১৭ বছরের সাজা ঘোষণার পর দেশজুড়ে আন্দোলনের ডাক ইমরান খানের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি, (২১ ডিসেম্বর) : পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার সমর্থকদের দেশব্যাপী আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) তোশাখানা–২ দুর্নীতি মামলায় তাকে ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর তিনি এ আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আপিল করবেন।
বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরাসরি প্রবেশাধিকার না থাকায়, ইমরান খান তার আইনজীবীদের মাধ্যমে এই বার্তা দেন।
ডন পত্রিকার বরাতে জানা যায়, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সোহেল আফ্রিদিকে গণআন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। তার ভাষায়, “আমি সোহেল আফ্রিদিকে বার্তা পাঠিয়েছি— স্ট্রিট মুভমেন্টের জন্য প্রস্তুত হতে। দেশের অধিকার আদায়ে পুরো জাতিকে রাস্তায় নামতে হবে।”
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় ইমরান খান বলেন, এই সিদ্ধান্ত আমার কাছে অপ্রত্যাশিত নয়।
তিনি অভিযোগ করেন, আদালত তড়িঘড়ি করে রায় দিয়েছে। তার দাবি, ‘গত তিন বছরে যেমন ভিত্তিহীন রায় ও সাজা দেওয়া হয়েছে, তোশাখানা–২ মামলার রায়ও তার ব্যতিক্রম নয়।’
তিনি আরও বলেন, কোনো প্রমাণ ছাড়াই এই রায় দেওয়া হয়েছে এবং তার আইনজীবীদের বক্তব্য শোনার সুযোগও দেওয়া হয়নি।
ইমরান খান নিশ্চিত করেন, তার আইনজীবীদের ইতোমধ্যে হাইকোর্টে আপিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পিটিআই এক বিবৃতিতে এই রায়কে “স্পষ্টতই অসাংবিধানিক ও বেআইনি” বলে উল্লেখ করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তোলে।
দলটির দাবি, ইমরান খানের কারাবাস দীর্ঘায়িত করতেই এই সাজা দেওয়া হয়েছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে পিটিআই মহাসচিব সালমান আকরাম রাজা ইমরান খানের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলেন, “আমি দৃঢ় ও অবিচল আছি। যা-ই ঘটুক, কারও কাছে ক্ষমা চাইব না।”
মামলাটি সৌদি যুবরাজের কাছ থেকে পাওয়া প্রায় ৭ কোটি ১০ লাখ পাকিস্তানি রুপি মূল্যের একটি বুলগারি গহনার সেট কম দামে দেখানোর অভিযোগ সংক্রান্ত।
এএনআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইমরান খান ও বুশরা বিবিকে বিশ্বাসভঙ্গ ও দুর্নীতিসংশ্লিষ্ট ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
এই সাজাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। লাহোর ও পেশোয়ারের বাসিন্দা ও সাংবাদিকদের একাংশ রায়ের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মতে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এই রায় প্রমাণের ঘাটতি রেখেছে এবং এতে বিচারব্যবস্থা ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের ওপর জনআস্থা আরও দুর্বল হয়েছে।
মনোয়ারুল হক/
