আফগানিস্তানের বিপক্ষে জিতল বাংলাদেশ
ক্রীড়া প্রতিবেদক, এবিসি নিউজ, ঢাকা (৩ অক্টোবর) : একটা সময় যখন মনে হচ্ছিল হেসে-খেলে জিততে যাচ্ছে বাংলাদেশ, তখন শুরু হয় ভুতুড়ে ধস। মাত্র ৯ রানে হারিয়ে বসে ৬ উইকেট! তবে রোমাঞ্চ ছড়ালেও শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে টাইগাররা।
১৫২ রানের লক্ষ্যটা সহজ করে দেয় উদ্বোধনী জুটি, ১১.৩ ওভারেই ১০৯ রান এনে দেন পারভেজ ইমন ও তানজিদ তামিম। তবে পরের ৩০ বলে মাত্র ৯ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারায় দল।
একটা সময় সমীকরণ হয়ে ওঠে কঠিন, শেষ ২৪ বলে প্রয়োজন হয় ৩৪ রান। তবে নুরুল হাসান সোহান ও রিশাদ হোসেন আর বিপদ আসতে দেননি। ৮ বল বাকি থাকতে এনে দেন ৪ উইকেটের জয়।
এশিয়া কাপে যে তামিম-ইমন জুটির খুঁজে ছিল বাংলাদেশ, তার দেখা মিলল এশিয়া কাপ শেষ হতেই। আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নেমেই ছন্দময় ব্যাট করছেন দু’জনে। পাওয়ার প্লেতে যোগ করেন ৫১।
১১.৪ ওভার পর্যন্ত কোনো বিপদ আসতে দেননি পারভেজ ইমন ও তানজিদ তামিম। অবশ্য সুযোগ দিয়েছিলেন বেশ কয়েকবার, তবে তা নিতে পারেনি আফগানরা।
অথচ সময়টা ভালো যাচ্ছিল না দু’জনের কারো। শেষ ৭ ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৩ রান ছিল ইমনের, আর শেষ ৫ ইনিংসে ৬৭ রান করেছিলেন তামিম। যেখানে এক ম্যাচেই ছিল ৩১ বলে ৫২!
তবে রানে ফেরার অপেক্ষা আর বাড়ালেন না দু’জনের কেউ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আজ সুযোগ পেয়েই আক্ষেপ ঘোচালেন। দু’জনেই তুলে নিয়েছেন ফিফটি। দলকে এনে দেন শতাধিক রানের জুটি।
৩৫ বলে পঞ্চাশে পৌঁছান ইমন, ৩৪ বলে ফিফটি করেন তানজিদ তামিম। ১১.৩ ওভারে দু’জনে মিলে করেন ১০৯ রান। জয়ের জন্য তখন প্রয়োজন ৫১ বলে মাত্র ৪৩ রান। এই রানটাই কঠিন হয়ে পড়ে এরপর।
উদ্বোধনী জুটি ভেঙেছে ইমনের বিদায়ে। ৩৭ বলে ৫৪ করে আউট হয়েছেন তিনি, শিকার ফরিদ মালিকের। এরপর শুরু হয় রশিদ খান শো। পরপর দুই ওভারে জোড়া উইকেট করে তুলে নেন তিনি।
প্রথম ২ ওভারে ১৫ রান দেয়া রশিদ পরের ২ ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। তার প্রথম শিকার সাইফ হাসান, দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্যাটারকে ০(৩) রাবে ফেরান তিনি। তবে এরপরই দেন বড় ধাক্কা।
জয়ের স্বপ্ন দেখানো তামিমকে বোকা বানান এই লেগি, ৩৭ বলে ৫১ রানে শেষ হয় তার ইনিংস। পরের ওভারে এসে তার শিকার জাকের আলি (৬) ও শামিম পাটোয়ারি (০)। তাতেই ধস নামে ইনিংসে।
এরপর নুর আহমেদ ফেরান সাকিবকে। রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনিও। ২৪ বলে মাত্র ৯ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে রিশাদের সাথে ১৮ বলে ৩৫* রানের জুটি গড়ে জয় নিশ্চিত করেন সোহান।
১৯তম ওভারে আজমতুল্লাহ ওমরজাইকে ২ ছক্কা আর ১ চার হাঁকিয়ে মেলান সমীকরণ। নুরুল হাসান সোহান ১৩ বলে ২৩ ও রিশাদ অপরাজিত থাকেন ৯ বলে ১৪ রানে।
এর আগে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ৩.২ ওভারে আফগানিস্তান তুলে ফেলে ২৫ রান। তবে এরপরই ১০ বলে ১৫ রান করা ইবরাহীম জাদরানকে ফেরান নাসুম আহমেদ।
দ্বিতীয় উইকেটের জন্য অপেক্ষা বাড়েনি, পরের ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে এসেই সেদিকুল্লাহ আতালকে ফেরান তানজিম সাকিব। ১০ বলে ১২ রান করে আউট হন তিনি।
সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই এবার রান আউটের ফাঁদে পড়েন দরবেশ রাসুলি। ২ বলে ০ রান নিয়ে ফিরতে হয় তাকে। আফগানিস্তান পাওয়ার প্লে শেষ করে ৩ উইকেটে ৩৩ রান নিয়ে।
পাওয়ার প্লের পরের দুই উইকেট রিশাদ হোসেনের। ৬.৪ ওভারে ফেরান মোহাম্মদ ইসহাককে, ৪ বলে ১ রান করে ফেরেন ওই আফগান। পরের উইকেট আসে ১১.১ ওভারে। আজমতুল্লাহ ওমরজাইকে ফেরান ১৮ রানে।
তবে আফগানদের রানের গতি ধরে রাখেন রাহমানুল্লাহ গুরবাজ। গুরবাজকে ১৪.৫ ওভারে ফেরান তানজিম সাকিব। ৩১ বলে ৪০ রান করে আউট হন তিনি। ১৫ ওভার শেষে স্কোর দাঁড়ায় ৯৫/৬।
১৭ ওভার শেষেও রান হাতের নাগালেই ছিল, ১১০/৬। তবে ১৮ ওভারে তাসকিনের থেকে আসে ২২ রান! ৩ ছক্কায় ১৮ রান নেন নাবি। যদিও সেই ওভারেই ২৫ বলে ৩৮ করে আউট হন তিনি।
পরের ওভারে মোস্তাফিজ ফেরান রশিদ খানকে (৪)। শেষ ওভারে তানজিম সাকিব দেন ১৩ রান। শেষ বলে নুর আহমেদ রান আউট হলেও ৯ উইকেটে ১৫১ রান তুলে ফেলে আফগানরা। জোড়া উইকেট নেন তানজিম ও রিশাদ।