এনসিপি নেতাসহ গ্রেপ্তার ৫ জনের ৪ জন রিমান্ডে, ১ জন কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসি নিউজ, (৩০ সেপ্টেম্বর) : চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার এনসিপি নেতাসহ পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে দুই দিন রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান এ আদেশ দেন।

এরা হলেন- জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ঢাকা মহানগরীর মোহাম্মদপুর থানার যুগ্ম সমন্বয়কারী আব্দুর রহমান মানিক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানার সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বি, হাবিবুর রহমান ফরহাদ ও মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান।

আরেক আসামি মো. শাহিন হোসেনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্তের প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

শুনানির আগে কারাগার থেকে তাদের আদালতে হাজির করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক মো. নাজমুল ইসলাম আসামিদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।

আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এর আগে সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) আসামিদের কারাগারে পাঠিয়ে দিয়ে রিমান্ড শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়।

আগের দিন রোববার রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা এলাকায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চাঁদাবাজির সময় সেনাবাহিনী তাদের আটক করে পুলিশের নিকট সোপর্দ করা। 

সেইফ হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক শিল্পী আক্তার সোমবার চাঁদাবাজির অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানায় গ্রেপ্তারকৃত পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ঘটনার দিন রাত সাড়ে ১২টায় আসামি মো. শাহিন মোহাম্মদপুরের সেইফ হাসপাতালে এসে গর্ভবতী স্ত্রীর বাচ্চার অবস্থা খারাপ দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডেলিভারির অনুরোধ করে। কর্তৃপক্ষ তাকে অন্য হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি অনুরোধ করে বলেন, যেভাবে হোক আমার স্ত্রীর ডেলিভারির ব্যবস্থা করেন। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার কাছ থেকে সব কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে ডেলিভারির কাজ শুরু করেন। বাচ্চার ডেলিভারির চিকিৎসা চলমান থাকা অবস্থায় নরমাল ডেলিভারিতে একটি মৃত ছেলে সন্তান প্রসব হয়। বাচ্চা মারা যাওয়ার কারণে মামলা না করার জন্য হাসপাতালের মালিকের ছেলে মো. আবু সাইদের কাছে গত ২২ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টায় ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় আসামিরা হাসপাতালের মেশিন ও সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর করে দেড় লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে। একপর্যায়ে আসামিরা সাঈদকে তুলে নিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। ভয়ে আসামিদেরকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দেন বাদী।

আসামিরা চাঁদা নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায় এবং অবশিষ্ট টাকা দ্রুত সময়ের মধ্যে দেওয়ার জন্য বলে। এরপর বিভিন্ন সময় আসামিরা মোবাইল ফোনে টাকা চায়। অন্যথায় মামলার হুমকি দেয়। এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর আসামিরা ১ লাখ টাকা চাঁদা নেয়। বাকি টাকা দ্রুত দেওয়ার জন্য চাপ তৈরি করে। 

এর আগে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে রাজধানীর ধানমন্ডিতে একজন প্রকাশকের বাসায় নৈরাজ্য সৃষ্টি করে গত ২০ মে আটক হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মোহাম্মদপুর থানার সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম রাব্বিসহ তিনজন। ওই দিন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।