ড্যাফোডিল-সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ, আহত ১

নিজস্ব প্রতিবেদক (সাভার), এবিসিনিউজবিডি, (২৭ অক্টোবর) : সাভারে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কয়েকজন শিক্ষার্থীর একটি বাসায় সিটি ইউনিভার্সিটির কিছু শিক্ষার্থীর হামলার অভিযোগকে কেন্দ্র করে দুই ইউনিভার্সিটির মধ‍্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে একজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

রবিবার (২৬ অক্টোবর) রাতে সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের খাগান এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহতের নাম পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

সাভার মডেল থানার বিরুলিয়া ফাঁড়ির ইনচার্জ আব্দুল ওহাব গণমাধ্যমকে বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাতে খাগান এলাকায় ড্যাফোডিল ও সিটি ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। পরে আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করি। তবে ঘটনাটি মীমাংসার দিকে যাচ্ছিল। কিন্তু সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীকে মারধর করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। তবে সংঘর্ষে আরও আহত হয়েছে কিনা তা এখনো জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে অশোভনমূলক আচরণ থেকে ঘটনাটির সূত্রপাত শুরু হয়। ব্যাচেলর প্যারাডাইস নামক একটি ভবনের সামনে ঘটনাটি ঘটে। এ নিয়ে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পরে রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের ওই বাসায় হামলা ও ভাঙচুর করলে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে।

হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শত শত শিক্ষার্থী ঘটনাস্থলে জড়ো হন। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও পুলিশ তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।  পরে প্রক্টর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুরোধে শিক্ষার্থীরা ব্যাচেলর প্যারাডাইসের সামনে অবস্থান নেন। এদিকে সিটি ইউনিভার্সিটির হামলাকারী শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।

এ বিষয়ে সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু জায়গায় আগুন দেখা গেছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ সত্ত্বেও দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটেছে। উত্তেজনার এক পর্যায়ে গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে।

প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশ (পুসাব) নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে লিখে, ‘এটা কোনোভাবেই শিক্ষার্থীদের আচরণ হতে পারে না। প্রতিবেশী দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঝগড়া হতে পারে, তর্ক হতে পারে, বিবাদ হতে পারে! তাই বলে এভাবে হাজারে হাজারে গিয়ে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ধ্বংস করা, সম্পদ ধ্বংস করা, নিজের ভাই-বোনদের মেরে আহত করা কোনোভাবেই কাম্য না! এটা অসভ্যতা, এটা উগ্রতা, এটা হিংস্রতা! কী করতেছো তোমরা! নিজেদের রক্ত নিজেরাই খাচ্ছো?’

পোস্টে আরও লেখা হয়, ‘মনে রাখবা, এখানে কেউ জিতে নাই, গায়ের জোর দেখায়ে, শক্তি দেখায়ে, জুলুম করে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হল, বাস ধ্বংস করে কখনও জেতা যায় না। এই মানসিকতা যাদের ভেতরে আছে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা উচিত না! আল্লাহর ওয়াস্তে থামো, সবাই মিলে আগুন নেভাও, শান্ত করো, শান্ত হও। নিজেরা নিজেদের ধ্বংস ডেকে আইনোনা।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ