নারীদের চুল পড়ার কারণ

ফ্যাশন ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি, ঢাকা (১০ মে ২০২২) : মাথা থেকে চুল ঝরে যাওয়া স্বাভাবিক একটি বিষয়। তবে এর পরিমাণ যখন বেড়ে যায়, তখন তা সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। নারী ও পুরুষ উভয়ই চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, জীবদ্দশায় নারীদের তুলনায় পুরুষেরা এ সমস্যায় বেশি ভোগেন। তবে নারীদের মধ্যে চুল পড়া নিয়ে বেশি উদ্বেগ দেখা যায়।

কখন এটা সমস্যা : চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় নারীদের চুল পড়ার সমস্যাকে বলে অ্যানড্রোজেনেটিক অ্যালোপিসিয়া। সহজ ভাষায়, এই সমস্যা হলে মাথার উপরিভাগের ও দুই পাশের চুল পড়ে যায় কিংবা পাতলা হয়ে যায়। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১২৫টি পর্যন্ত চুল পড়তে পারে। এটা স্বাভাবিক। যখন চুল পড়ার পরিমাণ এর বেশি হয় ও নতুন চুল গজানোর পরিমাণ কমে আসে, তখন তা সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হয়। প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারী এ সমস্যায় ভোগেন।

চুল পড়ার সমস্যাকে অ্যানাজেন ইফফ্লুভিয়াম ও টেলোজেন ইফফ্লুভিয়াম—এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়। বিভিন্ন ওষুধের প্রতিক্রিয়া ও কেমোথেরাপির কারণে চুল পড়লে সেটি অ্যানাজেন ইফফ্লুভিয়াম। আর চুলের ফলিকল যখন রেস্টিং স্টেজে যায়, চুল আর বড় না হয়ে ঝরে যায়, তখন সেটা টেলোজেন ইফফ্লুভিয়াম। নানা কারণে নারীদের জীবনে কোনো কোনো সময় চুল পড়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। আসুন, এর কারণগুলো জেনে নিই—
ডায়েট করতে গিয়ে নারীরা অনেক সময় পুষ্টিকর খাবার কম খান। এতে প্রয়োজনীয় অনেক পুষ্টি উপাদান বিশেষত আমিষ, খনিজ ও ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দেয়। চুলের স্বাস্থ্যের জন্য আমিষ বেশ উপকারী। এর ঘাটতি হলে চুল পড়া শুরু হতে পারে। অনেক নারীর পাতে সুষম খাদ্য উপাদান থাকে না। অনেকে আমিষের তুলনায় শর্করা বেশি খান। এতেও চুল পড়তে পারে। তাই খাদ্যতালিকায় মাছ, মাংস, দুধ, ডিম, ডালের মতো খাবার রাখতে হবে।

ভিটামিন বি-১২ ও ভিটামিন-ডি চুলের বৃদ্ধি ঘটায় ও মাথার ত্বকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়। তাই এ দুটি ভিটামিনের অভাবে চুল পড়তে পারে। মাংস ও দুগ্ধজাত খাবারে ভিটামিন-১২ ও ভিটামিন-ডি আছে। যেসব নারী সূর্যালোকের সংস্পর্শে কম আসেন, তাঁদের ভিটামিন–ডির ঘাটতি হতে পারে। ঘাটতি বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী মাল্টিভিটামিন ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।

কিছু জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়িতে প্রোজেস্টেরন হরমোন থাকে। এটা নারীদের চুল পড়ার অন্যতম কারণ। তাই জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়ার আগে এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জানতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এ ছাড়া গর্ভধারণের সময় একজন নারীর শরীরে নানান হরমোনের পরিবর্তন ঘটে। এর প্রভাবে চুল পড়ে যেতে পারে। গর্ভধারণের তিন থেকে চার মাস পর পর্যন্ত চুল পড়া স্বাভাবিক হিসেবে দেখতে হবে। এরপরও চুল পড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ