ঘুষের মামলায় রাজনৈতিক বিবেচনায় রেহাই চান দুদক উপপরিচালক

চট্টগ্রাম ব্যুরো, এবিসিনিউজবিডি, (১ নভেম্বর) : নিজ অফিসে ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার হওয়া দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক এম এম শাব্বির হাসান রাজনৈতিক বিবেচনায় দুর্নীতি মামলা থেকে রেহাই পেতে চাইছেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে আবেদন জমা দিয়ে দৌড়ঝাঁপও করছেন সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এ কর্মকর্তা। ১৫ বছর আগে তাঁর বিরুদ্ধে হওয়া ঘুষ গ্রহণের মামলাটি এখন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে বিচারাধীন।

মামলা থেকে রেহাই পেতে ১৫টি যুক্তি তুলে ধরে রাজনৈতিক বিচেনায় ঘুষ-দুর্নীতির মামলাটি প্রত্যাহারে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন আসামি শাব্বির।
২০১১ সালের ২৩ জানুয়ারি নগরের ডবলমুরিং থানায় ঘুষের মামলাটি দায়ের করেন চট্টগ্রামের পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ফোর এইচ গ্রুপের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) নওশাদ চৌধুরী। ঘুষের ১০ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে আগ্রাবাদের দুদক কার্যালয় থেকে শাব্বিরকে ফাঁদ পেতে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তারপর তাঁকে র‍্যাব হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।

চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, গোপন ক্যামেরায় ঘুষ নেওয়ার চিত্র ধারণের পর র‍্যাব-৭ অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ হোসাইনের নেতৃত্বে একটি টিম ঘুষের টাকাসহ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ফোর এইচ গ্রুপকে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে ব্ল্যাকমেইল করে ৫০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। বর্তমানে এ মামলার পাঁচজনের সাক্ষ্য হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অন্য চারজন সাক্ষীকে সমন দিলেও তারা কেউ সাক্ষ্য দিতে হাজির হচ্ছেন না।

ঘুষের ফাঁদ মামলার আসামি দুদক উপপরিচালক (সাময়িক বরখাস্ত) এম এম শাব্বির হাসান বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নাইকো রিসোর্স গ্যাস উত্তোলন দুর্নীতি মামলা এবং তিন কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের দুর্নীতি মামলার বাদী আমি। ২০০৭ সালে তেজগাঁও থানায় মামলা দুটি দায়ের করেছি। তার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ২০১১ সালে র‍্যাবকে দিয়ে সাজানো ঘুষের ফাঁদ তৈরি করা হয়। আমাকে ঘুষের মামলার আসামি করে ১৫ বছর ধরে চাকরিচ্যুত করে রেখেছেন। তাই রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলাটি প্রত্যাহারে আবেদন করেছি।

চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মফিজুল হক ভূঁইয়া বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে মতামত দেওয়ার জন্য দুদকের সাবেক কর্মকর্তা শাব্বিরের একটি ফাইল এসেছে। নথিপত্র দেখে বিচার-বিশ্লেষণ করে নিরপেক্ষভাবে মতামত দেওয়া হবে।

মানবাধিকার আইনজীবী চৌধুরী আবদুল্লাহ বলেন, ফাঁদ পেতে গোপন ক্যামেরায় দুদক অফিসে যদি ঘুষ লেনদেনের সময় কোনো কর্মকর্তা ধরা পড়েন তাহলে এখানে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ অমূলক ও ইচ্ছাকৃত।

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে আছি অল্প কিছুদিন হলো। আমার আগে হয়তো আবেদন জমা দিয়ে থাকতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আইন ও বিধিমতো পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ