শহিদুল আলমসহ ফ্লোটিলার সবাই ইসরায়েলের কারাগারে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ, (১০ অক্টোবর) : বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও লেখক শহিদুল আলমসহ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের (এফএফসি) মানবিক মিশনে অংশ নেওয়া সব অধিকারকর্মীকে ইসরায়েল আটক করেছে। পরে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে নেগেভ মরুভূমির কেৎজিয়েত কারাগারে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলের আরব সংখ্যালঘুদের জন্য কাজ করা আইন সহায়তা সংস্থা ‘আদালাহ’।
শহিদুল আলম আলোকচিত্র প্রতিষ্ঠান দৃক গ্যালারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। দৃক গতকাল বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, জাহাজে থাকা সব সাংবাদিক, চিকিৎসক, মানবাধিকারকর্মীকে প্রথমে ইসরায়েলের আশদদ বন্দরে নেওয়া হয়। সেখানে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের কেৎজিয়েত কারাগারে পাঠানো হয়।
ফ্লোটিলা কর্মীরা আদালাহর আইনজীবীদের জানিয়েছেন, জাহাজে তারা ইসরায়েলি বাহিনীর সহিংসতার শিকার হয়েছেন। আদালাহ জানিয়েছে, কেৎজিয়েত কারাগারে এখন ফ্লোটিলা মিশনের ১৪৫ জন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী বন্দি রয়েছেন। এই কারাগারে আগে থেকেই প্রায় ১০ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি আছেন।
মালয়েশিয়ার মানবিক সংগঠন ‘হিউম্যানিটারিয়ান কেয়ার মালয়েশিয়া’ (MyCARE) এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামারুল জামান শাহারুল আনোয়ার জানিয়েছেন, আদালাহর আইনজীবীরা ইতোমধ্যে কিছু মালয়েশিয়ান বন্দির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। বাকিদের সঙ্গেও দেখা করতে আবেদন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলি বাহিনী মানবিক মিশনটি থামানোর সময় সহিংসতা করেছে এবং সব মানবাধিকারকর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এই সহিংসতায় ৯ মালয়েশিয়ান নাগরিকও আঘাত পেয়েছেন। তবে সর্বশেষপ্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, তারা সবাই নিরাপদে আছেন। তাদের মধ্যে সাতজন আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করেছেন। গতকাল কুয়ালালামপুরে MyCARE এর সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তুরস্কের তিনজন সংসদ সদস্যকে বৃহস্পতিবার রাতে অথবা শুক্রবার সকালে দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে। আটকদের বিষয়ে ট্রাইবুনালে শুনানি আগামী দুই দিনের মধ্যে শুরু হবে।
এর আগে মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘সিনার হারিয়ান’ জানায়, গত বুধবার ফ্লোটিলা মিশনের ৯টি জাহাজ গাজার ‘রেড জোন’ এলাকায় প্রবেশ করে। তখন ইসরায়েলি বাহিনী আন্তর্জাতিক পানিসীমায় আগ্রাসন চালিয়ে জাহাজগুলো থামিয়ে দেয়।
এফএফসির সবচেয়ে বড় জাহাজ কনশানস-এ বাংলাদেশি শহিদুল আলম ছাড়াও মালয়েশিয়ার আটজন প্রতিনিধি ছিলেন। তারা হলেন মিশনপ্রধান ইমেরিটাস প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন আলি, ড. ফাউজিয়া হাসান, ড. হাফিজ সুলায়মান, ড. ইলি শাকিরা মো. সুহাইমি, শাফিক শুকরি আবদুল জলিল, প্রফেসর ড. মো. আফান্দি সালেহ, ড. নুরহাসিমাহ ইসমাইল এবং MyCARE বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য নোরশাম আবু বকর।
এই জাহাজে আরও ছিলেন ১০ জাহাজ কর্মী, ২০ আন্তর্জাতিক সাংবাদিক, ২১ চিকিৎসক, তিন তুর্কি সংসদ সদস্য, ৩৪ মানবাধিকার কর্মী এবং ছয়জন এফএফসি স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য।
বর্তমানে সব মানবাধিকার কর্মী কেৎজিয়েত কারাগারে বন্দি রয়েছেন এবং আইনজীবীরা তাদের মুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। পরিস্থিতি অনুযায়ী পরবর্তী আপডেট সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানানো হবে। সূত্র: বারনামা নিউজ