ইসরায়েলের কারাগার থেকে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ, (১৪ অক্টোবর) : হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েল সোমবার (১৩ অক্টোবর ২০২৫) প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। মুক্তদের মধ্যে রয়েছেন শতাধিক আজীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দিও।
ইসরায়েলি কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, মোট ১,৯৬৮ জন বন্দিকে বিভিন্ন বাসে করে পশ্চিম তীর ও গাজায় পাঠানো হয়েছে। এর আগে হামাস ২০ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেয়।
মুক্তদের মধ্যে ২৫০ জন নিরাপত্তা বন্দি, যাদের অনেকে ইসরায়েলিদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার দায়ে একাধিক আজীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত ছিলেন। এদের মধ্যে রয়েছেন ২০০০ সালে দুই ইসরায়েলি সৈন্যকে হত্যা করা এক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আত্মঘাতী হামলাসহ নানা সন্ত্রাসী ঘটনায় দণ্ডপ্রাপ্ত বেশ কয়েকজন।
হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মুক্ত বন্দিদের মধ্যে ১৫৪ জনকে মিশরে নির্বাসিত করা হয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ ইসরায়েলের কেতসিওত কারাগার থেকে ১,৭১৮ জন গাজার বন্দিকেও মুক্তি দেওয়া হয়, যাদের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল না।
বন্দিদের মুক্তির পর রামাল্লাহ ও গাজার বিভিন্ন স্থানে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা কান্না ও উল্লাসে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন। কেউ কেউ বলেন, “এ যেন নতুন জন্মের মতো।”
তবে ইসরায়েলি বাহিনী সতর্ক অবস্থানে ছিল, যাতে মুক্তি উদযাপন বড় আকার না নেয়। কিছু এলাকায় ভিড় সামলাতে পুলিশ ও সেনারা টিয়ারগ্যাস ও শব্দগ্রেনেডও ব্যবহার করে।
গাজার নাসের হাসপাতালে বন্দিদের স্বাগত জানাতে বিপুল জনতা জড়ো হয়। হামাসের সশস্ত্র সদস্যরাও সেখানে উপস্থিত ছিল। কেউ পতাকা নাড়ছিল, কেউ আবার দীর্ঘদিন পর প্রিয়জনকে পেয়ে আবেগে কেঁদে ফেলছিল।
অন্যদিকে, বন্দি তালিকা নিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মতবিরোধ ছিল। হামাস জনপ্রিয় ফাতাহ নেতা মারওয়ান বারঘুতিসহ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতার মুক্তির দাবিতে চাপ সৃষ্টি করে।
চূড়ান্ত চুক্তিতে আরও যোগ হয় একটি মানবিক ধারা— ৩৬০ জন গাজান সন্ত্রাসীর মৃতদেহ ফেরত দেবে ইসরায়েল, বিনিময়ে হামাস ফিরিয়ে দেবে ২৮ জন নিহত জিম্মির মরদেহ।
ইসরায়েলি কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল