বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে

bsfrরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ স্বামী-সন্তানের সঙ্গে সীমান্ত পার হওয়ার সময় এক বাংলাদেশি নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে।

গত জুলাই মাসের ওই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি দোষী বিএসএফ সদস্যদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মানবাধিকার সংস্থা ‘বাংলার মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ’ (মাসুম) ।

মাসুমের সেক্রেটারি কিরিটি রায় শুক্রবার ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে পাঠানো এক চিঠিতে জানান, গত ১১ জুলাই বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার খেদাপাড়া গ্রামে ওই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

মুম্বাই থেকে বাংলাদেশের নড়াইল জেলার মারোলিয়া গ্রামে নিজেদের বাড়ি ফেরার পথে স্বামী ও ছয় বছর বয়সী ছেলের সামনেই ৩০ বছর বয়সী ওই বাংলাদেশি নারী ধর্ষণের শিকার হন।

চিঠিতে বলা হয়, ধর্ষিত ওই নারী স্বামীর সঙ্গে মুম্বাইয়ে থাকতেন। সেখানে নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন তার স্বামী।

ধর্ষণের ঘটনার পর ওই বাংলাদেশি নারীকে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে চব্বিশ পরগনার পুলিশ। ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে আদালত তাকে স্বামী সন্তানসহ কারাগারে পাঠিয়ে দেয়।

মাসুমের চিঠিতে বলা হয়, কোনো নারী বা শিশু ‘ভিকটিম’ হয়ে থাকলে তাদের ক্ষেত্রে অবৈধ অনুপ্রবেশের আইন প্রযোজ্য হবে না বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে। তারপরও বিধি ভেঙে ওই নারী ও তার ছেলেকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ধর্ষণের অভিযোগে ওই নারী বিএসএফ কনস্টেবল সুরজিত দেবভার্মার বিরুদ্ধে  পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছে বলেও কিরিটি রায় তার চিঠিতে জানান।

“ওই বিএসএফ জওয়ানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে আমরা অসমর্থিত সূত্রে জানতে পেরেছি। তবে তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি।”

একটি নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশনের মাধ্যমে ধর্ষণের ঘটনার স্বাধীন তদন্তের জন্য ভারতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছেন কিরিটি।

একইসঙ্গে ধর্ষিত নারী ও তার ছেলেকে অবিলম্বে কারাগার থেকে কোনো ‘কেয়ার হোমে’ পাঠিয়ে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সীমান্তে সব ধরনের মানবাধিকার লংঘনের ঘটনাকে বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানিয়েছে মাসুম।

এর আগে ২০১১ সালে বাবার সঙ্গে কুড়িগ্রাম নিজ বাড়ি ফেরার পথে অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী।

কাঁটাতারের বেড়ায় পাঁচঘণ্টা ফেলানীর লাশ ঝুলে থাকার ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়।

ফেলানী হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনতে দেশের ভেতরে-বাইরে ব্যাপক শোরগোলের মধ্যে গত ১৩ অগাস্ট বিচার শুরু করে ভারত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ