রায়ের কপি পেলেই কাদের মোল্লার ফাঁসি

mahbube alom alam মাহবুবে আলমরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম বলেছেন, আপিল বিভাগের চূড়ান্ত রায়ের অনুলিপি পেলেই যুদ্ধাপরাধী আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা যাবে।

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের দুদিন পর বৃহস্পতিবার অ্যাটর্নি জেনারেল তার কার্যালয়ে এবিসি নিউজ বিডিসহ চারটি সংবাদ মাধ্যমকে একথা বলেন।

সেদিন পর্যন্ত রায়ের অনুলিপি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছেনি। জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা ওই কারাগারেই বন্দি।

যুদ্ধাপরাধের দোষী সাব্যস্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গত ৫ ফেব্রুয়ারি দেয়া রায়ে ‘মিরপুরের কসাই’ হিসেবে পরিচিত কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছিল।

ওই রায়ের পর জামায়াত নেতার ‘বিজয়’ চিহ্ন প্রদর্শনের প্রতিক্রিয়ায় দেশব্যাপী গণজাগরণের প্রেক্ষাপটে সংশোধিত আপিল আইনে গত ১৭ সেপ্টেম্বর মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়।

আপিল বিভাগের ওই রায় পর্যালোচনায় রিভিউ আবেদনের কথা আসামি পক্ষ বললেও তার সুযোগ নেই বলে আবার বললেন অ্যাটর্নি জেনারেল। দণ্ড কার্যকরের ক্ষেত্রে মৃত্যু পরোয়ানা জারিরও প্রয়োজন নেই বলে মত জানান তিনি।

কাদের মোল্লা ক্ষমার আবেদন না করলে অথবা রাষ্ট্রপতি কাছে তার আবেদন নাকচ হলে তার ২১ থেকে ২৮ দিনের মধ্যে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে কারা কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন।

সাধারণত উচ্চ আদালতে কোন ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড দিলে বা বহাল রাখা হলে ওই রায় বিচারিক আদালতে যায়। বিচারিক আদালত থেকে মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়। এরপর কার্যকরের বিষয়টি আসে।

গত মঙ্গলবার রায়ের পর সাধারণ এই নিয়মটি অ্যাটর্নি জেনারেলও বলেছিলেন। তবে বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হবে।

“আইনের এ বিষয়টাতে {২০(৩) ধারা} তখন নজর যায়নি। এখানে বলা হয়েছে, সরকারের আদেশে এই আইনের অধীনে দেয়া দণ্ড কার্যকর হবে।”

তিনি বলেন, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াটি সাধারণ আইনে (ফৌজদারি কার্যবিধি ও সাক্ষ্য আইন) মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অথচ ট্রাইব্যুনাল আইনে (২৩ ধারা) বলা হয়েছে, এই দুটি আইসিটি অ্যাক্টের কোনো পর্যায়ে প্রযোজ্য হবে না।

রিভিউর বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারল বলেন, “কাদের মোল্লার আইনজীবীরা ১০৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে রিভিউ করে একটি প্রতিকার চাচ্ছেন। ৪৭ অনুচ্ছেদের (৩) দফায় উল্লেখিত মানবতাবিরোধী অপরাধ করায় ৪৭(ক)(২) অনুযায়ী সেই প্রতিকার তিনি চাইতে পারেন না। তাই এটা স্পষ্ট যে কাদের মোল্লার ক্ষেত্রে রিভিউর সুযোগ নেই।”

৪৭(ক)(২) এ বলা হয়েছে, এই সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে, তাহা সত্ত্বেও যে ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদের (৩) দফায় বর্ণিত কোনো আইন প্রযোজ্য হয়, এই সংবিধানের অধীন কোনো প্রতিকারের জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করিবার কোনো অধিকার সেই ব্যক্তির থাকবে না।

সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদের (৩) দফায় ‘গণহত্যাজনিত অপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ বা যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অন্যান্য অপরাধের জন্য কোনো সশস্ত্র বাহিনী বা প্রতিরক্ষা বাহিনী বা সহায়ক বাহিনীর সদস্য, বা অন্য কোনো ব্যক্তি, ব্যক্তি সমষ্টি বা সংগঠন কিংবা যুদ্ধবন্দিকে আটক, ফৌজদারিতে সোপর্দ কিংবা দণ্ডদান’ সম্পর্কে বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ