ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিচারের রায় আগামী সপ্তাহে: মাহফুজ আলম
নিজস্ব প্রতিবেদক (লক্ষ্মীপুর), এবিসিনিউজবিডি, (৪ নভেম্বর) : তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, ‘আমরা যে অঙ্গীকার নিয়ে এসেছিলাম, বিচারের কাজ শুরু করব। আমরা বিচারের কাজ শুরু করতে পেরেছি। আগামী সপ্তাহে ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনার বিচার হবে এবং একটা রায় পাব। এতে জুলাই শহীদদের পরিবারের কিছুটা হলেও ব্যথা লাঘব হবে।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জুলাই শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি এসব কথা বলেন। মাহফুজ আলম বলেন, ‘আরও অনেকেরই ট্রাইব্যুনালে বিচারকাজ চলছে। ট্রাইব্যুনাল চলমান রয়েছে। যাঁরা ছাত্র-জনতাকে হত্যার সঙ্গে ও গুমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের সবারই বিচার হবে। পরবর্তী সরকারে যাঁরা আসবেন, তাঁরা এ বিচারকাজ এগিয়ে নেবেন।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সংস্কারকাজে আমরা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্য হয়ে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছে। এটা বাংলাদেশের জন্য বড় একটি প্রাপ্তি যে রাজনৈতিক দলগুলো বসে সরকার গৃহীত একটা দলিলে আসতে পারা। সবাই মিলে সর্বসম্মত হয়েছেন। এর ভেতর দিয়ে বাংলাদেশ একটা নতুন পর্যায়ে গেল। জুলাই সনদ ও সংস্কার কার্যক্রমের মাধ্যমে পরবর্তীকালে যে নির্বাচিত সরকার আসবে, তারা যদি এই কাজগুলো করতে পারে, তাহলে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, সে রকম একটা বাংলাদেশ হবে। যেখানে সবার ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে। বিচারে আইনের শাসন থাকবে, সুবিচার থাকবে। গুম-খুন আর ফেরত আসবে না।’ রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে মাহফুজ আলম বলেন, ‘আসুন বাংলাদেশ পন্থার মধ্য দিয়ে আমরা যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তি আছি, ঐক্যবদ্ধ হই। সংস্কারগুলো করার জন্য সরকারকে সহযোগিতা করুন। শহীদদের পথ অনুসরণ করে আমরা শাহাদাতের পথ বেছে নেব। আমরা আবার লড়াই করব। আমরা শুধু আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থা উৎখাত করে সন্তুষ্ট নই, বরং আওয়ামী লীগ ফ্যাসিজমের যত বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন প্রান্তে, প্রশাসনে, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে রয়ে গেছে, তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনব।’
এই উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমার এলাকায় রামগঞ্জ তথা লক্ষ্মীপুরে মাদক নিরাময় কেন্দ্র, নার্সিং কলেজ স্থাপন, সদর হাসপাতালের উন্নতি, শিক্ষাব্যবস্থাসহ অনেকগুলো কমিশন সংস্কারের প্রস্তাবনা প্রস্তুত করেছে। খুব শিগগির রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সংস্কার না করলেই নয়, নির্বাচনের পূর্বে সেসব সংস্কার করতে চাই। এই সংস্কারগুলো মুখের বুলি নয়। শেখ হাসিনা যে প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দিয়েছেন, যে প্রতিষ্ঠানগুলো হাসিনাকে টিকিয়ে রেখেছে, সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে একই রকম রেখে আমরা নির্বাচন করতে পারি না। নির্বাচন করার আগে অবশ্যই হাসিনার ওই প্রতিষ্ঠান ও দালালেরা আছে, তাদের উৎখাত করে এবং খুনি হাসিনাসহ তাঁর দোসরদের বিচার করে আমাদের নির্বাচনের দিকে এগোতে হবে। সাবেক মন্ত্রী মরহুম জিয়াউল হক জিয়ার রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করা হবে।’
এ সময় আগামী সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচন করবেন কি না জানতে চাইলে জবাবে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বিষয়টি এড়িয়ে যান। সভা শেষে রামগঞ্জের দরিদ্র কৃষকদের মধ্যে কৃষি প্রণোদনা বিতরণ, জুলাই শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং সাবেক এমপি ও প্রতিমন্ত্রী জিয়াউল হক জিয়ার নবম মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
