সৌরবিদ্যুতের বাতিল ১২ প্রকল্প অনুমোদন
নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসিনিউজবিডি, (১১ ডিসেম্বর) : বাতিল হওয়া সৌরবিদ্যুতের ১২টি প্রকল্পে ফের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পুনরায় দরপত্রের মাধ্যমে এই ১২ প্রকল্প থেকে আগের চেয়ে কম মূল্যে বিদ্যুৎ কেনার সুযোগ পায় সরকার। এতে বছরে ১ হাজার ১৬৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা সাশ্রয়ের আশা করা হচ্ছে।
গত মঙ্গলবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এই ১২টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে প্রকল্পগুলো অনুমোদন করার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ আইনের আওতায় অনুমোদন হওয়া ৩৪টি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প গত বছর বাতিল করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। বাতিল হওয়া এসব প্রকল্পের মধ্যে এখন ১২টি ফের অনুমোদন দেওয়া হলো। এই প্রকল্পগুলোর প্রতিটিতে এখন ২ থেকে ৩ সেন্ট কম দরে বিদ্যুৎ কেনা যাবে বলে জানান উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
তিনি বলেন, ‘এবার সৌরবিদ্যুতের ১২টা প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে, যেখান থেকে ৯৯৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আসবে। প্রকল্পগুলো আগে ২০১০ সালের বিদ্যুৎ জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ আইনের অধীনে মূল্য ঠিক করা ছিল। যেহেতু আইনটা বাতিল হয়ে গেছে সে জন্য প্রকল্পগুলোও বাতিল হয়েছিল। কারণ আমাদের ধারণা ছিল যে এগুলো ওভারপাইস। এখন ১২টা প্রকল্পের প্রতিটিতেই ২ থেকে ৩ সেন্ট দাম কম পেয়েছি।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, আগের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০ (বর্তমানে বাতিল) এর আওতায় অযাচিত প্রস্তাবের মাধ্যমে স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের গড় ট্যারিফ ছিল কিলোওয়াট ঘণ্টা ১৩.০০৫২ টাকা। এখন সেটা কমে ৯ টাকার মধ্যে চলে এসেছে।
চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলায় ২০০ মেগাওয়াট (এসি) গ্রিড-টাইড সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের ট্যারিফ এবং পাবনা জেলায় ১৫০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের ট্যারিফ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সুধারাম, নোয়াখালীতে ১০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের ট্যারিফ, চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ১৮ মেগাওয়াট (এসি) সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের ট্যারিফ এবং মৌলভীবাজারে ২৫ মেগাওয়াট (এসি) সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে ৪৫ মেগাওয়াট (এসি) সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের ট্যারিফ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য এক ধাপ দুই খাম দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রস্তাব জমা পড়ে। তার মধ্যে মাত্র ১টি প্রস্তাব কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়।
কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীতে ১০০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের ট্যারিফ এবং নীলফামারী জেলার জলঢাকাতে ৫০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের ট্যারিফ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জোয়ারিয়া নালা, রামু, কক্সবাজারে ১০০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের ট্যারিফ এবং বিবিয়ানা, নবীগঞ্জ, হবিগঞ্জতে ৫০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের ট্যারিফ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য এক ধাপ দুই খাম দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রস্তাব জমা পড়ে। তার মধ্যে ২টি প্রস্তাব কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। বুড়িরডাঙ্গা, মোংলা, বাগেরহাটে ১০০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের ট্যারিফ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য এক ধাপ দুই খাম দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ২টি প্রস্তাব জমা পড়ে। তার মধ্যে ১টি প্রস্তাব কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।
পাবনা জেলার হেমায়েতপুরে ৭০ মেগাওয়াট (এসি) সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের ট্যারিফ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য এক ধাপ দুই খাম দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রস্তাব জমা পড়ে। তার মধ্যে মাত্র ১টি প্রস্তাব কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃক ময়মনসিংহে স্থাপিত ২১০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎকেন্দ্রের পুনর্নির্ধারিত ট্যারিফ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
মনোয়ারুল হক/
