এই বছরই স্মার্ট কার্ড দিতে চায় ইসি

ECসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ এই বছরের শেষভাগে ভোটারদের কাছে বিনামূল্যে আধুনিক প্রযুক্তির তথ্যসমৃদ্ধ জাতীয় পরিচয়পত্র পৌঁছাতে চায় নির্বাচন কমিশন।

টেকসই ও সুন্দর অবয়বে এ কার্ড বহুমুখী ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় তা সাধারণভাবে স্মার্টকার্ড হিসেবেই বিবেচিত হবে।

বর্তমানে এক পৃষ্ঠায় নাম, পিতা ও মাতার নাম, জন্মতারিখ ও আইডি নম্বর এবং অন্য পৃষ্ঠায় ঠিকানা সম্বলিত লেমিনেটিং করা কার্ড পাচ্ছেন ভোটাররা।

বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে এ সংক্রান্ত চুক্তির পর দুই বছর পার হলেও আইনবিধি না থাকায় স্মার্টকার্ড দেয়ার কাজ শুরু করতেই দেরি হয়।

আইনি কাঠামো পাওয়ায় নতুন অর্থবছরেই স্মার্টকার্ডের জন্য প্রয়োজনীয় দরপত্র আহ্বান ও কার্যাদেশ দেয়ার কাজ শুরু করবে ইসির সংশ্লিষ্ট প্রকল্প।

ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, “এ বছরের অক্টোবরের দিকে স্মার্টকার্ড সদৃশ নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের কাজ শুরুর পরিকল্পনা আমাদের।”

ওই সময়ে সম্ভব না হলে বছরের শেষে হলেও তা শুরু করতে ইসি বদ্ধপরিকর। প্রথম পর্ব শুরুর পর পর্যায়ক্রমে দেশের সব স্থানে তা শেষ করার পরিকল্পনাও রয়েছে।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত এক সভায় অংশ নিতে সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সঙ্গে সচিবও যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন।

সচিব জানান, অন্যান্য দেশের সঙ্গে মানের সমন্বয় রেখে দীর্ঘমেয়াদি ও ভোটারদের তথ্য আরো সুনিশ্চিত করতে ভালো প্রযুক্তি ব্যবহার হবে এ কার্ড তৈরিতে।

“জালিয়াতি রোধ, যন্ত্রে পাঠযোগ্য ও দেখতে সুন্দর হবে এ স্মার্টকার্ড। দেশে তৈরি এ কার্ডের প্রাথমিক ব্যয় হবে অন্তত দুই ডলার বা তার সামান্য বেশি।”

ইসি কর্মকর্তারা জানান, কার্ডের মেয়াদ অন্তত ১০ বছর হবে। প্রথমবার বিনামূল্যে বিতরণের পর হারানো বা সংশোধিত কার্ডের জন্য কত টাকায় কার্ড তোলা যাবে, তা পরে নির্ধারণ করা হবে।

দেশের ভোটারদের হাতে নির্ভুল ও প্রযুক্তিনির্ভর জাতীয় পরিচয়পত্র এ স্মার্টকার্ড দেওয়ার কার‌্যক্রম নিয়ে অভিজ্ঞতা বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্য সফর করছেন সিইসিসহ সংশ্লিষ্টরা।

জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি, বিতরণ, ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা ও তথ্যভাণ্ডার সংরক্ষণসহ বিষয়ক এসব সভায় নির্বাচন কমিশন, ইসি সচিবালয়, আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহেন্সিং এক্সেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্প ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের শীর্ষ ব্যক্তিরা রয়েছে।

বর্তমানে ৯ কোটি ২০ লাখের বেশি নাগরিক ভোটার তালিকাভুক্ত রয়েছে। সর্বশেষ হালনাগাদ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত লাখ দশেক ভোটার এখনো জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে পারেনি।

সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন ইসি সেনাবাহিনীর সহায়তায় ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের কাজ শুরু করে।

দেশের সব নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার বিধান রেখে গত বছর ৬ অক্টোবর ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (সংশোধন) বিল সংসদে পাস হয়। এর ফলে ১৮ বছরের কম বয়সীরাও জাতীয় পরিচয়পত্র পাবেন।

জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় নাগরিকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণ ও গোপনীয়তা রক্ষার বিধান করা হয়েছে সংশোধিত আইনে।

কোনো ব্যক্তি বা নির্বাচন কমিশনের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী বিনা অনুমতিতে ভোটার তালিকা বা জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত্র তথ্য বা উপাত্তের বিষয়ে গোপনীয়তা লঙ্ঘন করলে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হবে।

১৮ বছর ও তার বেশি বয়সীরা ভোটার হলেও এর কম বয়সীদের তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ এখনো শুরু হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ