কমলগঞ্জে শেষ হলো মণিপুরীদের রাস উৎসব

নিজস্ব প্রতিবেদক (মৌলভীবাজার), এবিসিনিউজবিডি, (৭ নভেম্বর) : ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মণিপুরীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব মহারাসলীলা অনুষ্ঠিত হয়েছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে।

গতকাল ভোরে শেষ হয় ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় এ উৎসব। কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে রাসনৃত্যের বর্ণিল এ উৎসবে হাজির হন দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষ।

আয়োজকরা জানায়, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর শিববাজার জোড়া মণ্ডপ ও আদমপুর কালচারাল কমপ্লেক্সে বুধবার দুপুর থেকে গোধূলি পর্যন্ত চলে কৃষ্ণের বাল্যলীলা অনুসরণে রাখাল নৃত্য। এ নাচে অংশ নেয় মণিপুরী শিশু-কিশোররা। রাত ১২টা থেকে ভোর পর্যন্ত চলে আয়োজনের প্রধান আকর্ষণ শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলা। এ নৃত্যে অংশ নেন মণিপুরী তরুণীরা।

কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর জোড়া মণ্ডপ প্রাঙ্গণে মণিপুরী মহারাসলীলা সেবা সংঘের উদ্যোগে বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী সম্প্রদায়ের ১৮৩তম মহারাস উৎসব উপলক্ষে বুধবার বিকালে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অন্যদিকে মণিপুরী মহারাস উদযাপন কমিটির উদ্যোগে আদমপুর মণিপুরী কালচারাল কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে মীতৈ মণিপুরী সম্প্রদায়ের ৪০তম রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় আলোচনা সভা, গুণীজন সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

মণিপুরী মহারাসলীলা সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ বলেন, ‘শুধুমাত্র নিজস্ব আচার নয়, সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন আর অসাম্প্রদায়িক প্রতীক হয়ে উঠেছে মণিপুরীদের এই ধর্মীয় উৎসব।’

আয়োজকরা জানান, মণিপুরের মহারাজা ভাগ্যচন্দ্র সিংহ ১৭৭৯ সালে এ রাস উৎসব শুরু করেন। এরপর থেকে কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী মণিপুরীদের প্রধান ধর্মীয় মহোৎসব শ্রী শ্রী কৃষ্ণের মহারাসলীলা পালিত হয়ে আসছে। ১৯২৬ সালে সিলেটের মাছিমপুরে মণিপুরী রাসনৃত্য উপভোগ করে মুগ্ধ হয়েছিলেন বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। পরে কবিগুরু কমলগঞ্জের নৃত্য শিক্ষক নীলেশ্বর মুখার্জিকে শান্তি নিকেতনে নিয়ে প্রবর্তন করেছিলেন মণিপুরী নৃত্য শিক্ষা।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ