শরিকদের আসনে জয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসিনিউজবিডি, (২৫ অক্টোবর) : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট শরিকদের ৩০-৩৫টি আসনে ছাড় দিতে পারে বিএনপি। ইতোমধ্যে ১২ জনকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। তবে ছেড়ে দেওয়া আসনে শরিক দলের প্রার্থীরা জয়লাভ করতে পারবেন কি না, তা নিয়ে বিএনপির মধ্যে আলোচনা আছে। বলা হচ্ছে, চার-পাঁচজন ছাড়া শরিকদের বেশির ভাগেরই দলগত ও নিজস্ব কোনো ভোটব্যাংক নেই। নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও (সংশোধন) অধ্যাদেশের খসড়া কার্যকর হলে শরিকরা ধানের শীষ প্রতীক পাবেন না। সে ক্ষেত্রে তাদের অনেকেরই জয়ের সম্ভাবনা আরও কমে যেতে পারে।
২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোট ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) মিলে চারদলীয় জোট গঠন করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। তবে ওই দলগুলোর প্রত্যেকেরই নিজস্ব কিছু ভোটব্যাংক ছিল। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে গড়ে ৪ শতাংশের বেশি ভোট পায় জামায়াত। ২০১৮ সালে নিবন্ধন না থাকায় ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয় দলটি। ওই নির্বাচনে বেশির ভাগ আসনে জামায়াতকে ১৫ থেকে ৩০ হাজারের মতো ভোট পেতে দেখা যায়।
অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থর পৈতৃক আসন ভোলায় তার নিজস্ব ভোটব্যাংক রয়েছে। তার বাবা জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব প্রয়াত নাজিউর রহমান মঞ্জুর ভোলার জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির খারাপ ফলাফলের মধ্যেও ভোলা-১ আসন থেকে জয়লাভ করতে সমর্থ হন পার্থ। ২০১৮ সালের নির্বাচনে পার্থ ঢাকা-১৭ থেকে অংশ নিয়েছেন। পার্থর বাইরে বাংলাদেশ এলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম ও সৈয়দ এহসানুল হুদার জয়লাভের সম্ভাবনা রয়েছে বলে বিএনপির মধ্যে আলোচনা রয়েছে।
এলডিপির একাংশের নেতা হওয়া সত্ত্বেও চট্টগ্রাম ছাত্রদলের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক এবং চট্টগ্রাম মহানগরী বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিমকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা গ্রহণ করেছেন বলে দলটির নেতা-কর্মীরা মনে করছেন। কিন্তু শরিক অন্য দলগুলোর প্রার্থীদের জয়লাভের সম্ভাবনার বিষয়ে এ ধরনের আলোচনা বিএনপিতে নেই।
যদিও শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আন্দোলনে শরিক দলগুলোর যথেষ্ট অবদান রয়েছে। ১৫ বছরের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও তারা বিএনপিকে ছেড়ে যায়নি। তা ছাড়া জোটের অনেক নেতারই দলের ভেতর ও বাইরে ক্লিন ইমেজ রয়েছে। কেউ কেউ সুশীল সমাজের কাছেও অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য। ফলে বিএনপির কাছ থেকে আসন-ছাড়ের ব্যাপারে তারা সত্যিকার অর্থে হকদার ও দাবিদার বলে বিবেচিত। কিন্তু নির্বাচনি বৈতরণী কীভাবে পার হবেন ভোটের হিসাব-নিকাশ, সেটি মিলছে না। ফলে চিন্তিত হয়ে পড়েছে বিএনপি।
দলটির দুশ্চিন্তার আরও বড় কারণ হলো, শেখ হাসিনা বিগত তিনটি নির্বাচনে গোয়েন্দা সংস্থা এবং প্রশাসনের প্রভাব খাটিয়ে শরিক দলের প্রার্থীদের জয়লাভ করিয়ে এনেছেন। অনেকের মতে, হাসিনা শুধু প্রার্থীদের নামের তালিকা দিয়েছেন; ফলাফল ঠিক করেছে প্রশাসন। ফলে কর্তৃত্ববাদী সরকারপ্রধান হাসিনার মিত্রদের এমপি হতে তেমন কষ্ট করতে হয়নি। শুধু মনোনয়ন পেলেই তারা পাস করেছেন। এমনকি অনেককে তেমন অর্থও খরচ করতে হয়নি। শুধু শেখ হাসিনার ‘ইচ্ছা’ অনুযায়ী তালিকা ধরে প্রশাসন এবং গোয়েন্দা সংস্থার ‘যৌথ প্রযোজনায়’ সারা দেশের প্রার্থীদের জয়-পরাজয় ঘোষণা করা হয়েছে বলে দেশে রাজনীতিতে আলোচনা আছে।
কিন্তু আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে এই ধরনের নির্বাচন কোনোভাবেই সম্ভব হবে না বলে দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল মনে করছে। তাদের মতে, দেশের বিদ্যমান বাস্তবতায় বিএনপি বা কোনো দলের ইচ্ছায় প্রার্থীদের জয়লাভ করা সম্ভব হবে না। জনগণের ভোটের মাধ্যমেই তাদের জয়লাভ করতে হবে। তা ছাড়া প্রতিটি আসনে বিএনপির একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থী রয়েছেন। তারা খুব সহজে শরিক প্রার্থীদের ছাড় দিয়ে সর্বাত্মক সমর্থন দেবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় বিএনপির ভেতরেই রয়েছে।
অনেকের মতে, তারেক রহমান কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বহিষ্কার করলেও তাতে কতটা ফল আসবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে। কারণ এলাকার নেতা-কর্মীরা গত ১৭ বছর মনোনয়নপ্রত্যাশী স্থানীয় প্রভাবশালী দলীয় নেতাদের সঙ্গে ছিলেন। আন্দোলনের পাশাপাশি মামলা-হামলা মোকাবিলায়ও তারা ছিলেন এক কাতারে। তাদের কারও ব্যবসা, কারওবা চাকরি খোয়া গেছে। কেউ পঙ্গু, আবার কারও পরিবারের সদস্য গুম হয়েছেন। এদের বড় অংশ পুলিশি হামলা ও মামলার ভয়ে গত এক যুগ এলাকায় ঢুকতে পারেননি। এমন পরিস্থিতিতে দলীয় কেউ নির্বাচিত হলে তার কাছ থেকে ‘কিছু না কিছু’ সুবিধা এবং দুঃসময়ে আশ্রয় পাওয়া যাবে বলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মনে করছেন।
ফলে হঠাৎ করে নতুন কেউ জোটের প্রার্থী হয়ে এলাকায় গেলে তার পেছনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামবেন, এটা কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না। বিএনপি নেতাদের মতে, কোনো কারণে বিএনপির এক বা একাধিক বিদ্রোহী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকলে দলীয় নেতা-কর্মীরা তাকেই ভোট দিয়ে দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে দলীয় বহিষ্কারাদেশ কতটা কার্যকর করা যাবে, তা নিয়ে বিএনপিতে ব্যাপক সংশয় রয়েছে। অবশ্য জোট প্রার্থীরা নিজস্ব ক্যারিশমায় সবাইকে কতটা সংগঠিত করতে পারেন তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘জোট থেকে সরে আসার কোনো প্রশ্নই আসে না। যুগপৎ আন্দোলনে বিএনপির সঙ্গে প্রথমে ৪২টি দল যোগ দেয়, পরে আরও ১০টি দল আসে। সব মিলিয়ে ৫২-৫৩ দলের নেতারা আমাদের সঙ্গে রাজপথে কষ্ট করেছেন, কারাগারে গেছেন। আমরা বড় দল বলে সবকিছু নিয়ে নেব, এটা হতে পারে না। তাদের আমরা মূল্যায়ন করব।’
জানা গেছে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ বা আরপিও (সংশোধন) কার্যকর হলে এবার জোট বা মিত্র দলগুলোকে নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। জোটের প্রার্থী হলেও তাই তাদের পক্ষে ‘ধানের শীষ’ নিয়ে নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। ফলে এই নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করা আরও কঠিন হতে পারে। তবে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন নেই- এমন দলগুলো ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে। আরপিওর নতুন বিধানের বিষয়ে বিএনপি সন্তুষ্ট নয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, জোটের প্রার্থীরা যাতে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারেন, আরপিও অধ্যাদেশের খসড়ায় পরিবর্তন আনার জন্য নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেবে বিএনপি।
পিরোজপুর-১ (সদর-নাজিরপুর-জিয়ানগর) আসনে জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারকে সবুজ সংকেত দিয়েছে বিএনপি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ধানের শীষের মনোনয়ন পেলেও তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। সে সময় ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছিলেন দেলোয়ার হোসেন সাইদীর ছেলে শামীম সাঈদী। প্রশ্নবিদ্ধ সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের শ ম রেজাউল করিমের ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬১০ ভোটের বিপরীতে শামীম সাইদী ৮ হাজার ৩০৮ ভোট পান। এই আসনে এবার মোস্তফা জামাল হায়দারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জামায়াতের প্রয়াত নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ছেলে মাসুদ সাঈদীর সঙ্গে। বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, মোস্তফা জামাল হায়দারের ভোট শুধু নাজিরপুরে আছে। সদর ও জিয়ানগরে তার কোনো ভোট নেই। বিএনপির নেতা-কর্মীরা সমর্থন না দিলে তার জয় পাওয়া কঠিন হবে।
এ বিষয়ে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘বিএনপির নেতা-কর্মীরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাদের কার্যক্রমে আমি সন্তুষ্ট। বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা সমর্থন করলে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য বিএনপির সবুজ সংকেত পেয়েছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন। ওই নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির শরিফুল ইসলাম জিন্নাহর (লাঙ্গল) ১ লাখ ৭৮ হাজার ৩৪২ ভোটের বিপরীতে মান্না পেয়েছিলেন ৬২ হাজার ৩৯৩ ভোট। আওয়ামী লীগ না থাকলে আগামী নির্বাচনে মান্নার প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন জামায়াতের প্রার্থী মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন। তবে এই আসনে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি মির শাহ আলমও মনোনয়নপ্রত্যাশী। স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, মান্না ঢাকার রাজনীতিতে পরিচিত মুখ এবং গ্রহণযোগ্য হলেও এলাকায় ভোটে জেতার জন্য তাকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হতে পারে। তবে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে নামলে তার জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
নাগরিক ঐক্যর সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বিএনপির সবাই আমাকে পছন্দ করেন। এখন আমি আমার মতো করে প্রচার চালাচ্ছি। আশা করি, বিএনপির সবাই আমাকে সমর্থন দেবেন। জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’
গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা সেনানিবাসের একাংশ নিয়ে ঢাকা-১৭ আসন গঠিত। ২০১৮ সালের মতোই আসন্ন নির্বাচনে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থকে এই আসনে নির্বাচন করার জন্য ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছে বিএনপি। ২০১৮ সালের প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আকবর হোসেন পাঠানের (চিত্রনায়ক ফারুক) ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬১০ ভোটের বিপরীতে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে ভোট বর্জন করেও ৩৮ হাজার ৬৩৯ ভোট পান পার্থ। এর আগে তিনি ২০০৮ সালের নির্বাচনে ভোলা-১ থেকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছিলেন। জাতীয় রাজনীতিতে পরিচিত মুখ পার্থর ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে সমান জনপ্রিয়তা রয়েছে। এ জন্য এবার তিনি নিজের ও দলের জন্য ভোলা, ঢাকাসহ বেশ কয়েকটি আসনে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।
কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনে কিছুটা ভালো অবস্থানে রয়েছেন তিনবারের সাবেক সংসদ সদস্য এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ। ইতোমধ্যে তাকে সবুজ সংকেত দিয়েছে বিএনপি। ২০০১ সালে ধানের শীষ প্রতীকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৮ সালেও বিএনপি জোটের প্রার্থী ছিলেন তিনি। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আলী আশরাফ ১ লাখ ৮৪ হাজার ৯০১ ভোট এবং রেদোয়ান আহমেদ ১৫ হাজার ৭৪৭ ভোট পান। এবার তার প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মোশারফ হোসেন। স্থানীয় নেতা-কর্মীরা এ আসনে রেদোয়ান আহমেদকে শক্তিশালী প্রার্থী বলে মনে করছেন। তবে জয়লাভ করতে হলে তার পেছনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঐকবদ্ধ হতে হবে।
লক্ষ্মীপুর-১ আসনে (রামগঞ্জ) ১২-দলীয় জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিমকে সবুজ সংকেত দিয়েছে বিএনপি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন তিনি। প্রশ্নবিদ্ধ ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আনোয়ার হোসেন খানের ১ লাখ ৮৫ হাজার ৪৩৮ ভোটের বিপরীতে শাহাদাত হোসেন সেলিম ৩৮ হাজার ৮৯২ ভোট পেয়েছিলেন। এই আসনে বিএনপির সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিয়াউল হক জিয়ার ছেলে মুশফিকুল হক জয় প্রচার চালানোর পাশাপাশি লবিং-তদবির করলেও সেলিমই বিএনপির সমর্থন পেয়েছেন। জামায়াতের প্রার্থী উপজেলা আমির মাওলানা নাজমুল হোসাইন এই আসনে সেলিমের প্রতিদ্বন্দ্বী।
কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনে বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদাকে সবুজ সংকেত দিয়েছে বিএনপি। শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে বড় পরিসরে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা নিয়ে ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন তিনি। স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের একটি অংশও তার সঙ্গে মাঠে কাজ করছেন। কিন্তু এই আসনে জেলা বিএনপির সহসভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান ইকবালও প্রচার চালাচ্ছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে মজিবুর রহমান ইকবাল ২৭ হাজার ৫৯৪ ভোট পেয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আফজাল হোসেন ২ লাখ ২ হাজার ১৭৩ ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। এই আসনে হুদা ধানের শীষ প্রতীক পেলে তার পেছনে ঐকবদ্ধ হবে বিএনপি।
চট্টগ্রাম-১৪ আসনে (চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া) এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদের আসনটি তার ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুককে ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। অলি আহমদ বিএনপির ছয়বারের সাবেক সংসদ সদস্য। এবার তিনি নির্বাচন করবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে অনড় রয়েছেন। ভোটের মাঠে বাবার জনপ্রিয়তা কাজে লাগাতে ইতোমধ্যে প্রচার চালাচ্ছেন ওমর ফারুক। এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. শাহাদাত হোসেন।
স্থানীয় বিএনপি ও এলডিপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, এই আসনে অলি আহমদের জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। তার বিকল্প নেই। তিনি সব সময়ই জয়লাভ করে আসছেন। তারই উত্তরসূরি হিসেবে ওমর ফারুকের জয়লাভের সম্ভাবনা রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনে জোটের প্রার্থী হিসেবে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকিকে সবুজ সংকেত দিয়েছে বিএনপি। এবারই তিনি প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইতোমধ্যে স্থানীয় ‘সচেতন মহিলা সমাজ’-এর ব্যানারে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের নেতা-কর্মীরা কর্মসূচি দিয়ে সাকিকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছেন। এই আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন চাইছেন সাবেক সংসদ সদস্য এম এ খালেক। ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। সাকির প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জামায়াতের প্রার্থী দেওয়ান মো. নকিবুল হুদার সঙ্গে। স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, ঢাকার রাজনীতিতে সাকি পরিচিত মুখ এবং গ্রহণযোগ্য নেতা হলেও ওই আসনে তার নিজস্ব ভোটব্যাংক নেই। এখানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মন জয় করে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের মাঠে নামানো সাকির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সম্প্রতি তিনি এলাকায় যাতায়াত বাড়িয়েছেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘যুগপৎ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। এখনো সেটা অব্যাহত আছে। নির্বাচনে অন্য প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সাধারণ ভোটারদের ভালোই সাড়া পাচ্ছি। বিএনপির সাধারণ নেতা-কর্মীরাও সমর্থন দিচ্ছেন।’
নড়াইল-২ (লোহাগড়া-সদর) আসনে জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বিএনপির সবুজ সংকেত পেয়েছেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন। প্রশ্নবিদ্ধ ওই নির্বাচনে জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা নৌকায় ২ লাখ ৭১ হাজার ২১০ ভোট এবং ফরহাদ ৭ হাজার ৮৮৩ ভোট পান। নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা জামায়াতের আমির আতাউর রহমান বাচ্চু। এই আসনে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলামও মনোনয়নপ্রত্যাশী। এলাকায় গুঞ্জন আছে, তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। পরিস্থিতি এমন হলে ফরহাদের জয়লাভ করা কঠিন হতে পারে।
নড়াইল বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, বিএনপির একটি অংশ ফরহাদের সঙ্গে, আরেকটি অংশ মনিরুলের পাশে আছে। ফরহাদকে জয় পেতে হলে বিএনপির দুই অংশকে একমঞ্চে আনতে হবে।
ঢাকা-১৩ (মোহাম্মদপুর-আদাবর-শেরেবাংলা) আসনে এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজকে জোটের প্রার্থী হিসেবে সবুজ সংকেত দিয়েছে বিএনপি। উচ্চশিক্ষিত, তরুণ প্রজন্মের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে পরিচিতি থাকায় ববি হাজ্জাজকে মনোনয়ন দেওয়ার চিন্তা করেছে বিএনপি। ইতোমধ্যে এলাকায় গণসংযোগও করছেন ববি। এই আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থী হচ্ছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম ও আতাউর রহমান ঢালী। অন্যদিকে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মো. মোবারক হোসাইন দলটির প্রার্থী।
এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘আমি মাত্র যাত্রা শুরু করলাম। সবাই আমাকে সাপোর্ট দিচ্ছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করছি। সবার সাপোর্ট পেলে আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।’
জাতীয় রাজনীতির হিসাব-নিকাশের প্রেক্ষাপটে পটুয়াখালী-৩ আসনটি গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুরকে ছেড়ে দিতে চাইছে বিএনপি। কিন্তু এই আসনে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন প্রচার চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে এলাকায় ভোটের উত্তেজনা ও আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে। নুরকে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তারা বলছেন, কোনো মিত্রকে আসনটি ছেড়ে দিলে আসনটি বিএনপির হাতছাড়া হয়ে যাবে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে না পারলে নূরের জয়লাভ করা কঠিন।
ঝিনাইদহ-২ আসনে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানকে সবুজ সংকেত দিয়েছে বিএনপি। এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য তিন হেভিওয়েট প্রার্থী হলেন জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এম এ মজিদ, ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক এমপি মশিউর রহমানের ছেলে ডা. ইব্রাহিম রহমান বাবু এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মজিদ বিশ্বাস (ছোট মজিদ)। এই তিনজনকে এক করে চলাই বর্তমানে রাশেদ খানের প্রধান চ্যালেঞ্জ। আলোচনা আছে, রাশেদ খানকে বিএনপি মনোনয়ন দিলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সাবেক এমপি নাসের শাহরিয়ার জাহিদী মহুল প্রার্থী হতে পারেন। তবে বিএনপির কেউ মনোনয়ন পেলে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা নেই। বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জেলা জামায়াতের আমির আলী আজম মো. আবু বক্করের।
গণতন্ত্র মঞ্চের শরিকদের মধ্যে জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব শারীরিক অসুস্থতার জন্য এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইছেন না। লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থী এ বি এম আশরাফ উদ্দিন নিজানকে ইতোমধ্যে মনোনয়নের সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। তবে রবের স্ত্রী জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রবকে সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদে নেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিএনপি।
শরিকদের আরও যেসব নাম আলোচনায়
শরিকদের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আরও ১৮ জনের নাম বিএনপির বাছাই তালিকায় রয়েছে। তাদের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জরিপ দলের মাধ্যমে খোঁজখবর নিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
ঢাকা-৬ আসনে (ওয়ারী-গেন্ডারিয়া-সূত্রাপুর-বংশাল) বিএনপির কাছে আসন ছাড় চাইছেন গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলের সমাজ কল্যাণবিষয়ক সহসম্পাদক কাজী আবুল বাশারকে ধানের শীষের মনোনয়ন দিয়েও জোটের স্বার্থে শেষ মুহূর্তে সুব্রত চৌধুরীকে ছেড়ে দিয়েছিল বিএনপি। ওই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ ৯৩ হাজার ৫৫২ ভোট এবং সুব্রত চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে ২৩ হাজার ৬৯০ ভোট পান। এবার এই আসনে জামায়াতের প্রার্থী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান। স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, পুরান ঢাকার জনগণ স্থানীয় কাউকে ধানের শীষের প্রার্থী দেখতে চায়। তবে জোট ও জাতীয় রাজনীতির হিসাব-নিকাশ থেকে সুব্রত চৌধুরী বিবেচনায় রয়েছেন।
মাগুরা-১ (সদর) আসনে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমান বিএনপির কাছে আসন ছাড় চাইছেন। তবে এই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে গণসংযোগ করছেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলী আহম্মেদ ও সদস্যসচিব মনোয়ার হোসেন খান। ২০১৮ সালের নির্বাচনে মনোয়ার খান বিএনপির প্রার্থী ছিলেন।
ঢাকা-৮ আসনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বিএনপির কাছে আসন ছাড় চাইছেন। এই আসনে ধানের শীষের কান্ডারি বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম প্রভাবশালী সদস্য মির্জা আব্বাস। আসনটি কোনোভাবেই অন্য কাউকে ছাড়া হবে না বলে বিএনপির একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। সে ক্ষেত্রে সাইফুল হককে অন্য কোনো আসনে ছাড় দেওয়া হতে পারে।
ফেনী-৩ আসনে বিএনপির কাছে আসন ছাড় চাইছেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন। কিন্তু এই আসনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ইতোমধ্যে সবুজ সংকেত পেয়েছেন। স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, এখানে মিন্টু পরিবারের বিকল্প নেই। জানা গেছে, ২০১৮ সালের নির্বাচনে জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদকে ঢাকা-১৮ আসন ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি ৭২ হাজার ১৫০ ভোট পেলেও আওয়ামী লীগের সাহারা খাতুন ৩ লাখ ৩ হাজার ৯২ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন।
২০১৮ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরানকে পিরোজপুর-২ আসন ছেড়ে দিয়েছিল বিএনপি। ওই নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর ১ লাখ ৭৯ হাজার ৪২৫ ভোটের বিপরীতে ইরান পেয়েছিলেন ৬ হাজার ৩২৬ ভোট। এবার ইরান ঝালকাঠি-১ আসন থেকে বিএনপির কাছে ছাড়ের প্রত্যাশা করছেন। তবে এই আসনে নিউইয়র্ক মহানগর বিএনপির (দক্ষিণ) সভাপতি হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা ও বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামালের নাম বিএনপির প্রার্থী তালিকায় রয়েছে। বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, এই আসনে জোট কাউকে উড়িয়ে এনে প্রার্থী করলে দলীয় নেতা-কর্মীদের পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন হবে।
বিজেপির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন মনোনয়ন চাইছেন কুষ্টিয়া-২ (ভেড়ামারা-মিরপুর) আসনে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি তাকে এই আসনে ছাড় দিয়েছিল। ওই নির্বাচনে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু নৌকা প্রতীক নিয়ে ২ লাখ ৮২ হাজার ৬২২ ভোট পেয়েছিলেন। এর বিপরীতে লিংকন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছিলেন ৩৫ হাজার ৭৫১ ভোট। তবে এই আসনে বিএনপির পক্ষে তিনবারের এমপি অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী এবং ঢাকা মহানগর মহিলা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন প্রচার চালাচ্ছেন। দলের প্রার্থীদের বাইরে লিংকনকে মনোনয়ন দেওয়া হলে স্থানীয় বিএনপির সমর্থন পাওয়া তার জন্য কঠিন হবে।
রাজবাড়ী-২ আসনে জোটের মিত্র হিসেবে এনডিএম মহাসচিব মমিনুল আমিনের নাম তালিকায় আছে। এর আগে কখনো তিনি নির্বাচন করেননি। এই আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরুল হক সাবু এবং জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুণ অর রশিদ হারুণ গণসংযোগ করছেন। বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, মমিনুল আমিন এলাকায় ৩১ দফা নিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন। তৃণমূলের ভোটারদের দৃষ্টি কাড়ছেন তিনি। বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাকে সমর্থন দিলে তার জয়ের সম্ভাবনা রয়েছে।
এসব আসনের বাইরে জামালপুর-৫ আসনে ভাসানী জনশক্তি পার্টির সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, চট্টগ্রাম-৫ আসনে এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. জেনারেল (অব.) চৌধুরী সাহাবুদ্দিন, ময়মনসিংহ-৮ আসনে এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আরঙ্গজীব বেলাল, মৌলভীবাজার-২ আসনে ১২-দলীয় জোটের সাবেক তিনবারের সংসদ সদস্য নবাব আলী আব্বাছ, বরগুনা-২ আসনে ১২-দলীয় জোটের লায়ন ফারুক রহমান, বগুড়া-১ আসনে জাগপা সভাপতি খন্দকার লুৎফুর রহমান, ঢাকা-৫ আসনে বিজেপির মহাসচিব আব্দুল মতিন সাউদ, চট্টগ্রাম-১ আসনে সমমনা জোটের এ টি এম গোলাম মাওলা, চাঁদপুর-৩ আসনে গণফোরামের সেলিম আকবর, পটুয়াখালী-৩ আসনে মোহাম্মদ উল্যাহ মধু, ঢাকা-৭ আসনে লেবার পার্টির অ্যাডভোকেট জহুরা খাতুন জুইয়ের নাম জোটের মিত্র হিসেবে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় আছে। বিএনপির দলীয় সূত্র জানিয়েছে, এদের মধ্য থেকে যাদের জনপ্রিয়তা রয়েছে, তাদের কয়েকজনকে আসন ছাড় দেবে বিএনপি।
