্দেহ রয়েই গেছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ড. মো. মোখলেস উর রহমান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সাবেক সচিব ও বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কার্যকরী সভাপতি আব্দুল খালেক বলেন, ‘চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত সচিবকে অন্যত্র বদলি করা গুরুতর অনিয়ম। বর্তমান সরকার এ ধরনের অনিয়ম আগেও দুবার করেছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিত সিনিয়র সচিব এমএ আকমল হোসেন আজাদকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে এবং ড. নেওয়ামত উল্যা ভূঁইয়াকে পরিকল্পনা কমিশন থেকে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়। অথচ এ ধরনের বদলি এর আগে কোনো সরকার করেনি।’

তিনি বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রশাসন ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়। ফলে এ মন্ত্রণালয়ে শতভাগ সৎ ও দক্ষ আমলা নিয়োগ দিতে হবে। যাদের বিরুদ্ধে বিন্দু পরিমাণ দুর্নীতির অভিযোগ কিংবা পারসেপশন আছে, তাদের যেন নিয়োগ না দেওয়া হয়।’

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ