নিজস্ব প্রতিবেদক (ঢাকা), এবিসি নিউজ, (১৫ সেপ্টেম্বর) :
সামাজিক ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ পেলেন দেশের ১২ জন যুবউদ্যোক্তা। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এ পুরস্কার প্রদান করেন।
আজ সোমবার সকালে তার কার্যালয়ের শাপলা হলে ১২ জন যুবউদ্যোক্তার হাতে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিচালিত যুবকল্যাণ তহবিল ব্যবস্থাপনা বোর্ডের তত্ত্বাবধানে স্থায়ীভাবে ‘ইয়্যুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড’ প্রবর্তন করা হয়। এ অ্যাওয়ার্ডের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো যুবকদের স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের মাধ্যমে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা। এটি শুধু সম্মান নয়-একটি আহ্বান, যা তরুণদের নেতৃত্বে এক নতুন সম্ভাবনার পথ খুলে দেয়।
এ বছর যুব উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে অসাধারণ অবদানের জন্য ৩ জন, শিক্ষা, বিজ্ঞান, তথ্য প্রযুক্তি, কারিগরি ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য ২ জন। দেশপ্রেম, বীরত্ব ও সাহসিকতার ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য ২ জন। জ্যেষ্ঠদের প্রতি আদর্শ সেবা/সমাজকল্যাণে অসাধারণ অবদানের জন্য ৩ জন এবং ক্রীড়া, কলা ও সংস্কৃতিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ২ জনকে মনোনীত করা হয়।
পুরস্কার হিসেবে নগদ এক লাখ টাকার প্রাইজবন্ড, একটি সম্মাননা ক্রেস্ট এবং একটি সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
যুব উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে অসাদারণ অবদানের জন্য মনোনীত ৩ জন হলেন শেরপুরের মোছা. সুরাইয়া ফারহানা রেশমা, মাগুরার মো. আক্কচ খান ও লক্ষীপুরের মো.জাকির হোসেন।
শিক্ষা বিজ্ঞান, তথ্য প্রযুক্তি, কারিগরি ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য মনোনীত ২ জন হলেন- ঝালকাঠির মো. খালেদ সাইফুল্লাহ, গাইবান্ধার মো. শাহদাৎ হোসেন।
দেশপ্রেম, বীরত্ব ও সাহসিকতার ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য মনোনীত ২ জন হলেন- রাজশাহীর হাসান শেখ ও পাবনার মো. দ্বীপ মাহবুব।
জেষ্ঠ্যদের প্রতি আদর্শ সেবা/ সমাজকল্যাণে অসাধারণ অবদানের জন্য মনোনীত ৩ জন হলেন- লালমনিরহাটের মো. জামাল হোসেন, কক্সবাজারের নুরুল আবছার ও রাজশাহীর মো. মুহিন (মোহনা)।
ক্রীড়া, কলা ও সংস্কৃতিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য মনোনীত ২ জন হলেন- সাতক্ষীরার আফঈদা খন্দকার এবং বান্দরবানের উছাই মং মার্মা।
প্রসঙ্গত, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত যুবকল্যাণ তহবিল আইন ২০১৬ মোতাবেক সামাজিক ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য যুবদের পুরস্কৃত করার বিধান রয়েছে। তদানুযায়ী ৫টি ক্যাটাগরিতে ১২ জন যুবউদ্যোক্তাকে এভ ইয়্যুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫ প্রদান করা হয়।
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তরুণরা সক্রিয় থাকলে দেশের কোনো সমস্যাই আর অমীমাংসিত থাকতে পারে না। আমি যুবসমাজের প্রত্যেক সদস্যকে আহ্বান জানাই, তোমাদের মেধা, শক্তি এবং সৃজনশীলতা দিয়ে সমাজের ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখো। তোমাদের সাফল্য কেবল ব্যক্তিগত অর্জনে সীমাবদ্ধ না রেখে অন্যদের জন্যও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হোক।
তিনি আরও বলেন, আমাদের তরুণদের উদ্ভাবনী শক্তি আজ কেবল শিক্ষাক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নেই। তরুণরা স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ সুরক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়ও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এই তরুণরাই চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছে, তরুণরাই যুগে যুগে এ দেশের ইতিহাস রচনা করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমাদের চলার পথে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে, কখনো তা জনস্বাস্থ্যের সংকট, কখনো শিক্ষার অপর্যাপ্ত সুযোগ, আর কখনো পরিবেশগত বিপর্যয়। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে হতাশ না হয়ে বরং এগুলোকে আমাদের নিজস্ব শক্তি দিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। আমি আশা করি এ কাজেও আমাদের তরুণরা নেতৃত্ব দেবে।’