গণভোটের পদ্ধতি ও দিন-ক্ষণ নির্ধারণে বৈঠকে ঐকমত্য কমিশন
নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসি নিউজ, (৮ অক্টোবর) : জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গণভোটের পদ্ধতি ও দিন-ক্ষণ নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে বৈঠকটি শুরু হয়। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ইস্যুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এটি পঞ্চম বৈঠক। এতে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়।
বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নির্ধারণসহ আগামী ১০ তারিখের মধ্যেই গণভোটের প্রক্রিয়া ও দিনক্ষণ চূড়ান্ত করে সরকারকে প্রস্তাব দিতে চায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ সময় তিনি দলগুলোকে সহযোগিতার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে চলতি মাসের ১৫ বা ১৬ তারিখে জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর স্বাক্ষরের জন্য অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
এদিকে, সনদ বাস্তবায়নে প্রস্তাবিত গণভোটের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার সকালেও কমিশন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পুনরায় বৈঠক করেছে।
এর আগে, গত ৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত কমিশনের বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট আয়োজনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়। তবে গণভোটের সময় নিয়ে নতুন করে জটিলতা দেখা দেয়। বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের দিনই “নোট অব ডিসেন্ট”সহ জুলাই সনদের ওপর গণভোট চায়। অন্যদিকে, জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জাতীয় নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ প্রশ্নে গণভোটের পক্ষে মত দেয়। তবে এই দুই দল “নোট অব ডিসেন্ট” রাখার পক্ষে নয়। গণভোট নিয়ে দলগুলোর এমন ভিন্ন অবস্থানের মধ্যে জুলাই সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলোর বাস্তবায়ন পদ্ধতি ঠিক করতেই গতকাল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পুনরায় বৈঠকে বসে ঐকমত্য কমিশন। শেষ পর্যন্ত দলগুলো একমত না হলে, বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে সনদ বাস্তবায়নে সরকারের কাছে একাধিক সুপারিশ পেশ করার পরিকল্পনা রয়েছে কমিশনের।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নির্ধারণে গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। প্রায় আট মাসের আলোচনায় ৮৪টি বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। তবে মৌলিক সংস্কারের নয়টি বিষয়ে এখনো আপত্তি রয়েছে। ফলে জুলাই জাতীয় সনদের খসড়া চূড়ান্ত হলেও এর বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে কমিশন।
ঐকমত্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে, কমিশনের এবারের বৈঠকে চূড়ান্ত সনদে দলগুলোর স্বাক্ষরের তারিখ নির্ধারণ, রাজনৈতিক দলের সম্মিলিত ঘোষণা, বাস্তবায়ন কমিটি গঠন এবং জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক দলের সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। এরপর প্রকাশ করা হবে চূড়ান্ত স্বাক্ষরকারীদের তালিকা এবং বাস্তবায়নের রূপরেখা। এসব কাজ শেষ করতে কমিশনের হাতে সময় আছে মাত্র সাত দিন। কারণ ঐকমত্য কমিশনের বর্ধিত মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৫ অক্টোবর।