সম্রাটের নামে সাম্রাজ্য যাদের (পর্ব -১)

প্রতিবেদক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা:

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ রাজনীতির মাঠেও যেমন শক্ত অবস্থানের জানান দিয়ে শ্রেষ্ট সংগঠনের খেতাব পেয়েছে, তেমনি টেন্ডারবাজি এবং আলোচিত ক্যাসেনোতে অনন্য নজির স্থাপন করেছে।

ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড কঠোর অবস্থানে।

গোয়েন্দাদের তথ্যমতে যুবলীগ দক্ষিণ সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে ব্যবহার করে অনেকেই অবৈধভাবে ব্যাপক টাকার মালিক হয়ে গেছে।

এক সময় যারা দিনের পকেট খরচ চালাতে অনন্যের কাছে চাইতে হয়েছে, তারা আজ দামী গাড়ি, রাজধানীর বুকে কয়েকটি প্লটসহ বহু টাকার মালিক হয়েছে।

তাদের অর্থের উৎস জানতে গেলে বেড়িয়ে আসে ভয়ানক তথ্য। সচিবালয়ে প্রভাববিস্তারে আলোচিত মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদুর রহমান মাকসুদ।

যিনি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজউক, সিটি কর্পোরেশ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে তদবির ও টেন্ডারবাজিতে আদিপত্য বিস্তার করে কোটি টাকার মালিক) বনে যান।

মাকসুদুর রহমান নিজেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাবেক নেতা পরিচয় দিলেও এর কোন সত্যতা পাওয়া যায়নি।

কোথাও কোথাও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাও দাবি করেন। কিন্তু সম্রাটের হাত ধরেই রাজনীতিতে তার প্রভাব বিস্তার।

এছাড়া আরো জানা যায়, রাজধানীর কাকরাইলের উইল লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে স্ত্রীকে ক্ষমতা প্রয়োগ ও সম্রাটের নাম ভাঙিয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নিশ্চিত করান।

সূত্রমতে, মহানগর দক্ষিণের অন্তর্ভুক্ত ওয়ার্ড গুলোর কমিটি পাওয়া মানে ব্যাপক অর্থ মহানগরকে দিতে হয় ওয়ার্ড নেতাদের।

ওয়ার্ড সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক হতে হলে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা দিতে হয়। যার নিয়ন্ত্রণ করতো মহানগর দক্ষিণ সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদুর রহমান।

টাকার কমিটির কারণেই যুবলীগে সৃষ্টি হয়েছে ক্যাডার বাহিনী। যাত্রাবাড়ী থানাধীন ৫০ নং ওয়ার্ড সভাপতি সায়েম খন্দকার। যার নিয়ন্ত্রণে মাসে প্রায় কয়েক কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয় পরিবহন, হকার, ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। মাদক ও অস্ত্র ব্যবসার অভিযোগ রয়েছে সায়েম খন্দকারের বিরুদ্ধে। আর এ সায়েম খন্দকারকে নিয়ন্ত্রণ করে মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের মাকসুদুর রহমান মাকসুদ।

মাকসুদের নিয়ন্ত্রণে সদরঘাটের অন্যতম চাঁদাবাজ হিসেব পরিচিত, যার বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ ব্যাপক। ৩৭ নং ওয়ার্ড সভাপতি পাপন। মাসে কয়েক লাখ টাকা আসে মাকসুদের পকেটে।

এছাড়াও চার দলীয় জোট সরকারের আমলে এনামুল হক আরমান হাওয়া ভবন ঘনিষ্ঠ থাকলেও, আওয়ামী লীগের সময় যুবলীগে ভিড়ে। হয়ে যায় দক্ষিণ যুবলীগের সহ-সভাপতি। দেশে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম প্রথম নিয়ে আসেন এই আরমান। ক্যাসিনোর টাকা সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। আরমানের জীবন-যাপন ছিল অনেকটা রাজকীয়ভাবে। জানা যায়, বিদেশ ভ্রমনে যাওয়ার সময় নতুন মডেলদের না নিয়ে তিনি ভ্রমণ করে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

চরফ্যাশন ও মনপুরার নেতা সাবেক উপমন্ত্রী, বর্তমান যুব ও ক্রিড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি’র নাম ভাঙিয়ে সুপারিশ ও ক্ষমতা প্রয়োগের অভিযোগ রয়েছে মাকসুদের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, ক্লাব পাড়ার দুটি ক্যাসিনোর থেকে মাসিক বড় অঙ্কের একটি এমাউন্ট পেত মাকসুদ, আর এ সবই হয়েছে ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের কাছের মানুষ হিসেবে পরিচিত পাওয়ায়।

তবে এসব অভিযোগের সাথে ন্যূনতম সম্পর্ক নেই জানিয়ে মাকসুদুর রহমান গণমাধ্যম কর্মীদের আহবান জানিয়েছেন তার বিরুদ্ধে এধরনের সংবাদ পরিবেশন না করার।

এস আর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ