পুঁজিবাজারে চার মাসের মধ্যে সূচক সর্বনিম্নে

নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসিনিউজবিডি, (৫ নভেম্বর) : দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) চার মাস পেছনে ফিরে গেছে। বাজারটিতে টানা দরপতনে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত ৮ জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে। এতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ফের হতাশা ভর করছে। দৈনিক লেনদেনও কমে তলানিতে ঠেকেছে।

বিনিয়োগকারীরা জানান, বাজারের ধারাবাহিক পতন, লেনদেন কমে যাওয়া এবং সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতা তাদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়িয়েছে। তারা আবারও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে ডিএসইতে অধিকাংশ শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। যে সংখ্যক সিকিউরিটিজের দাম বেড়েছে তার তুলনায় দাম কমেছে চারগুণেরও বেশি। দিনের শেষে ডিএসইর সব সূচক প্রায় ১ শতাংশ বা তার বেশি কমে লেনদেন শেষ হয়। দুই কার্যদিবস পর লেনদেনের পরিমাণও নেমে আসে ৪০০ কোটি টাকার ঘরে। গতকাল দিনের শুরুটা ইতিবাচক থাকলেও আধাঘণ্টা পরই সূচক নিম্নমুখী হতে থাকে এবং শেষ দিকে বড় ধরনের দরপতন হয়। ফলে দাম কমার তালিকা দীর্ঘ হয় এবং সূচক পড়ে যায়। ডিএসইতে ৩৯৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ৫৬টির, কমেছে ২৭৭টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৬৩টি।

ডিএসইএক্স ৪২ পয়েন্ট বা প্রায় ১ শতাংশ কমে ৫ হাজার ১৯ পয়েন্টে নেমেছে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১১ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৫৬ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৯৪৬ পয়েন্টে।

ভালো লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৫টির দাম বাড়লেও ১৬৭টির দাম কমেছে এবং অপরিবর্তিত ২৬টির। মাঝারি লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১২টির, কমেছে ৫৮টির এবং ৯টির অপরিবর্তিত। ‘জেড’ গ্রুপে স্থান পাওয়া ১৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে, কমেছে ৫২টির এবং অপিবর্তিত ২৮টির। তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে মাত্র ছয়টির দাম বেড়েছে, ১৭টির দাম কমেছে এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪৫৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫১৮ কোটি ৬২ টাকা। এ হিসেবে লেনদেন কমেছে ৬৫ কোটি ৫ লাখ টাকা। সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টে—৩০ কোটি ৮২ লাখ টাকা। পরের অবস্থানে ছিল আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৯৩ লাখ টাকার। ১৬ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মনোস্পুল পেপার। এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষে ছিল খান ব্রাদার্স পিপিওভেন ব্যাগ, ওরিয়ন ইনফিউশন, মুন্নু ফেব্রিক্স, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল এবং কে অ্যান্ড কিউ।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) একই চিত্র। প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ৫৪ দশমিক ৯৫ পয়েন্ট কমে ৮ হাজার ৭২১ পয়েন্টে নেমেছে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৯১ দশমিক ১৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ১৩৪-এ। শরিয়াহ সূচক ৭ দশমিক ২৩ পয়েন্ট কমে ৮৮৮ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ১০৬ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ৫৫৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, আগের কার্যদিবসে যা ছিল ২৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। মোট ১৯১ কোম্পানির মধ্যে ৫০টির দাম বেড়েছে, কমেছে ১১৪টির।

Leave a Reply

Facebook
ব্রেকিং নিউজ