বারবার রিমান্ডে নেয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ হাইকোর্টের

মেহ্দী আজাদ মাসুম : চিত্রনায়িকা পরীমনিকে বারবার রিমান্ডে নেয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রিমান্ডের অপব্যবহার করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন আদালত। তথ্য-উপাত্ত ছাড়াই কোন তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ডের আবেদন করল, আর আপনি (বিচারিক আদালত) মঞ্জুর করে দিলেন। এগুলো তো কোনো সভ্য সমাজে হতে পারে না, ঘটতে পারে না।’

পরীমনিকে বারবার রিমান্ডে নেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিটের শুনানিতে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বুধবার এসব কথা বলেন।

এদিকে আলোচনা-সমালোচনা ও সকল ষড়যন্ত্র ঘুচিয়ে বীরের বেশেই কারামুক্ত হয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। গতকাল বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি লাভ করেন। গত মঙ্গলবার পরীমনির জামিন হলেও সঠিক সময়ে জামিনের কাগজ কারাগারে না পৌঁছায় তার মুক্তি মেলেনি। গতকাল সকালে জামিনের কাগজ কারাগারে এসে পৌঁছানোর পর তা যাচাই-বাছাই শেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। দীর্ঘ ২৬ দিন পরীমনি এই কারাগারে বন্দী ছিলেন।

গতকাল সকাল থেকেই পরীমনির মুক্তির অপেক্ষায় তার খালু জসীমউদ্দিনসহ সাত-আটজন স্বজন কারাগারের সামনে অবস্থান করছিলেন। মুক্তি পাবেন এই খবর পেয়ে ভোর থেকেই কারা ফটকে উৎসুক মানুষও পরীমনিকে একনজর দেখার জন্য ভিড় করেন। এর আগে সকাল ৮টায় পরীমনির জামিনের কাগজ কারাগারে জমা দেন তার আইনজীবী নীলঅঞ্জনা রিফোত। কাগজ যাচাই-বাছাই শেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

গত ৪ আগস্ট বিকেলে বনানীর ১২ নম্বর রোডে পরীমনির বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। সন্দ্যার পর তাকে আটক দেখিয়ে র‌্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরের দিন তাকে বনানী থানায় হস্তান্তর করা হয়। এই দিন পরীমনির বিরুদ্ধে বনানী থানায় মাদকের উদ্ধার দেখিয়ে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। পরীমনির বিরুদ্ধে দায়ের করা এই মাদকের মামলায় গত ৫ আগস্ট প্রথম দফায় চার দিনের, ১০ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় দুই দিনের ও ১৯ আগস্ট তৃতীয় দফায় এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ২১ আগস্ট তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

২২ আগস্ট পরীমনির পক্ষে তার আইনজীবীরা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন। আদালত ১৩ সেপ্টেম্বর জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন। তবে জামিন শুনানির জন্য ২১ দিন পর দিন ধার্য করায় ওই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন পরীমনি। পরীমনির জামিন আবেদনের শুনানি ২১ দিন পর ১৩ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করে মহানগর দায়রা জজ আদালতের দেওয়া আদেশ কেন বাতিল ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেন হাইকোর্ট। এর পরই গত মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েস পরীমনির জামিনের আদেশ মঞ্জুর করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ