সাইবার নিয়ন্ত্রণ আইন যুগোপযোগী করার দাবি জেলা প্রশাসকদের

dc sonmelonসিনিয়র রিপোর্টার, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকাঃ ইন্টারনেট ব্যবহার করে অশ্লীলতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বিঘ্নিত করা, মিথ্যা গুজব রটানো, বানোয়াট স্থির ও ভিডিও চিত্র এবং সাম্প্রদায়িক অপপ্রচার বৃদ্ধি পাওয়ায় সাইবার নিয়ন্ত্রণ আইনটি যুগোপযোগী করে একে মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯-এ তফসিলভূক্ত করার দাবি জানিয়েছেন জেলা প্রশাসকরা।

মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা কক্ষে অনুষ্ঠিত ডিসি সম্মেলনের দ্বিতীয় কর্ম-অধিবেশনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত আলোচনায় এ দাবি জানান জেলা প্রশাসকরা।

বৈঠক সূত্র থেকে জানা যায়, জেলা প্রশাসকরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে অশ্লীলতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা বিঘ্নিত করা, মিথ্যা গুজব রটানো, বানোয়াট স্থির ও ভিডিও চিত্র এবং সাম্প্রদায়িক অপপ্রচারসহ বৃদ্ধি পাওয়ায় সাইবার নিয়ন্ত্রণ আইনটি যুগোপযোগী করে একে মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯-এ তফসিলভূক্ত করার দাবি জানান। তাদের এ দাবির প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে ‘মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯-এ তফসিলভূক্ত করা যেতে পারে।’

বান্দরবানে মাঝে মধ্যে বিক্ষিপ্তভাবে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপ কর্তৃক চাঁদা আদায় ও অপহরণের মতো ঘটনা পরিলক্ষিত হয়। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চাঁদাবাজি হয়ে থাকে। এ প্রসঙ্গে বৈঠকে আলোচনা হয়। সম্মেলনে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক জানান, সীমান্ত এলাকায় অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসীদের দখলে অবৈধ অস্ত্র রয়েছে। এর ফলে দুর্গম পার্বত্য এলাকায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন আইন বিরোধী কর্মকাণ্ড চলছে।

এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘বান্দরবানের সাঙ্গু মাতামুহুরী এবং বাকখালী নদীর পথে পণ্য ও যাত্রী পরিবহনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড স্টেশন পতেঙ্গা, সাঙ্গু ও মহেশখালীতে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। এ তিনটি স্টেশনকে আরো শক্তিশালী করা যেতে পারে। গোয়েন্দা পুলিশ প্রয়োজনীয় মোবাইল ট্র্যাকিং প্রযুক্তি মেশিন ব্যবহার করে নজরদারি বৃদ্ধি করা যেতে পারে।’

ইন্টারনেট ব্যবহার করে অশ্লীলতা, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ব্যাঘাত সৃষ্টি, মিথ্যা গুজব রটানো, বানোয়াট স্থির ও ভিডিও চিত্র এবং সাম্প্রদায়িক অপপ্রচারসহ নানাবিধ সাইবার ক্রাইম বেড়ে গেছে। এ ধরনের অপরাধরোধে সাইবার আইন যুযোপযোগী করার প্রয়োজন বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় মত প্রকাশ করে।

ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, নাটোর ও নরসিংদীর জেলা প্রশাসকরা আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি ও অপরাধ সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোন মতামত দেয়নি।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে জানান, এসিড আমদানী, উৎপাদন, মজুদ, পরিবহন, বিক্রয় ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা ২০০৪-এ ব্যবহার ও বিক্রির ক্ষেত্রে লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ কি পরিমান মজুত করবে তা উল্লেখ নাই। জেলা প্রসাশক আইনের মাধ্যমে নির্ধারণ করার সুপারিশ করেন।

এ পেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মতামতে জানিয়েছে, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পরিমান নির্ধারণ করা যেতে পারে।

সিলেট বিভাগীয় কমিশনার সম্মেলনে জানান, মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯-এর আওতায় কোন বিধিমালা না হওয়ায় মাঠ পর্যায়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সমস্যা হচ্ছে। বিভাগীয় কমিশনার বিধিমালা প্রণয়ন করার প্রস্তাব করেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিধিমালা প্রণয়ন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শিগগিরই নীতিমালা জারি করা হবে।

যশোরের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে জানান, মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯-এর আওতায় ফেন্সিডিল বহন ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে অপরাধ বিচার করার সুযোগ না থাকায় মাদক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফেন্সিডিল সেবন, বিক্রি ও বহনের বিষয়টি আইনে অন্তর্ভূক্ত করার সুপারিশ করেন জেলা প্রশাসক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে আইনে বিষয়টি তপশিলভূক্ত করা যেতে পারে।

বর্তমানে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটে কার্যালয় থেকে চোরাচালান প্রতিরোধ টাস্কফোর্স অভিযান, উচ্ছেদ, পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় গোপনীয় দলিলপত্র আনা ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। এসব অভিযানে পুলিশ ফোর্স না পাওয়ায় এবং পুলিশের স্বল্পতা থাকায় প্রত্যাশিত মাত্রায় অভিযান ফলপ্রসু হয়না। এক প্লাটুন পুলিশ ফোর্স স্থায়ীভাবে মোতায়েন কিংবা পৃথক পুলিশ ইউনিট বা মোবাইল কোর্ট পুলিশ গঠন করার সুপারিশ করা হয়।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মোবাইল কোর্ট পুলিশ গঠনে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যেতে পারে বলে মতামত দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ