এবার চীন সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্ৰণ রেখা বরাবর বিমানঘাঁটি চালু ভারতের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি, (১৫ নভেম্বর) : লাদাখ অঞ্চলে চীনের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্ৰণ রেখা (LAC/Line of actual control) বরাবর নতুন একটি বিমানঘাঁটির কার্যক্রম শুরু করেছে ভারত। দ্য ইকনোমিক টাইমসের খবর।
দ্য ইকনোমিক টাইমস জানায়, ‘মুধ-নিওমা’ নামের ওই বিমানঘাঁটি চীনা সীমান্ত থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ১৩ হাজার ৭০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই বিমানঘাঁটি নির্মাণ করেছে ভারতের বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও)। ২০২৩ সালে প্রায় ২৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত ঘাঁটিটির প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে নিলো তা বলার অপেক্ষা রাখে না। উদ্বোধনী অবতরণের সময়ই এখানে একটি C-130J সুপার হারকিউলিস পরিবহন বিমানের উপস্থিতি রানওয়ের উচ্চ- উচ্চতায় ভারী-লিফ্ট অপারেশন পরিচালনা করার ক্ষমতা প্রদর্শন করে।
অত্যাধুনিক এই ঘাঁটিতে রয়েছে ১.৭ মাইল দীর্ঘ রানওয়ে, নতুন হ্যাঙ্গার, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) ভবন, ক্র্যাশ বে এবং প্রয়োজনীয় আবাসিক ব্যবস্থা। বড় পরিবহন বিমান ও আধুনিক যুদ্ধবিমান অবতরণ ও উড্ডয়নের উপযোগী করে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।
২০২০ সালে লাদাখ সীমান্তে সংঘর্ষে বহু হতাহতের পর ভারত-চীন সম্পর্ক তীব্রভাবে অবনতি ঘটে। তবে ২০২৪ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উষ্ণতা ফিরে আসে। সেই বছরের অক্টোবরে রাশিয়ার কাজানে ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং বৈঠক করেন। এরপর উভয় দেশ সীমান্ত টহল সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।
দেওয়া পুনরায় শুরু করেছে ভারত। এর পরের মাসেই মোদি ২০১৮ সালের পর প্রথমবারের মতো চীন সফর করেন এবং তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিত সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দেন।
চলতি বছরের অক্টোবরে দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান যোগাযোগও পুনরায় চালু হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির শুরুতে ২০২০ সালে এই ফ্লাইটগুলো স্থগিত করা হয়েছিল।
বলে রাখা ভালো, সুউচ্চ কারাকোরাম এবং হিমালয় পর্বতমালা দ্বারা বেষ্টিত লাদাখ অঞ্চলটি ভারত-চীন সম্পর্কের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। সেক্ষেত্রে, LAC-এর সাথে মুধ-নিয়োমা বিমানঘাঁটির সান্নিধ্য ভারতকে একটি গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক এবং কৌশলগত সুবিধা প্রদান করবে।
লেহ, কার্গিল এবং থোয়েসে নিকটবর্তী বিমানঘাঁটির বিপরীতে অবস্থিত মুধ-নিয়োমা ঘাঁটিটি সরাসরি পূর্ব লাদাখের গুরুত্বপূর্ণ পথগুলো, যার মধ্যে রয়েছে দেপসাং সমভূমি, প্যাংগং তসো সেক্টর এবং চুশুল উপত্যকাকে সংযুক্ত করে। এই সমস্ত অঞ্চলেই ২০২০ সাল থেকে সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এখন রিয়েল টাইমে বিমান অভিযান চালাতে পারবে। ফলে পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) এর যেকোনো আক্রমণাত্মক কৌশলের প্রতিক্রিয়া জানাতে ভারতের এখন খুব একটা বেগ পেতে হবে না।
মুধ-নিওমাকে কার্যকর করার অর্থ হল ভারতীয় বিমান বাহিনী (IAF) এখন এই অগ্রবর্তী অবস্থান থেকে যুদ্ধবিমান, পরিবহন বিমান এবং হেলিকপ্টার সহ বিভিন্ন ধরণের বিমান স্থাপন এবং পরিচালনা করতে পারবে। তারা খুব সহজেই দূরবর্তী পোস্টগুলোতে দ্রুত সেনা, অস্ত্র এবং সরবরাহ প্রেরণ করতে পারবে। এতদিন লাদাখের উচ্চ-উচ্চতায় পরিবেশ সেখানকার বিরূপ আবহাওয়া এবং ভূখণ্ডের কারণে স্থল সরবরাহ মারাত্মকভাবে সীমাবদ্ধ ছিল।
