মাগুরায় ভোক্তা অধিকার বিরোধী অপরাধে ব্যবসায়ীকে জরিমানা
নিজস্ব প্রতিবেদক (শ্রীপুর, মাগুরা), এবিসিনিউজবিডি, (২১ ডিসেম্বর) : জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মাগুরা জেলা কার্যালয়ের উদ্যোগে সদর উপজেলার ঢাকা রোড চাউলিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত পরিচালিত এ অভিযানে দই-মিষ্টির দোকান, বিরিয়ানি হাউস, হোটেল, মুদি দোকানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তদারকি করা হয়।
অভিযানকালে মেসার্স মুসলিম সুইটস নামক একটি প্রতিষ্ঠানে গুরুতর অনিয়ম ধরা পড়ে। সেখানে অত্যন্ত স্যাতসেঁতে, নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশে দই-মিষ্টিসহ বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য অস্বাস্থ্যকরভাবে প্রস্তুত করা হচ্ছিল। কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি। নোংরা মেঝে ও র্যাকে যত্রতত্র খোলা অবস্থায় খাবার রাখা ছিল। খোলা দই-মিষ্টির মধ্যে তেলাপোকা, মশা, মাছি, মাকড়সার অংশ ও মানুষের চুলসহ নানা অপদ্রব্য পাওয়া যায়।
এছাড়া খাদ্য প্রস্তুতে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হাইড্রোজসহ বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান ব্যবহারের প্রমাণ মেলে। উল্লেখ্য, পূর্বে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে একাধিকবার সতর্ক ও সভা করা হলেও কারখানার পরিবেশ উন্নয়ন কিংবা স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাদ্য প্রস্তুত ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়নি।
এ প্রেক্ষিতে অস্বাস্থ্যকরভাবে দই-মিষ্টি প্রস্তুত ও বিক্রয়ের অপরাধে প্রতিষ্ঠানটির মালিক মো. আমিরুল ইসলামকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর ৪২ ও ৪৩ ধারায় ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি কারখানাটি ৩ দিনের জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। এসময় অস্বাস্থ্যকরভাবে প্রস্তুত ও সংরক্ষিত খাদ্যদ্রব্য ধ্বংস করে দেওয়া হয় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের আইন অমান্য না করার জন্য কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়।
পরবর্তীতে অন্যান্য পণ্যের দোকান ও প্রতিষ্ঠান তদারকি করা হয়। এসময় ব্যবসায়ীদের আইন মেনে ব্যবসা পরিচালনা, ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রয়, মূল্যতালিকা প্রদর্শন এবং ক্রয়-বিক্রয়ের ভাউচার সংরক্ষণের বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
অভিযান পরিচালনাকারী জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মাগুরা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ।
তিনি বলেন, ভেজালমুক্ত ও স্বাস্থ্যকর খাবার মানুষের দৈনন্দিন মৌলিক চাহিদা। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভিযানে সার্বিক সহযোগিতা করেন জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা সুমন অধিকারী এবং মাগুরা জেলা পুলিশের একটি টিম।
মনোয়ারুল হক/
