হাতিয়ায় নিবন্ধিত জেলেদের অর্ধেকই পাচ্ছেন না সরকারি চাল
নিজস্ব প্রতিবেদক (নোয়াখালী), এবিসি নিউজ, (১১ অক্টোবর) : নোয়াখালী জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মাছ শিকারে সরকার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এ সময়ে জেলেরা জীবিকা হারালেও সরকারি খাদ্য সহায়তা সব নিবন্ধিত জেলে পরিবারের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। ফলে অর্ধেকের বেশি পরিবার এ সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়ে চরম হতাশা ও ক্ষোভে ভুগছে।
উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জেলার মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগর থেকে ইলিশ আহরণ হয়েছে। হাতিয়ায় লক্ষাধিক জেলে থাকলে ও বর্তমানে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ২৫ হাজার ৯৯৫ জন। কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র ১৫ হাজার ৭৩৩ পরিবারকে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। ফলে প্রায় অর্ধেকেরও বেশি জেলে পরিবার সরকারি সহায়তার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
স্থানীয় জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞার সময়টিতে তারা একমাত্র আয়ের উৎস হারিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েন। তাই এ মৌসুমে সহায়তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তারা দ্রুত সব নিবন্ধিত জেলেকে খাদ্য সহায়তার আওতায় আনার দাবি জানান।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, ইলিশ প্রজনন রক্ষায় প্রতিবছরই সরকার নির্দিষ্ট সময় মাছ ধরা, পরিবহন, বিক্রি ও মজুতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ সময়ে জেলেদের জীবিকা নির্বাহে সহায়তা হিসেবে চাল বিতরণ করা হয়। এ বছর বরাদ্দ এসেছে ৩৯৩ দশমিক ৩৩ মেট্রিক টন চাল, যা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে উপজেলা বিতরণ হবে।
জেলে আমিন রসুল অভিযোগ করেন, ভিজিএফ তালিকায় প্রকৃত জেলেরা বাদ পড়ছেন, অথচ অন্যরা সুবিধাভোগী হচ্ছেন। এতে পরিবার নিয়ে না খেয়ে দিন কাটানোর আশঙ্কায় রয়েছেন তিনি।
উপজেলা পায়তান ঘাটের জেলে আলাউদ্দিন মাঝি বলেন, ‘এবার মাছ কম ছিল, এখন নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। ধার করে নদীতে নামছি, কিন্তু খরচ উঠেনি। সরকারি ভাতা কবে পাব, তাও জানি না। অনেক সময় অভিযান শেষের দিকে চাল দেওয়া হয়, তখন কোনো লাভ হয় না।‘
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফাহাদ হাসান বলেন, ‘সরকারি বরাদ্দ সীমিত থাকায় নির্ধারিত সংখ্যক জেলেকেই সহায়তা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এ বছরও সব জেলেকে সহায়তা দেওয়া সম্ভব হয়নি।’