অফিস সিনড্রোম কাটাবেন কীভাবে

লাইফস্টাইল ডেস্ক, এবিসি নিউজ, ঢাকা (৩ অক্টোবর) : আধুনিক কর্পোরেট জীবন মানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কম্পিউটারের পর্দার দিকে তাকিয়ে একভাবে বসে কাজ।  দিনের পর দিন এভাবে কাজ করার ফলে ঘাড়, পিঠ বা কোমরের ব্যথা এখন অনেক অফিসকর্মীরই দৈনন্দিন সঙ্গী হয়ে উঠেছে। অনেকেই এই ধরনের ব্যথাকে সামান্য ক্লান্তি বা কাজের চাপ বলে উড়িয়ে দেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এই উপসর্গগুলি আসলে একটি গুরুতর সমস্যার সঙ্কেত, যার নাম ‘অফিস সিনড্রোম’।

অফিস সিনড্রোম নির্দিষ্ট কোনও রোগ নয়, বরং দীর্ঘক্ষণ ধরে অস্বাস্থ্যকর ভঙ্গিতে বসে কাজ করার ফলে তৈরি হওয়া একাধিক শারীরিক সমস্যার একটি সমষ্টি। মূলত পেশি এবং স্নায়ুতন্ত্রের উপর এর প্রভাব পড়ে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেয়ারে বসে কম্পিউটারের সামনে ঝুঁকে কাজ করার ফলে শরীরের বিভিন্ন পেশি শক্ত বা অনমনীয় হয়ে যায় এবং মেরুদণ্ডের উপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টি হয়। এর থেকেই জন্ম নেয় একাধিক সমস্যা। এর মধ্যে ঘাড়, কাঁধ ও পিঠে ব্যথা, মাথাব্যথা, কোমরে যন্ত্রণা, কব্জি ও আঙুলে ব্যথা , চোখের সমস্যা, হাতে-পায়ে ঝিঁ ঝিঁ ধরা সমস্যা অন্যতম।  বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের সমস্যার পিছনে প্রধানত চারটি কারণ দায়ী। প্রথমত, ভুল শারীরিক ভঙ্গি; বিশেষ করে কম্পিউটারের দিকে ঝুঁকে কাজ করার ফলে ‘টেক নেক’ তৈরি হয়, যা ঘাড় এবং শিরদাঁড়ার উপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করে। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘক্ষণ গতিহীন থাকা, যার ফলে রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হয় এবং পেশি শক্ত হয়ে যায়। তৃতীয়ত, চেয়ার বা ডেস্কের উচ্চতা সঠিক না থাকা। চতুর্থত, মানসিক চাপ, যা আমাদের ঘাড় ও কাঁধের পেশিগুলিকে শক্ত করে তোলে এবং ব্যথা বাড়ায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জীবনশৈলীতে সামান্য কিছু পরিবর্তন আনলেই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
সঠিক ভঙ্গিতে বসা: চেয়ারে বসার সময় কোমর সোজা রাখুন। কম্পিউটার মনিটর যেন চোখের সোজাসুজি থাকে, যাতে ঘাড় ঝুঁকাতে না হয়। পা দুটি মাটিতে সমানভাবে রাখুন।
নিয়মিত বিরতি: প্রতি এক ঘণ্টা অন্তর অন্তত পাঁচ মিনিটের জন্য চেয়ার থেকে উঠে হাঁটাহাঁটি করুন। চোখের আরামের জন্য ‘২০-২০-২০’ নিয়ম মেনে চলুন। অ
সাধারণ ব্যায়াম: কাজের ফাঁকেই ঘাড় বা কাঁধ ঘোরানোর মতো হালকা ব্যায়াম করুন। হাত ও পায়ের পাতা ঘোরানো বা সহজ স্ট্রেচিং পেশিকে সচল রাখতে সাহায্য করে।
কাজের বাইরে জীবনশৈলী: সপ্তাহে অন্তত তিন থেকে চার দিন হালকা ব্যায়াম, যোগাসন বা সাঁতারের অভ্যাস করুন। এটি পেশিকে সচল ও শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে। পর্যাপ্ত ঘুম এবং প্রদাহনাশক খাবার, যেমন ফল ও সবুজ শাকসবজি, খাদ্যতালিকায় যোগ করুন।
বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন: ব্যথা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা সহ্যের বাইরে চলে যায়, তবে অবহেলা না করে অবশ্যই ফিজিওথেরাপিস্ট বা অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ