মুক্তি পেলেন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী
নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসিনিউজবিডি, (১২ নভেম্বর) : সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) তিনি মুক্তি পান। কেরানীগঞ্জের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ঢাকার বাসায় এসেছেন বলে জানা গেছে। এক ফেসবুক পোস্টে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে মাক্রোবাসে কয়েকজনের সঙ্গে দেখা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এই মামলায় আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে জামিন দেন বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন ও বিচারপতি সগীর হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ। এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যায় রাষ্ট্রপক্ষ। গেল ২৮ অগাস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে এক আলোচনা সভায় ‘মব’ হামলার শিকার লতিফ সিদ্দিকী, সাংবাদিক পান্নাসহ ১৬ জনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরের দিন শাহবাগ থানায় তাদের নামেই উল্টো মামলা করা হয়, যেখানে ‘দেশকে অস্থিতিশীল এবং অন্তবর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ এনেছে পুলিশ।
মামলার বিবরণীতে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধের লক্ষ্যে গত ৫ অগাস্ট ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটে। এ সংগঠনের উদ্দেশ্য জাতির অর্জনকে মুছে ফেলার সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বাংলাদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আত্মত্যাগের প্রস্তুতি নেওয়া। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ২৮ অগাস্ট সকাল ১০টায় একটি গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
গুনবাগিচায় বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর মধ্যেই এক দল ব্যক্তি হট্টগোল করে স্লোগান দিয়ে সভাস্থলে ঢুকে পড়েন। একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানস্থলের দরজা বন্ধ করে দেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া কয়েকজনকে লাঞ্ছিত করেন। হট্টগোলকারীরা গোলটেবিল আলোচনার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন এবং আলোচনায় অংশ নেওয়াদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। এক পর্যায়ে অতিথিদের অনেককেই বের করে দেওয়া হলেও আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী এবং অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। পরে পুলিশ এসে ১৬ জনকে আটক করে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগ থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করেন এসআই আমিরুল ইসলাম। পরবর্তীতে এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ আমলে মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হওয়া লতিফ সিদ্দিকী ছাড়া বাকি ১৫ জন হলেন- মো.আব্দুল্লাহ আল আমিন (৭৩), শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন (৫৫), মঞ্জুরুল আলম (৪৯), কাজী এ টি এম আনিসুর রহমান বুলবুল (৭২), গোলাম মোস্তফা (৮১), মো. মহিউল ইসলাম ওরফে বাবু (৬৪), মো. জাকির হোসেন (৭৪), মো. তৌছিফুল বারী খান (৭২), মো. আমির হোসেন সুমন (৩৭), মো. আল আমিন (৪০), মো. নাজমুল আহসান (৩৫), সৈয়দ শাহেদ হাসান (৩৬), মো. শফিকুল ইসলাম দেলোয়ার (৬৪), দেওয়ান মোহম্মদ আলী (৫০), মো. আব্দুল্লাহীল কাইয়ুম (৬১)।
এই মামলায় পরে সাবেক সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম ও আবু আলম শহীদ খানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
