ক্ষুদে গানরাজ থেকে বাদ, সেরাকণ্ঠে চ্যাম্পিয়ন !

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, কিন্তু এটাই সত্য হলো এবারের ‘ফিজআপ-চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০১৭’ প্রতিযোগিতায়। চ্যানেল আইয়ের গানের এই রিয়্যালিটি শোতে এবার যুগ্মভাবে যে দুজন চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন, তাঁরা চ্যানেল আইয়ের আরেকটি প্রতিযোগিতা ‘ক্ষুদে গানরাজ’ থেকে বাদ পড়েছিলেন। এর মধ্যে ঐশী বাদ পড়েছিলেন সেরা ১৬ থেকে আর সুমনার বাদ পড়াটা উচ্চতা বেশি হওয়ায়। ওই সময় বাদ পড়ায় যতটা কষ্ট পেয়েছিলেন, এবার ‘ফিজআপ-চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০১৭’ আসরে যুগ্মভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়ে অনেক বেশি খুশি হয়েছে তাঁরা। আজ সোমবার দুপুরে ব্যাংকক বিমানবন্দরে বসে নিজেদের সেই দিনগুলোর কথা বললেন ঐশী ও সুমনা। এবার ‘ফিজআপ-চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০১৭’ প্রতিযোগিতায় যুগ্মভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন তাঁরা।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ব্যাংককের পাঁচতারা হোটেল চাত্রিয়ামের পাশে চাউ ফ্রেয়া নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হলো ‘ফিজআপ-চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০১৭’ প্রতিযোগিতায় গ্র্যান্ড ফিনালে। আজ দুপুরে ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন প্রতিযোগিতার বিচারক, অতিথি আর প্রতিযোগীরা।

৩৫ হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে সেরার মুকুটজয়ী ঐশী গানের তালিম নিচ্ছেন ছোটবেলা থেকে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ঐশীর গানের প্রথম হাতেখড়ি তাঁর ছোট খালার কাছে। এরপর সুনামগঞ্জের একজন ওস্তাদের কাছে তালিম নেন তিনি। মায়ের স্বপ্ন ছিল মেয়ে বড় শিল্পী হবে। মায়ের সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই ক্ষুদে গানরাজে নাম নিবন্ধন করেছিলেন ঐশী। তখন সেরা ১৬ থেকে বাদ পড়ার পর গানে আরও বেশি মনোযোগী হন। স্বপ্ন দেখেন সেরাকণ্ঠে অংশ নেওয়ার। দর্শকের ভালোবাসা ও বিচারকদের রায় ঐশীকে নিরাশ করেনি। সবার মন জয় করে এবার আসরে সেরার মুকুট জয় করেন তিনি।

ঐশী বলেন, ‘যে ভালোবাসা পেয়েছি, তার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। আজ ২২ জানুয়ারি আমার জন্মদিন। আগের রাতে এমন উপহার পেলাম, এই আনন্দ বলে বোঝাতে পারব না। আমি মহাখুশি। ক্ষুদে গানরাজ থেকে বাদ পড়ে বসে থাকিনি, দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে পথ চলেছি। পরিবার আর বন্ধুদের সমর্থন ও অনুপ্রেরণা ছিল।’

ঐশী আরও বলেন, ‘অনেক কষ্টে সেরার স্বীকৃতি পেয়েছি। তবে আজ থেকে শুরু হচ্ছে আমাদের আসল সংগ্রাম। চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ আমাদের প্ল্যাটফর্ম দিয়েছে। এখন আমরা যদি দেশের মানুষের কাছে নিজেদের প্রমাণ করতে পারি, সেটাই হবে সার্থকতা। এই সংগ্রামেও জয়ী হতে চাই।’

ঐশী সেরা ১৬ থেকে বাদ পড়লেও সুমনার বাদ পড়া ছিল আরও কষ্টের। এই বাদ পড়ার কারণে নাকি তার মনের মধ্যে জেদ চাপে। উচ্চতা গানে বাধা হতে পারে না, তা প্রমাণ করবে, এমন শপথ নেয় সুমনা। দুই বছরের মাথায় সেরাকণ্ঠে নাম নিবন্ধন করে ঢাকার মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এই শিক্ষার্থী। নানা ধাপ পেরিয়ে দর্শক আর বিচারকদের রায়ে সে-ও চ্যাম্পিয়ন হয়।

সুমনা বলল, ‘মায়ের স্বপ্ন ছিল পড়াশোনার পাশাপাশি আমি যেন সংগীতকেও সমান তালে এগিয়ে নিই। প্রথম যখন ফাইনালে উঠলাম, তখন মনে হলো মা-বাবার দোয়ায় স্বপ্নের পথে হাঁটছি। আর চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিজের নাম শোনার পর কী যে খুশি হয়েছি, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।’

সুমনা আরও বলে, ‘গানে সবেচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা ছিলেন আমার মা-বাবা। আমি দীর্ঘ ছয় বছর ধরে যাঁর কাছে শিখছি, তাঁর। দুই বছর আগে ক্ষুদে গানরাজ প্রতিযোগিতায় নাম লিখিয়েছিলাম। উচ্চতার কারণে বাদ পড়ে যাই। এটা আমার কাছে জেদ হিসেবে কাজ করেছিল। স্বপ্ন তো ছিলই।’

‘ফিজআপ-চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০১৭’ প্রতিযোগিতায় এবারের বিজয়ী ঐশী ও সুমনা পেয়েছে ৫ লাখ টাকা, প্রথম রানারআপ তৃষা পেয়েছে ৩ লাখ এবং দ্বিতীয় রানারআপ নান্নু পেয়েছে ২ লাখ টাকা।

এবার বিচারক ছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ, সামিনা চৌধুরী, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও মিতালী মুখার্জি। প্রকল্প পরিচালক ইজাজ খান স্বপন। উপস্থাপনা করেছেন মারিয়া নূর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ