শুটিংয়ে চুমু খেয়ে কেঁদেছিলেন মুক্তি

বিনোদন ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (৫ জুন ২০২০) : ১৯৯২ সালের সুপারহিট ছবি শেখ নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘চাঁদের আলো’। এ ছবির গান ‘তুমি আমার চাঁদ আমি চাঁদেরই আলো’ দেশজুড়ে হয়েছিল জনপ্রিয়। ‘চাঁদের আলো’ ছবিতে জুটি হয়ে অভিনয় করেছিলেন ওমর সানী ও মুক্তি। এ ছবির সাফল্যের পর ওমর সানী ব্যস্ত তারকা হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ছবির নায়িকা মুক্তি সিনেমায় অভিনয় চালিয়ে যাননি। মাত্র এক ছবির সুবাদে আজও তাঁকে মনে রেখেছেন দর্শকেরা। কোথায় আছেন মুক্তি?

মুক্তি থাকেন ঢাকার বনশ্রীতে। তাঁর স্বামীর নাম আরিফ। তিনি ব্যবসায়ী। মুক্তির একমাত্র মেয়ে কারিমা। সে পড়ে অষ্টম শ্রেণিতে। একই বাড়ির নিচতলায় থাকেন মুক্তির মা অভিনেত্রী আনোয়ারা। অনেকদিন হলো মুক্তি সিনেমায় অভিনয়ে অনিয়মিত হয়ে পড়েছেন। নাটকও ছেড়েছেন চার-পাঁচ বছর হয়ে গেছে।

মুক্তি জানালেন চলচ্চিত্র অভিনেত্রী হিসেবে তাঁর দুই পর্বে বিভক্ত ক্যারিয়ারের গল্প। মা আনোয়ারা দেশের খ্যাতিমান অভিনেত্রীদের একজন। সিনেমার লোকজনের আনাগোনা ছিল বাড়িতে। পেশার প্রয়োজনে নয়, নির্ভেজাল সম্পর্কের টানে সবাই আসতেন আনোয়ারার বাড়িতে। মুক্তিও মায়ের সঙ্গে যেতেন শুটিংয়ের সেটে। এভাবেই চোখে পড়েন নির্মাতাদের। আর তখন সিনেমায় শুরু হয়েছে নতুন মুখের জোয়ার।

হাসতে হাসতে মুক্তি বললেন, ‘নায়ক জসীম মামা নাকি আমাকে কোলে নিয়ে আয়নার সামনে বলতেন, “এটা আমার নায়িকা হবে।” চিত্রগ্রাহক রফিকুল বারী চৌধুরী আঙ্কেলের সঙ্গে বাবার খুব খাতির ছিল। তিনি বাবার কাছ থেকে আমাকে সিনেমার জন্য চেয়ে নেন। “চাঁদের আলো”র পরিচালক শেখ নজরুল মামা আমাকে খুব আদর করতেন। সিনেমার সবাই আমাদের পরিবারের অংশ ছিলেন। পারিবারিক পরিবেশের মধ্যেই প্রথম ছবিটা করে ফেলি।’

কেমন ছিল প্রথম ছবিতে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা? মুক্তির কথায়, ‘ওটা তো রোমান্টিক ছবি ছিল। কিছু রোমান্টিক দৃশ্যে ছিল। ওমর সানী এখনো ওই ঘটনা মনে করে হাসে। একটি দৃশ্যে আমার গালে চুমু দেয় সানী। তারপর আমার সে কি কান্না! কেন আমাকে চুমু খেলো ইত্যাদি। সবাই তখন আমাকে বোঝান, ছবিতে এ রকম করতে হয়, এটা–সেটা।’

‘চাঁদের আলো’ নির্মাণের সময় মুক্তি ছিলেন ভিকারুন্নেসা নূন স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। প্রথম ছবি মুক্তির পর তাঁকে নিয়ে সিনেমায় হইচই পড়ে গেল। বাদ সাধল স্কুল কর্তৃপক্ষ। আর মুক্তিও ছিলেন না নায়িকা হওয়ার জন্য উদগ্রীব। শখে শখে করে ফেলেন একটা ছবি। স্কুল যখন চাইছিল না, তখন মুক্তি নায়িকাদের দৌড় থেকে সরে আসেন।

‘চাঁদের আলো’র পর মুক্তি গৌতম ঘোষের বিখ্যাত ছবি ‘পদ্মা নদীর মাঝি’তে অভিনয় করলেন। নাচ-গান-কৌতুকের বাণিজ্যিক ছবি থেকে একেবারে ধ্রুপদি ছবিতে লাফ। এখানে তাঁর অভিনয় প্রশংসিতও হলো। একই সময় চিত্রনায়ক নাঈমের বিপরীতে ‘লড়াই’ ছবিতেও অভিনয় করলেন মুক্তি। তারপর অভিনয় থেকে কয়েক বছরের জন্য ছুটি হয়ে গেল তাঁর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ