থালাপতির জনসভায় নিহত ৪০, ষড়যন্ত্র অ্যাখ্যা দিয়ে তদন্তের দাবি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ, (২৮ সেপ্টেম্বর) : এটা নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়। গতকাল শনিবার রাতে তামিলনাড়ুর কারুরে থালাপতি বিজয়ের সমাবেশে পদদলিত হয়ে ১০ শিশু ও নারীসহ যে ৪০ জন নিহত এবং প্রায় ১০০ জন আহত হয়েছেন এর নেপথ্যে কোনো ‘ষড়যন্ত্র’ রয়েছে। পদপিষ্টের ঘটনায় এমনই অভিযোগ তুলে মাদ্রাজ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছেন তামিলাগা ভেটরি কাজ়াগম (টিভিকে)-এর প্রতিষ্ঠাতা নেতা তথা অভিনেতা বিজয়।
তার দল টিভিকে-র তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, করুরের ঘটনা কোনো দুর্ঘটনা নয়, ষড়যন্ত্রের ফল। সভায় পাথর ছোড়া এবং পুলিশের লাঠিচার্জকেও এর জন্য দায়ী করেছে টিভিকে।
ইতোমধ্যেই মৃতদের পরিবারের জন্য ২০ লাখ টাকা এবং আহতদের জন্য ২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন বিজয়। এই দুর্ঘটনার জন্য তিনি অত্যন্ত ব্যথিত। এ কথাও জানিয়েছেন।
বিজয় বলেন, ‘‘অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। আপনাদের পরিবারের সদস্য হিসাবে, আপনাদের পাশে আছি, থাকব।’’ আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন টিভিকে নেতা।
টিভিকে এর আইনজীবী আরিবালাগন জানিয়েছেন যে তার দল মাদ্রাজ হাইকোর্টে একটি পিটিশন নিয়ে আবেদন করেছে, যেখানে আদালতকে একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠনের বা মামলাটি কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই এর কাছে হস্তান্তরের অনুরোধ জানানো হয়েছে। আরিবালাগন কারুর সমাবেশে নিরাপত্তা নির্দেশিকা লঙ্ঘনের বিষয়ে রাজ্য সরকারের দাবিকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, তারা আজ হাইকোর্টের মাদুরাই বেঞ্চে বিষয়টি উত্থাপন করবেন। তিনি বলেন, কারুরের ঘটনায় একটি ষড়যন্ত্র ছিল, একটি অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র। তাই আমরা মাননীয় হাইকোর্টের কাছে অনুরোধ করেছি যে বিষয়টি কোনো রাজ্য সংস্থার মাধ্যমে নয়, বরং স্বাধীনভাবে তদন্ত করা হোক। আরিবালাগন আরও বলেন, আমরা স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে নির্ভরযোগ্য তথ্য পেয়েছি, এবং আমাদের কাছে কিছু সিসিটিভি ফুটেজও আছে। এতে দেখাচ্ছে যে কারুর জেলায় ক্ষমতাসীন দলের কিছু কর্মকর্তার দ্বারা একটি অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র হয়েছে।
পুলিশের দেওয়া নিরাপত্তা নির্দেশিকা সমাবেশে লঙ্ঘনের অভিযোগ খণ্ডন করে আরিবালাগন বলেন, আমরা পুলিশের দেওয়া কোনো শর্ত লঙ্ঘন করিনি, মোটেও করিনি। তিনি বলেন, টিভিকে গত কয়েক মাস ধরে মাদুরাই, ত্রিচি, আরিয়ালুর, তিরুভারুর, নাগাপট্টিনম এবং নামক্কাল-এ বেশ কয়েকটি ইভেন্টের আয়োজন করেছে। কারুরে কেন এমন হলো, সেটাই প্রশ্ন। এটা সন্দেহ সৃষ্টি করে।
রাজ্য সরকারের সূত্রগুলো জানিয়েছে যে কারুর সমাবেশের স্থানে দুপুর থেকেই মানুষ জড়ো হতে শুরু করে, কিন্তু বিজয় সেখানে পৌঁছান সন্ধ্যা ৭টার দিকে। প্রায় ১০ হাজার লোকের ধারণক্ষমতার একটি স্থানে ২৭ হাজার লোক জড়ো হয়েছিল। বিরোধীরা দাবি করেছে, এই বিলম্ব ইচ্ছাকৃত ছিল এবং টিভিকে এর নেতারা চেয়েছিলেন যাতে ভিড় আরও বাড়ে।
এই দাবিকে মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়ে টিভিকে এর আইনজীবী বলেন, দেরি আমাদের কারণে হয়নি। যানজটের কারণে দেরি হয়েছিল। সেই কারণেই আমরা সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারিনি। সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার পত্রিকা