এর চেয়ে ছেলেদের মৃত্যু ভালো

নিউজ ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার অংশে মাটিতে পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে আহত হয়েছে দুই ছেলে। এক ছেলের দুই পা উড়ে গেছে। ক্ষতবিক্ষত সারা শরীর। অন্যজনের অবস্থাও প্রায় এক। চট্টগ্রামের দুটি হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে তারা।

পাশে বসে থাকা মা বললেন, ‘ছেলেরা খুব কষ্ট পাচ্ছে। এর চেয়ে মৃত্যু ভালো ছিল। ভালো হয় সৃষ্টিকর্তা তাদের তুলে নিক।’

দুই ছেলের একজন ১৫ বছরের আজিজ হক। আজিজের রক্তের গ্রুপও বিরল। হাসপাতালে ওই গ্রুপের রক্ত নেই। আরেক ছেলের অবস্থাও প্রায় এক। সে আরেকটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

মধ্যবয়সী মা রশিদা হকের সঙ্গে কথা হয় বিবিসির সাংবাদিক রীতা চক্রবর্তীর। জানালেন, ছেলে আজিজের বাঁচার সম্ভাবনা কম।

একই হাসপাতালে থাকা আরেক নারী জানালেন, গোলাগুলির সময় পালাতে গিয়ে তাঁর পা মাটিতে পুঁতে রাখা বোমার ওপর পড়ে।

গত কয়েক সপ্তাহে মিয়ানমার থেকে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পার হয়ে ঢুকেছে বাংলাদেশে। গত রোববার লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল নিশ্চিত করে বলেছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী বাংলাদেশ সীমান্তে নিষিদ্ধ স্থলমাইন পুঁতে রেখেছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একটি সূত্র অবশ্য রয়টার্সকে বলেছে, সীমান্তে ১৯৯০ সালের দিকেই ওই বোমাগুলো পুঁতে রাখা হয়। তখন থেকেই সেনাবাহিনী এগুলো সরানোর চেষ্টা করছে। সম্প্রতি কোনো বোমা পুঁতে রাখা হয়নি।

বোমা বিস্ফোরণে আহত আরেক নারী সাবেকুর নাহার। চট্টগ্রামের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মধ্যবয়সী এই নারী বলেন, তিন ছেলেকে নিয়ে তিনি সীমান্ত পার হচ্ছিলেন। এ সময় মাটিতে পুঁতে রাখা বোমায় পা পড়ে। সাবেকুর আরও বলেন, ‘আমাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে, গুলি করা হচ্ছে। এর ওপর আবার মাটিতে বোমা পুঁতে রাখা হচ্ছে। ভাগ্য ভালো, বোমা বিস্ফোরণের সময় পেছনে থাকা সন্তানেরা অক্ষত রয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ