আমি জানতাম, আমাকে ক্রসফায়ার করবে: সালাহউদ্দিন
নিজস্ব প্রতিবেদক (সিলেট), এবিসি নিউজ, (১২ অক্টোবর) : ‘আমাকে যেদিন বর্ডার ক্রস করানো হচ্ছিল, তখন তো আমি জানতাম না আমাকে বর্ডার ক্রস করানো হচ্ছে। আমি জানতাম, আমাকে ক্রসফায়ার করবে। মেরে বনজঙ্গলে ফেলে দেবে।’ গুম কাহিনির ডুকুমেন্টারির শ্যুটিং শেষে সেই দুঃসহ স্মৃতিচারণ করে এ কথা বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ।
গুম করার পর সিলেটের তামাবিল সীমান্ত দিয়েই তাকে ভারতের শিলংয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে ধারণা তার।
শনিবার (১১ অক্টোবর) তামাবিল সীমান্তে গিয়ে তিনি স্মৃতিকাতর হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘যখন আমাকে এখান থেকে বর্ডার ক্রস করে নিয়ে গেল, হয়ত এই রাস্তা দিয়েই হবে। আমার এমনটিই মনে হচ্ছে। হাত পা ও চোখ বাঁধা অবস্থায় অবস্থায় তারা আমাকে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে স্থানীয় মানুষ ও পুলিশ এলে বুঝতে পারি আমি শিলংয়ে আছি। সেখানে যখন মেন্টাল হসপিটালে নিয়ে গেলো তখন ভেবেছিলাম পাগলের মতোই বাকী জীবনটা কাটাতে হবে।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার ফ্লাইটে সিলেট আসার পর তিনি তামাবিল সীমান্ত এলাকায় যান। সেই গুম স্মৃতি হাতড়িয়ে বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। তাকে যে পথ দিয়ে গুম করে ভারতে নেওয়া হয়েছিল, অনুমান করে সেসব স্থান শনাক্ত করেন। গুম কাহিনির ডকুমেন্টারি রেকর্ড শেষে তিনি সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক পাশের হযরত শাহ পরাণ (রহ.) মাজার জিয়ারত করেন। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি জানান, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের গুম বিষয়ক তথ্যচিত্রের শুটিংয়ের জন্য তিনি সিলেটে এসেছেন।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১০ মে সন্ধ্যায় তাকে ওই পথে ভারতের শিলং নেওয়া হয় বলে ধারণা করা হয়। গুম হওয়ার ৬৩ দিন পর তাকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং শহরে পাওয়া যায়। আইনি জটিলতা ও মামলা মোকাবিলার কারণে তিনি প্রায় ৯ বছর সেখানে অবস্থান করেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১১ আগস্ট তিনি দেশে ফেরেন।
বাংলাদেশের তামাবিল ও ভারতের ডাউকি এলাকায় গুমের স্মৃতি বিজড়িত বলে জানিয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী। তিনি শনিবার সারাদিনই বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের সঙ্গে ছিলেন।
মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, ‘লিডারকে (সালাহউদ্দিন আহমদ) চোখ বেঁধে কাদামাটি দিয়ে হাঁটিয়ে নেওয়া হয়েছিল। একপর্যায়ে তাকে সিঁড়ি বেয়ে কোনো উঁচু জায়গায় উঠিয়ে বাড়িতে রাখা হয়েছিল। সেখানে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা ইংরেজিতে ও হিন্দি ভাষায় কথা বলেছিলেন। শ্যুটিংয়ে সেসব স্থান ও বিষয়গুলো তিনি বলেছেন।’