মা-মেয়ে খুন: বোরকা পরে ঢুকে স্কুলের পোশাকে বের হন গৃহকর্মী

নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসিনিউজবিডি, (৮ ডিসেম্বর) : রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার শাহজাহান রোডের একটি বাসা থেকে মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনার পর ভবনের সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কালো বোরকা পরে বাসায় প্রবেশ করেন গৃহকর্মী আয়েশা। বের হওয়ার সময় তার গায়ে সাদা স্কুলের পোশাক দেখা যায়।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহতরা হলেন- গৃহিনী লায়লা আফরোজ (৪৮) ও মেয়ে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিজা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)।

পরিবারের ধারণা, গৃহকর্মী আয়েশা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত। সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। খোঁজা হচ্ছে আয়েশাকে।

সোমবার সকাল ৭টা ৫২ মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বাসায় প্রবেশ করছেন গৃহকর্মী আয়েশা। তার গায়ে কালো রংয়ের বোরকা। এরপর বের হন ৯টা ৩৬ মিনিটে। তখন তার গায়ে দেখা যায় স্কুলের সাদা ড্রেস।

নিহতের স্বামী উত্তরার সানবিমস স্কুলে পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক এম জেড আজিজুল ইসলাম জানান, আজ বেলা ১১টার পরে দিকে বাসায় ঢুকে তিনি স্ত্রী ও মেয়ের রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। এ সময় তিনি বাসার মেঝে ও দেয়ালেও রক্ত ছিল।

তিনি বলেন, ‘আমাদের বাসায় একজন কাজের মহিলা দরকার ছিলো। সাধারণত গেটে অনেকেই কাজের সন্ধানে আসে। চার দিন আগে একটি মেয়ে আসে। বোরকা পরিহিত মেয়েটি আমাদের বাসার দারোয়ান খালেকের কাছে কাজের সন্ধান করলে সে আমাদের বাসায় পাঠিয়ে দেয়। এরপর আমার স্ত্রী মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে কাজে রেখে দেয়। পরে আমি স্ত্রীর মুখে শুনেছি, মেয়েটার নাম আয়েশা। বয়স আনুমানিক ২০ বছর। তার গ্রামের বাড়ি রংপুর। জেনেভা ক্যাম্পে চাচা-চাচির সঙ্গে থাকে। বাবা-মা আগুনে পুড়ে মারা গেছে। তার শরীরেও আগুনে পোড়ার ক্ষত রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মেয়েটা কাজ শুরুর পর প্রথম দুদিন সময়মতো এসেছে। গতকাল সে সাড়ে ৯টার দিকে আসে। আজ কি হয়েছে এটা তো আর বলার অবস্থায় নেই।’

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী নাফিজা পড়তো মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলে। আজ সোমবার তার বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার কথা ছিল।

তেজগাঁও জোনের ডিসি ইবনে মিজান সংবাদমাধ্যমকে জানান, পুলিশ আসার আগেই নাফিজাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। পরে গৃহকর্ত্রী লায়লা আফরোজের মরদেহ নিয়ে যায় পুলিশ। সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে জড়িতদের আইনের আওতায় নেওয়া হবে। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ বলছে, সন্দেহ করা গৃহকর্মী আয়েশাকে চার দিন আগে এই বাসায় কাজের জন্য নেওয়া হয়। তিনি বিহারি ক্যাম্পে থাকেন। আয়েশার বিস্তারিত তথ্য নিহতদের পরিবারের কাছে নেই।

মনোয়ারুল হক/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ