হরতাল ডেকেছে জামায়াত

hortalরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ নিবন্ধন বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আগামী ১২ ও ১৩ অগাস্ট ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী।

বৃহস্পতিবার বিকালে হাই কোর্টের রায়ের পর সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান।

সেই সঙ্গে আগামী ৩ অগাস্ট সারাদেশে বিক্ষোভের কর্মসূচি দিয়ে জামায়াত বলেছে, “অসাংবিধানিক, অগণতান্ত্রিক ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থী এ রায়ের বিরুদ্ধে আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।”

একটি রিট আবেদনের রায়ে হাই কোর্ট বলেছে, নির্বাচন কমিশনে ২০০৮ সালে পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ।

নিবন্ধন না থাকলে রাজনৈতিক দল হিসেবে সক্রিয় থাকা গেলেও নির্বাচনে অংশ নেয়া যায় না।

এই রায়ের ফলে জামায়াত আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না বলে ইসির কৌঁসুলি শাহদীন মালিক জানিয়েছেন।

তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে আপিল করে শাহদীন মালিকের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত জানিয়েছেন জামায়াতের কৌঁসুলি ও দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।

হাই কোর্টের রায়ের পরপরই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল বের করে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। মিছিল থেকে ধানমণ্ডি ও কমলাপুরে গাড়ি ভাংচুর ও হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

সন্ধ্যায় ডেমরায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেয় জামায়াতকর্মীরা। এছাড়া রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়ায়ও গাড়ি ভাংচুর হয়েছে।

রায় প্রত্যাখ্যান করে রফিকুল বলেন, এটি একটি ‘ভুল’ রায়। এ রায়ের মাধ্যমে সরকারের ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের’ প্রতিফলন ঘটেছে।

যুদ্ধাপরাধের দায়ে শীর্ষনেতাদের মৃত্যুদণ্ড ও কারাদণ্ডের আদেশের পর নিবন্ধন বাতিলের এই রায়ে স্পষ্টতই চাপের মধ্যে পড়েছে জামায়াত।

দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি রয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের। এর পরিপ্রেক্ষিতে রায়ের পর আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, এর রায় জামায়াত নিষিদ্ধের আইনি ভিত্তি হিসাবে কাজ করবে।

ShibirRallyতরিকত ফেডারেশনসহ কয়েকটি ইসলামী দলের রিট আবেদনে হাই কোর্টের এই রায় আসে। রায়কে ‘শিরোধার্য’ বলে নির্বাচন কমিশন বলেছে, তারা রায়ের অনুলিপি দেখে ‘দ্রুত’ ব্যবস্থা নেবে।

নিজেদের দেশের ‘প্রধান’ ইসলামী দল দাবি করে জামায়াত নেতা রফিকুল বলেন, “বাংলাদেশের পরিবর্তিত সংবিধানেও ‘বিস্মিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ ও রাষ্ট্রধর্ম ‘ইসলাম’ বহাল আছে। এমতাবস্থায় ধর্মীয় দল হিসেবে জামায়াতের রাজনৈতিক নিবন্ধন বাতিল করার প্রশ্নই উঠে না।”

তিনি দাবি করেছেন, এই রায় আগামী নির্বাচনে জামায়াতের অংশ নেয়া ‘বন্ধ’ করতে সরকারি ‘ষড়যন্ত্রের’ অংশ।

“সরকার একদলীয় নির্বাচনের যে চক্রান্ত করছে, এ রায়ের মাধ্যমে সেই ষড়যন্ত্র বাস্তুবায়নেরই ব্যবস্থা হয়েছে মাত্র। সরকার জনগণকে আদালতের মুখোমুখি দাঁড় করানোর যে কুটিল ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, আমি সেই ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

নিবন্ধনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসের একটি নথি উদ্ধৃত করে বিবৃতিতে বলা হয়, “দুটো দল ছাড়া বাকি যে ১১টি দলকে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে, সবারই গঠনতন্ত্র ত্রুটিপূর্ণ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ-১৯৭২ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

“হাই কোর্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করে অন্যান্য দলেরও নিবন্ধন বাতিলের যে দরজা উন্মুক্ত করলেন, তা গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনের জন্য মারাত্মক হুমকি।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ