প্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচয় জানাতে হবে ইসিকে

সিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী  প্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচয় জানতে চেয়েছে ইসি।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় নির্বাচন কমিশনকে বলা হয়েছে কোন দল থেকে কারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ  করছেন তা উল্লেখ করে ইসিকে জানাতে। কমিশন থেকে শনিবার টেলিফোনে মাঠ কর্মকর্তাদের এ সংক্রান্ত নির্দেশ দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, কোন প্রার্থী কোন দলের তা উল্লেখ করে জানাতে ইসির নির্দেশ রয়েছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় হলেও নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর জন্য কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। তবে মৌখিকভাবে নির্বাচনী উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বলা হচ্ছে। তারা ওই অনুযায়ী তালিকা পাঠাবে ইসিতে।

সূত্রমতে, প্রায় প্রতিটি উপজেলাতেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, দশম সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, ১৯ দলীয় জোটের প্রধান দল বিএনপি এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছ। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিলেও ১৯ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে বিএনপি ও জামায়াত সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বলে সূত্রে জানা গেছে।

স্থানীয় নির্বাচন দলীয় হওয়ায় আইনগতভাবে ইসির করার কিছু আছে কিনা জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবাররক বলেন, কোনো দল যদি তাদের পছন্দ অনুসারে কাউকে নির্বাচনে দাঁড় করায় এখানে ইসির কিছু করার থাকে না।

গত ১৯ জানুয়ারি প্রথম ধাপে উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দিন স্থানীয় উপজেলা নির্বাচনে জামায়াত অংশগ্রহণ করতে পারবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দল বিবেচনার সুযোগ নেই।

তবে বাস্তবতা হলো- স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় হলেও অনেক ক্ষেত্রে তা বজায় থাকে না। যে কোনো নির্বাচনই রাজনৈতিক মাত্রায় চলে যায় বলে জানান সিইসি কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিবন্ধিত দলের প্রতীকের মাধ্যমে হয় না। এ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল বলে কিছুই থাকবে না। কিন্তু এসব নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের সমর্থীত প্রার্থী হলে কিছুটা প্রভাব থেকে যায়।

প্রথম পর্বের ৯৮ উপজেলায় মোট প্রার্থী দাঁড়িয়েছেন ১ হাজার ৬২০ জন। এদের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৬৫১ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬১২ জন ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৫৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চূড়ান্ত বাছায়ে বাদ পড়েছেন ১১২ জন। ৩ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন।

চেয়ারম্যান পদে সবচেয়ে বেশি ২১ প্রার্থী হয়েছে নরসিংদীর বেলাবো উপজেলায়। ভাইস চেয়ারম্যান পদে সর্বোচ্চ ঢাকার দোহারে ১৬ জন ও নবাবগঞ্জে ১৪ জন প্রার্থী হয়েছেন। নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে সর্বোচ্চ শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে ৮ জন প্রার্থী হয়েছেন।

কমিশন কর্মকর্তারা জানান, আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের পর প্রার্থীদের সংখ্যা আরও কমবে। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর নির্বাচনের প্রচারণা শুরু হবে।

ইসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে, চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম দফায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে গত শনিবার।

এ নির্দলীয় নির্বাচনে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন নিয়ে দলীয় প্রার্থীই থাকছে বেশি। ৯৮ উপজেলায় দেখা গেছে আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জাতীয় পার্টির একাধিক প্রার্থীও মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। কমিশন গণমাধ্যমের সূত্র ধরেই দলীয় প্রার্থীদের তালিকাও সংগ্রহে কর্মকর্তাদের মৌখিক নির্দেশনাও দিয়েছে।

উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে কমিশন বলছে, অরাজনৈতিক নির্বাচন হলেও স্থানীয় নির্বাচন রুপ পায় দলীয় নির্বাচনে। তাই ইসির করার কিছু থাকে না। কিন্তু এ নির্বাচন হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। যা সহিংসতার শঙ্কা কমিয়ে দেবে।

নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন অরাজনৈতিক। প্রার্থীরা নিজেদের দায়িত্বে মনোনয়নপত্র জমা দেন। তাদের রাজনৈতিক দলের রঙ দেওয়া বা রাজনৈতিক দোষে মনোনয়ন বাতিল করার কোনো আইনগত সুযোগ ইসির  নেই।

নির্বাচন কমিশনার শাহ নেওয়াজ বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ৬ ধাপে করা হচ্ছে। তফসিল ঘোষিত প্রথম ধাপের ভোট ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ