কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতিকে হেনস্তার অভিযোগ

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: রাজধানীর ধানমন্ডির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে হেনস্তা হয়েছেন কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও বাংলাদেশের মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মাহমদু হাসান। তাঁর দাবি, আজ বৃহস্পতিবার সকালে দরিদ্র মেধাবী কোটায় শিক্ষার্থী ভর্তির মিটিংয়ে গেলে তিনি এ পরিস্থিতির শিকার হন।

মাহমদু হাসান দাবি করেন, মেডিকেল কলেজের একদল চিকিৎসক, কর্মচারী ও শিক্ষক মাহমুদ হাসানকে একটি কক্ষে আটকে রেখে বেতনের চেক এবং অধ্যক্ষ নিয়োগের কাগজে জোর করে স্বাক্ষর করান।

এ নিয়ে আজ বিকেল পাঁচটায় নিজের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন মাহমুদ হাসান।

বর্তমানে বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজে দুজন অধ্যক্ষ। দুজনই ভারপ্রাপ্ত। দেশের প্রথম এই বেসরকারি মেডিকেল কলেজে দ্বন্দ্বের জেরে নতুন বছরে ৮৫০ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন আটকে গেছে।

একজন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পক্ষে আছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি চিকিৎসক নেতা অধ্যাপক মাহমুদ হাসান। অন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পেছনে আছেন সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক। মাহমুদ হাসান ও আবদুর রাজ্জাক দুজনই সঠিক অবস্থানে থেকে ঠিক কাজ করছেন বলে দাবি করেছেন।

মেডিকেল কলেজটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯৭৩ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী কলেজের একটি পরিচালনা পরিষদ আছে। অধ্যাপক মাহমুদ হাসান সেই পরিচালনা পরিষদের সভাপতি।

কলেজ পরিচালনা নিয়ে পরিচালনা পরিষদ ও ট্রাস্টি বোর্ডের টানাপোড়েন অনেক দিনের। এই বিরোধ জনসমক্ষে চলে আসে গত ১৮ ডিসেম্বর কলেজের অধ্যক্ষ তাইমুর নেওয়াজের পদত্যাগের পর। সে সময় উপাধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক এ এইচ এম শামসুল আলম। মাহমুদ হাসান বলেন, ‘পরিচালনা পরিষদ উপাধ্যক্ষকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী এই পদে নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা শুধু পরিচালনা পরিষদের।’

অন্যদিকে, ট্রাস্টি বোর্ড ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক পরিতোষ কুমার ঘোষকে। ২৪ ডিসেম্বর শামসুল আলমের কাছ থেকে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের চাবি একটি কাগজে স্বাক্ষর করে বুঝে নেন আবদুর রাজ্জাক। গত সপ্তাহে আবদুর রাজ্জাক বলেন, শামসুল আলমের উপাধ্যক্ষের পদের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন আছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাগজপত্র বলছে, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল ১৯৮৫ সালে। ধানমন্ডির ১৪/এ সড়কের এই কলেজটিতে বছরে ১২০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়।

এই পরিস্থিতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গতকাল বুধবার কলেজের পরিচালনা পরিষদকে চিঠি দিয়ে বলেছে, নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত শামসুল আলম দায়িত্ব পালন করবেন। পরিতোষ কুমার ঘোষকে দায়িত্ব দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিবিধানের পরিপন্থী।

কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি মাসের ২ বা ৩ তারিখের মধ্যে ৮৫০ কর্মকর্তা-কর্মচারী বেতন পেয়ে যান। বেতনের চেকে বিএমএসআরআইয়ের সভাপতি, পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও অধ্যক্ষের স্বাক্ষর দরকার হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ