প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতা প্রয়োগযোগ্য নয়

ec-comissonarরিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ বিধি লঙ্ঘনের জন্য প্রার্থিতা বাতিলের যে ক্ষমতা গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে নির্বাচন কমিশনকে দেয়া আছে তা ‘আদৌ প্রয়োগযোগ্য নয় এবং অর্থহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে দেয়া ওই ক্ষমতা ইসি ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তের পর বিভিন্ন মহলে আলোচনা সমালোচনার মধ্যেই গণমাধ্যমের কোছে এই ব্যাখ্যা দেন।

তিনি বলেন, “ধারাটি লেভেল প্লেইং ফিল্ড তত্ত্বের পরিপন্থী। একই আইনে পরস্পরবিরোধী বিধান রাখা আদৌ সমীচীন নয়।”

গত রোববার কমিশনের সভায় গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বহুল আলোচিত ৯১ (ই) ধারাটি বিলোপের সিদ্ধান্ত হয়।

ওই সভার পর নির্বাচন কমিশনার আবু হাফিজ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা নতুন বিধান সংযোজনের প্রস্তাব দেয়ার পরও সমালোচনা হচ্ছে। এজন্যে আরপিওর আলোচিত ধারাটি বিলোপ করতে চাইছি আমরা।”

নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ সোমবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, কারো চাপে নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করেই ইসির এ সিদ্ধান্ত।

নির্বাচনে গুরুতর অনিয়ম প্রমাণিত হলে নির্বাচন কমিশনকে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের ৯১ (ই) ধারায়।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সংশোধনীতে ওই ধারা বিলোপের পক্ষে যুক্তি দিয়ে সিইসি কাজী রকিব বলেন, “ প্রায়োগিক দিক হতে বিবেচনায় দেখা যায় যে, আর্টিকেল ১৯ এর ই আদৌ প্রয়োগযোগ্য নয় এবং অর্থহীন। এসব বিবেচনা করে আর্টিকেল ৯১(ই) বিলুপ্তির প্রস্তাব করা হয়েছে।”সিইসি বলেন, ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী বা তার এজেন্ট বিধি লঙ্ঘণ করলে তিনি সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য হতে পারেন। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন তদন্তের ভিত্তিতে তার প্রার্থীতা বাতিল করতে পারবে। এরপর অবশিষ্ট প্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচন হবে। তবে অবশিষ্ট প্রার্থী একজন হলে নির্বাচন কার্যক্রম বাতিল করে নতুন করে তফসিল দিতে হবে।

“এ অনুচ্ছেদে অবশিষ্ট প্রার্থী সংক্রান্ত বিধান স্ববিরোধী। এই অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে কোনো প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করার ফলে অবশিষ্ট প্রার্থী একাধিক হলে তাদের মাঝে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অর্থাৎ বাতিলকৃত প্রার্থী বা অন্য কেউ প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকবে না। কিন্তু অবশিষ্ট প্রার্থী একজন হলে নির্বাচন কার্যক্রম বাতিল করে নতুন করে তফসিল ঘোষণা করতে হবে এবং বাতিলকৃত প্রার্থীসহ আরও অনেকে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাবে।”

হয়রানির অভিযোগে’ গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিধানটি বাদ দেয়ার জন্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি ওঠে। বিএনপি এবারো ওই ধারা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে।

তবে ইসির এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. ছহুল হোসাইন বলেছেন, প্রার্থিতা বাতিলে ইসির এই ক্ষমতার কারণে প্রার্থীরা কখনো গুরুতর অনিয়ম করার সাহস পাননি। সুতরাং ধারাটি বাতিল করা হবে মারাত্মক ভুল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ