গ্যাসের ঘাটতি সামলাতে হিমশিম

gasরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাসাবাড়ি ও শিল্প কারখানায় গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। ডজন খানেক গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র বন্ধ রাখার পরও অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না।

পেট্রোবাংলা ও বিতরণকারী সংস্থা তিতাস বলছে, সীমিত উৎপাদনে বিদ্যুতকেন্দ্র ও সার কারখানায় একসঙ্গে গ্যাস দিতে গিয়ে এ সংকট।

পরিস্থিতি মোকাবেলার কৌশল নির্ধারণে বৃহস্পতিবার গ্যাস বিতরণকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বসছে পেট্রোবাংলা।

সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন) মো. কামরুজ্জামানের কাছে। তার কাছেও মিললো চাহিদা ও উৎপাদনের ‘বিস্তর’ ব্যবধানের কথা।

এবিসি নিউজ বিডিকে তিনি বলেন, “সমস্যা তো হবেই। কারণ চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন হচ্ছে না। বর্তমানে দৈনিক প্রায় ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে। এই ঘাটতি সামাল দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে আমাদের।”

দেশের সবচেয়ে বড় গ্যাস বিতরণকারী সংস্থা তিতাসের হিসাবে, এ মুহূর্তে তাদের প্রায় ২০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে।

তিতাসের পরিচালক (অপারেশন) মীর মশিউর রহমান এবিসি নিউজ বিডিকে বলেন, “আমরা দৈনিক ১৪৫ থেকে ১৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস বিতরণ করছি। আমাদের আরো ২০ কোটি ঘনফুট গ্যাস হলে চাহিদা সামাল দেওয়া সম্ভব।”

সাম্প্রতিক সময়ে এই সংকটের শুরু গত অগাস্টের শেষে পাঁচটি সার কারখানা চালু হওয়ার পর থেকে। বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর এসব কারখানা চালু হয়েছে।

পেট্রোবাংলার হিসাবে, বুধবার সাতটি সার কারখানায় গ্যাসের চাহিদা প্রায় ২৮ কোটি ঘনফুট, যার বিপরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে প্রায় ১৭ কোটি ঘনফুট। বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে প্রায় ১৩৪ কোটি ঘনফুটের চাহিদার বিপরীতে দেয়া হচ্ছে প্রায় ৯৮ কোটি ঘনফুট।

মোট গ্যাসের ৫০ শতাংশ যাচ্ছে বিদ্যুৎ ও সার কারখানায় এবং বাকিটা অন্যান্য খাতে।

মাঝে কিছুদিন পাঁচটি সার কারখানা বন্ধ থাকার কারণে ওই গ্যাস বিদ্যুৎ, শিল্প ও আবাসিকে দেয়া হয়েছে।

পেট্রোবাংলার পরিচালক কামরুজ্জামান বলেন, “যেহেতু এই মুহূর্তেই ঘাটতি মেটানোর কোনো উপায় নেই। তাই সবদিকেই কমবেশি লক্ষ্য রেখে ঘাটতি মেটাতে হচ্ছে।”

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, বুধবার জ্বালানির অভাবে ১১টি গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে, যেগুলোর উদপাদন ক্ষমতা ৯৪২ মেগাওয়াট। বিদ্যুতকেন্দ্র বন্ধ থাকায় আগের তুলনায় লোডশেডিংও বেড়েছে।

তিতাসের পরিচালক মশিউর রহমান বলেন, “মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ লাইনে আমাদের একটু সমস্যা হচ্ছে। কোন খাতে কীভাবে সমন্বয় করা হবে তা বৃহস্পতিবারের বৈঠকে ঠিক করা হবে।”

এদিকে তিতাস থেকে ১৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ বাড়ানোর জন্য পেট্রোবাংলার কাছে আবেদন করা হলেও তাতে সাড়া মেলেনি।

কামরুজ্জামানের ভাষ্য: “গ্যাস না থাকলে আমরা দেবো কীভাবে।”

পেট্রোবাংলার হিসাবে, বুধবার প্রায় ২৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করার কথা।

বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর গ্যাসের উতপাদন দৈনিক ৬০ কোটি ঘনফুট বাড়িয়ে ২৩০ কোটি ঘনফুট করা হয়েছে বলে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ