কফি পান নিয়ে হার্ভার্ড চিকিৎসকের সাত পরামর্শ
লাইফস্টাইল ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (৪ নভেম্বর) : অনেকের জীবনেই অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে কফি। সকালে এক কাপ গরম কফির সুবাস যেমন একটি সুন্দর দিনের সূচনা করে, তেমনি বিকেলের এক চুমুক ক্লান্তি দূর করে দেয়। কিন্তু হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসক ও গবেষক ডা. তৃষা পাসরিচা সতর্ক করেছেন—কফি ঠিকভাবে না খেলে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হতে পারে। সম্প্রতি তিনি কফি পানের সাতটি স্বাস্থ্যসম্মত উপায় জানিয়েছেন।
প্রতি কাপে এক চামচের বেশি চিনি নয়
২০২২ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা চিনি ছাড়া কফি পান করেন, তাদের মৃত্যুঝুঁকি কম। এমনকি যারা দিনে চার কাপের বেশি কফি পান করেন, তাদের জীবনকালও তুলনামূলক দীর্ঘ হয়। সামান্য (প্রায় এক চা চামচ) চিনি ব্যবহার করলেও তেমন ক্ষতি হয় না।
প্রক্রিয়াজাত কফি ক্রিমার এড়িয়ে চলুন
বেশির ভাগ জনপ্রিয় ক্রিমারে উদ্ভিজ্জ তেল (যেমন পাম বা সয়াবিন তেল) ও অতিরিক্ত চিনি থাকে। এর পরিবর্তে দারুচিনি বা প্রাকৃতিক মসলা ব্যবহার করলে স্বাদ ও স্বাস্থ্যের ভারসাম্য বজায় থাকে।
কৃত্রিম মিষ্টিকারক ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন
আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, কৃত্রিম সুইটনার কফির প্রাকৃতিক উপকারিতা নষ্ট করে দেয়। ডা. পাসরিচা বলেন, এসব বিকল্প মিষ্টি সবাইকে জন্য স্বাস্থ্যকর নয়।
ফ্রেঞ্চ প্রেস ব্যবহার কমান
তিনি জানান, দিনে তিন থেকে পাঁচ কাপ এসপ্রেসো বা ছয় বা ততোধিক কাপ ফ্রেঞ্চ প্রেস কফি পান করলে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। কারণ এতে থাকা ‘ডিটারপিন’ নামক যৌগ লিভারের এলডিএল বা খারাপ কোলেস্টেরল অপসারণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। কাগজের ফিল্টার এই যৌগ আটকে রাখতে পারে।
ইনস্ট্যান্ট ও ডিক্যাফ কফিও ভালো বিকল্প
২০২২ সালের আরেক গবেষণায় বলা হয়েছে, ইনস্ট্যান্ট ও ডিক্যাফ কফিতেও প্রায় একই স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়।
দুপুরের আগে কফি শেষ করুন
২০২৫ সালের এক গবেষণায় ৪০ হাজার মার্কিন নাগরিকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে—যারা দুপুরের আগে কফি খান, তাদের মৃত্যুঝুঁকি ১৬ শতাংশ কম। বিকেল বা রাতে কফি পান করলে ‘মেলাটোনিন’ হরমোনের নিঃসরণ প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যায়, যা ঘুম ও দেহঘড়ির ছন্দ নষ্ট করে।
হজম প্রক্রিয়ায় কফির ভূমিকা
কফি পাকস্থলীতে পৌঁছে সঙ্গে সঙ্গে কোলনে সংকোচন ঘটায়—এ কারণেই অনেকের কফি খাওয়ার পর টয়লেটে যেতে হয়। এটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর প্রতিক্রিয়া।
তাই, কফিপ্রেমীদের জন্য পরামর্শ হলো—কফি পান করুন, তবে বুঝেশুনে।
