আফগানিস্তানের এক ইঞ্চি মাটি নিয়েও চুক্তি সম্ভব নয়: তালেবান কর্মকর্তা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসি নিউজ, (২২ সেপ্টেম্বর) : বাগরাম বিমানঘাঁটি নিয়ে কোনো চুক্তি সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন আফগানিস্তানের একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা। আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিফ অফ স্টাফ ফাসিহউদ্দিন ফিতরাত বলেন, আফগানিস্তানের এক ইঞ্চি মাটি নিয়েও চুক্তি সম্ভব নয়।

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় নিউজ চ্যানেল এনডিটিভি এক প্রতিদেবনে এ তথ্য জানায়।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে জানিয়েছেন, আমেরিকার তৈরি বাগরাম বিমানঘাঁটি যদি আফগানিস্তান ফিরিয়ে না দেয়, তাহলে খারাপ কিছু ঘটবে।

বাগরাম বিমানঘাঁটি আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় বিমানঘাঁটি। এটি রাজধানী কাবুলের উত্তরে অবস্থিত। এটি তালেবানের বিরুদ্ধে আমেরিকার ২০ বছরের যুদ্ধের কেন্দ্র ছিল।

ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, যদি আফগানিস্তান বাগরাম ঘাঁটি ফিরিয়ে না দেয়, তাহলে কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে। এই ঘাঁটি চার বছর আগে মার্কিন সেনারা ত্যাগ করেছিলেন।

আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিফ অফ স্টাফ ফাসিহউদ্দিন ফিতরাত বলেন, কিছু লোক রাজনৈতিক চুক্তির মাধ্যমে এই ঘাঁটি ফিরিয়ে নিতে চায়।

আফগান সরকার একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে বলছে, আফগানিস্তানের স্বাধীনতা এবং ভূখণ্ডের অখণ্ডতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

অন্যদিকে ট্রাম্প বারবার এই ঘাঁটি হারানোর সমালোচনা করেছেন। গত বৃহস্পতিবার ব্রিটেনে রাষ্ট্রীয় সফরের সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রথমবার প্রকাশ্যে জানান, আমেরিকার বাগরাম ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেওয়া উচিত।

উল্লেখ্য ২০২১ সালের জুলাই মাসে মার্কিন ও ন্যাটো সেনারা বাগরাম বিমানবন্দর ত্যাগ করে। এটি জো বাইডেনের প্রেসিডেন্সির সময় হলেও, ২০২০ সালে তালিবানের সঙ্গে ট্রাম্পের করা চুক্তির অংশ ছিল।

এই ঘাঁটি হারানোর ফলে আফগান সেনাবাহিনী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভেঙে পড়ে এবং দেশটিতে তালেবান ক্ষমতায় ফিরে আসে।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকরা ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তিনি কি বাগরাম পুনরুদ্ধারের জন্য মার্কিন সেনা পাঠানোর কথা ভাবছেন?

ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা এখন এটি নিয়ে কথা বলব না। তবে আমরা আফগানিস্তানের সঙ্গে কথা বলছি। আমরা এটি ফিরিয়ে নিতে চাই, এখনই চাই। যদি তারা তা না করে, তাহলে তারা জানবে আমি কী করব।’

বাগরাম একটি বিশাল ঘাঁটি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অন্যান্যরা বারবার বলেছে, আমেরিকার ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’ এই ঘাঁটিতে বন্দিদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে।

এই বিমানঘাঁটি প্রথমে ১৯৫০-এর দশকে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তায় তৈরি হয়। পরে শীতল যুদ্ধের সময় আমেরিকার সাহায্যে এটি বড় করা হয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের আফগানিস্তান দখলের সময় এটি আরও উন্নত করা হয়। ২০১০ সালে আমেরিকার নিয়ন্ত্রণের সময় এটি একটি ছোট শহরের মতো হয়ে যায়। এখানে সুপারমার্কেট, দোকান, এমনকি ডেইরি কুইন এবং বার্গার কিং-এর মতো দোকানও ছিল। এই ঘাঁটিতে বারাক ওবামা ২০১২ সালে এবং ট্রাম্প ২০১৯ সালে সফর করেছিলেন। সূত্র: এনডিটিভি

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ