ট্রাম্পের পরিকল্পিত গাজা যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মির পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে ইসরাইল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ, (১০ অক্টোবর) : ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সরকারের নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পিত গাজা যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মির পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছে।

এরআগে গতকাল বৃহস্পতিবার পশ্চিম জেরুজালেমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং ট্রাম্পের জামাতা এবং সাবেক উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার এর সাথে সাক্ষাৎ করেছেন নেতানিয়াহু।

জেরুজালেম থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

যুদ্ধবিরতি চুক্তি এবং জিম্মিও মুক্তির পরিকল্পনার সারাংশ নিম্নে তুলে ধরা হলো :

প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছে, ইসরাইল গাজা চুক্তির প্রথম পর্যায়ের অনুমোদন দিয়েছে। যার ফলে যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে।

ইসরাইলি মন্ত্রিসভা অনুমোদনের পর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা ছিল, তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা এএফপি’কে জানিয়েছেন, রাতভর গাজার কিছু অংশে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।

চুক্তির অংশ হিসাবে ইসরাইলের সেনাবাহিনীকে এমন একটি রেখায় প্রত্যাহার করতে হবে যা গাজার প্রায় ৫৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে রাখবে। হামাসকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে ২০ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে। আগামী দিনে
আরো কী কী ঘটবে তা এখানে দেওয়া হল:

ফিলিস্তিনের একটি সূত্র এএফপি’কে জানিয়েছে, ইসরাইল এরপর ইসরাইলি কারাগারে বন্দী প্রায় ২৫০ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেবে এবং গাজা থেকে ১,৭০০ বন্দীকে মুক্তি দিবে।

এদিকে জাতিসংঘ বলেছে, গাজার বাস্তুচ্যুত ২০ লক্ষ মানুষের জন্য শত শত ত্রাণবাহী লরি খাদ্য, ওষুধ এবং জ্বালানি বহন করবে।

এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত – তবে এটি একটি যুদ্ধবিরতি, শান্তি চুক্তি নয়, লিখেছেন লিস ডুসেট। সবচেয়ে কঠিন বিষয়গুলি এখনও টেবিলে রয়েছে

নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘আমরা একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতির মধ্যে আছি’।

বাস্তুচ্যুত গাজাবাসী এএফপি’কে বলেছেন, বিমান হামলা এখনো ‘অনেক জায়গায়’’ অব্যাহত রয়েছে।

বর্তমানে খান ইউনিসের কাছে আল-মাওয়াসিতে একটি তাঁবুতে বসবাসকারী সুহা শাথ নামের একজন ফার্মাসিস্ট অভিযোগ করছেন, গাজার বেশকিছু জায়গায় এখনো বিমান হামলা অব্যাহত আছে।

তিনি আজ সকালে বিবিসি রেডিও ৪ এর টুডে প্রোগ্রামের সাথে কথা বলার সময় এই অভিযোগ করেছেন। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর থেকে গাজার ‘অনেক জায়গায়’ বিমান হামলা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি যে পরিস্থিতিতে বাস করেন তা বর্ণনা করে তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, তারা মাংস, ডিম বা মাছ ছাড়াই কার্বোহাইড্রেট এবং টিনজাত খাবারের ওপর নির্ভর করে বেঁেচ আছেন।

তিনি আরো বলেছেন, যুদ্ধের আগের তুলনায় সবকিছু ‘খুব ব্যয়বহুল’।

তিনি গাজা পুনরুদ্ধারের জন্য সময়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেছেন, ‘এই চুক্তির একমাত্র সুবিধা হল হত্যা বন্ধ করা’।

হামাস-পরিচালিত ফিলিস্তিন সিভিল ডিফেন্স গাজাবাসীদের ইসরাইলি সেনাদের অবস্থান এড়িয়ে চলার আহ্বান জানিয়েছে।

টেলিগ্রামে একটি পোস্টে, তাদের মুখপাত্র বলেছেন, ইসরাইল সৈন্য প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত জনগণকে বিশেষ করে গাজা শহরের সীমান্তবর্তী এলাকা এড়িয়ে চলতে হবে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘এই সতর্কতা লঙ্ঘন করলে আপনার জীবন বিপন্ন হতে পারে।’

জেরুজালেমে এএফপি’র সংবাদদাতা জানিয়েছেন, ইসরাইলি মন্ত্রিসভা অনুমোদনের সাথে সাথেই যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা সত্বেও যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পর ইসরাইলি সেনাবাহিনী গাজায় গুলি চালিয়েছে।

সরকারের ভোটের আগে গাজায় ইসরাইলি হামলা অব্যাহত ছিল, কিন্তু আজ সকালে আমরা আরো হামলার একাধিক প্রতিবেদন দেখতে পাচ্ছি।

আমরা উল্লেখ করেছি, প্রত্যক্ষদর্শীরা এএফপি’কে জানিয়েছেন, আজ সকালে খান ইউনিসে বিমান হামলা এবং কামানের গোলাবর্ষণ হয়েছে। আরো উত্তরে নেটজারিম করিডোরের আশেপাশেও গুলিবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে।

ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফার সংবাদদাতারা আজ ভোরে খান ইউনিসে আরো বোমাবর্ষণের খবর পেয়েছেন।

গাজা সিটিতেও আরো হামলার খবর পাওয়া গেছে, যেখানে প্রত্যক্ষদর্শীরা সিএনএন’কে আল-সাব্রা এবং তাল আল-হাওয়া এলাকায় গোলাবর্ষণের কথা জানিয়েছেন।

বিবিসি ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করেছে। তারা জানিয়েছে, তারা প্রতিবেদনগুলো খতিয়ে দেখছের

জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে আকাশে কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। আজ সকালে গাজার আকাশসীমার ওপরে কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ