মুক্তিযুদ্ধের উপ-অধিনায়ক এ কে খন্দকার আর নেই
নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসিনিউজবিডি, (২০ ডিসেম্বর) : মহান মুক্তিযুদ্ধের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ (উপ-অধিনায়ক) এবং সাবেক বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল এ কে খন্দকার (বীর উত্তম) আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, বার্ধক্যজনিত কারণে সকালে মহান মুক্তিযুদ্ধের এই উপ-অধিনায়ক মৃত্যুবরণ করেছেন।
এ কে খন্দকারের (আবদুল করিম খন্দকার) জন্ম ১৯৩০ সালে তার বাবার কর্মস্থল রংপুরে। আদি নিবাস পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার পুরান ভারেঙ্গা গ্রামে। তার বাবা খন্দকার আব্দুল লতিফ ব্রিটিশ আমলে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন এবং মাতা আরেফা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে এ কে খন্দকার ছিলেন তৃতীয়।বাবার চাকুরির সুবাদে তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় বগুড়া শহরে। তিনি বগুড়া করোনেশন স্কুলে কিছুদিন পড়াশোনা করেন। তারপর বাবার বদলির কারণে তাদেরকে নওগাঁ চলে যেতে হয়। নওগাঁ করোনেশন স্কুল (নওগাঁ জিলা স্কুল) থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল এবং মালদা জেলা স্কুলে। ভারত বিভাগের সময় এ. কে. খন্দকার ১৯৪৭ সালে মালদা জেলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। এর পর ১৯৪৯ সালে আইএ পাস করেন।
১৯৫২ সালে পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসেবে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন এবং ডেপুটি চিফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রথম প্রধান ছিলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হলে এর প্রতিবাদে তিনি বিমানবাহিনীর প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮২ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া এবং ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ভারতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।
১৯৯৮ ও ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ এবং ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদান রাখার জন্য এ কে খন্দকার ১৯৭৩ সালে বীর উত্তম খেতাব এবং ২০১১ সালে স্বাধীনতা পদক লাভ করেন।
মনোয়ারুল হক/
