মব সন্ত্রাস চালিয়ে পুরো জাতিকে বিভক্ত করা হয়েছে: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসিনিউজবিডি, (২০ ডিসেম্বর) : গত এক বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন মব সন্ত্রাস চালিয়ে পুরো জাতিকে বিভক্ত করা হয়েছে এবং করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘হাদি নির্বাচনে প্রার্থী ছিল। জনগণের দরজায় গিয়েছিল। নির্বাচন হবে। বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ। হাদির আততায়ীর বিচার এবং প্রতিটি মব সন্ত্রাসের বিচার করতে হবে।’

শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে মির্জা ফখরুল এসব কথা লিখেছেন। তবে পোস্ট করার পর গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই ফেসবুকে গিয়ে বিএনপি মহাসচিবের পোস্টটি পাওয়া যায়নি।

পোস্টে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের পতনের পর সরকারের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন করা। আমরা সব পক্ষকে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে আহ্বান জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।’

ভাঙচুরের প্রতিবাদে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। এ দেশের প্রতিটি নাগরিকের জানমালের দায়িত্ব বর্তমান সরকারের। শহিদ হাদির মৃত্যুতে শোকার্ত জাতি যখন সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করছে হাদির আত্মার মাগফিরাতের জন্য, তখন ডেইলি স্টার, প্রথম আলোসহ বিভিন্ন পত্রিকা, প্রতিষ্ঠান, বরেণ্য সাংবাদিক নুরুল কবিরসহ আরও অনেকের ওপর হীন হামলা সংঘটিত হলো।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের সংকটময় মুহূর্তকে কাজে লাগানোর জন্য যারা অপেক্ষা করে, এরা এই দেশের শত্রু। তারা অপেক্ষা করে সংকটের। আজ এই দুঃখভারাক্রান্ত মুহূর্তকে এরা ধ্বংসাত্মক কাজে রূপান্তর করল। আমি এই সন্ত্রাসের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

সরকারকে পরিস্থিতি আন্দাজ করা উচিত ছিল: সালাহউদ্দিন
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যু ঘিরে যে অরাজকতা সৃষ্টি করা হয়েছে, সেই পরিস্থিতি আন্দাজ করে আগেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। গতকাল রাজধানীর গুলশানে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের ঘটনা গোটা জাতির অনুভূতিকে নাড়া দিয়েছে। হাদির মরদেহকে শ্রদ্ধা জানাতে যাবে বিএনপি।’

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ‘কিছু নির্দিষ্ট লক্ষ্যের স্থান আগে থেকেই নির্ধারণ করা হয়েছিল বলে আমরা দেখেছি। এ ধরনের কোনো কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক যাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। গণতান্ত্রিক উত্তরণকে কোনোভাবেই রুদ্ধ করা যাবে না। সারা দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার কোনো অপপরিকল্পনা বা অপকৌশল আছে কি না, তা খতিয়ে দেখাও প্রয়োজন।’

বিএনপি এ ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায় উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সরকারকে আমরা অনুরোধ করব, তারা যেন সব ধরনের কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়। গোয়েন্দা প্রতিবেদন থাকা দরকার ছিল এবং সতর্কতামূলকব্যবস্থা আগে থেকেই নেওয়া উচিত ছিল।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, নিরাপত্তাজনিত সব বিষয় নিয়ে সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। সরকার এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট সহযোগিতা করছে। তারেক রহমানের আগমন উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচি ৩০০ ফুটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হবে। তারেক রহমান জনগণের সামনে উপস্থিত হবেন, জনগণকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাবেন।

মনোয়ারুল হক/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ