নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়েও দলগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ: সিইসি
নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসিনিউজবিডি, (১৯ নভেম্বর) : সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন জাতির কাছে সব রাজনৈতিক দলেরই অঙ্গীকার – এমন মন্তব্য করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, ‘নির্বাচনের মাঠে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেয়েও রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’
বুধবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে চতুর্থ দিনের সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, আচরণবিধি প্রতিপালনই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রধান শর্ত।
তিনি বলেন, ‘কমিশনের প্রত্যাশা-সব রাজনৈতিক দল তাদের প্রতিশ্রুতি বজায় রেখে আচরণবিধি কঠোরভাবে মেনে চলবে। আচরণবিধি তৈরি করা বড় কাজ নয়, কিন্তু তা পালন করাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
গত ১০–১৫ বছরে ভোটারদের মধ্যে ভোটবিমুখতা তৈরি হয়েছে। এজন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বকে তৃণমূলে গিয়ে ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান সিইসি।
সিইসি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে কাজ করে ঠিকই, কিন্তু নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাজনৈতিক দলের। দলগুলো আন্তরিক হলে কমিশনকে বাড়তি চাপ নিতে হয় না।’
তার মতে, ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে রাজনৈতিক দলগুলোই সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এজন্য দলগুলোকে তাদের কর্মীদের মাধ্যমে ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান সিইসি।
সিইসি বলেন, ‘কিভাবে রাজনৈতিক দল, ভোটার, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিলে জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারি- সে লক্ষ্যে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি।’
সিইসি নাসির উদ্দিন জানান, শপথ গ্রহণের পর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রাথমিক আলাপ-আলোচনা চললেও, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের (ইআরএসসি) কাজ চলমান থাকায় পূর্ণাঙ্গ সংলাপ শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরই আমরা আনুষ্ঠানিক সংলাপ শুরু করেছি।’
এদিকে ইসির চতুর্থ দিনের সংলাপে আজ দুদফায় ১২টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।
প্রথম পর্বে আজ সকাল ১০টা থেকে সংলাপে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএজেএমপি), ইনসানিয়াত বিপ্লব, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণসংহতি আন্দোলন ও জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)।
দ্বিতীয় পর্বে দুপুর ২টা থেকে সংলাপে অংশ নেবে বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), গণঅধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি) এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্কসবাদী) প্রতিনিধিরা।
অন্যদিকে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হওয়া সত্ত্বেও এবার ইসির সংলাপে জাতীয় পার্টিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তবে নতুন নিবন্ধন পাওয়া এনসিপি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) তালিকায় রয়েছে।
গত ১৩ নভেম্বর থেকে ইসির ধারাবাহিক সংলাপ শুরু হয়েছে, যা আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই আয়োজন। ইতোমধ্যে ৩৫টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও শুধুমাত্র তৃণমূল বিএনপি অংশ নেয়নি।
