নতুন লক্ষ্যের নিউজিল্যান্ড সফর

স্পোর্টস ডেস্ক, এবিসি নিউজ বিডি, ঢাকা: নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশ দলের পুরোনো প্রতিপক্ষ। তবে নতুন হলো এবার নিউজিল্যান্ডগামী বাংলাদেশ দলের মানসিকতা। তাদের উদ্দেশ্য এবং তাদের কাছে প্রত্যাশাও নতুন।
গত বিশ্বকাপ থেকেই ক্রিকেট-বিশ্বে বাংলাদেশের পরিচয়টা অন্য রকম। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে বিশ্বকাপ খেলে এসেই ঘরের মাঠে বাংলাদেশের শক্তিমত্ত হয়ে ওঠা। ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ১৮টি ওয়ানডে খেলে ১৩টিতেই জয়। সামনে পড়া কোনো দলই স্বস্তি পায়নি। পাকিস্তানকে ওয়ানডেতে ধবলধোলাই করে শুরু। সর্বশেষ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হারা ওয়ানডে সিরিজেও একটা জয় ছিল।
এই সিরিজের উজ্জ্বলতম দিক ইংল্যান্ডকে টেস্টে হারানো। ঢাকা টেস্টের ওই জয়টিসহ গত ১৯ মাসে টেস্টেও অন্য বাংলাদেশকেই দেখা গেছে। সাত টেস্ট খেলে চারটিতে ড্র, একটিতে জয় ও দুটি হার। ওয়ানডের পারফরম্যান্সকে টেস্টের সঙ্গে হয়তো মেলানো যায় না। তবে ওয়ানডের সাফল্যজাত আত্মবিশ্বাস যে সাদা পোশাকের ক্রিকেটেও সঞ্চারিত হতে পারে, তার প্রমাণ দিয়েছে ‘নতুন’ এই বাংলাদেশ।
নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশ দলের লক্ষ্যও নতুন। গত বিশ্বকাপের পর থেকে পাওয়া সাফল্যগুলো সবই দেশের মাটিতে। অনেকে বলেছেন, দেশের মাটিতে যত ভালোই খেলুক, বাংলাদেশকে আসল চ্যালেঞ্জটা নিতে হবে বিদেশের মাটিতে। সেই চ্যালেঞ্জ নিতেই দলের একটা অংশ কাল রাতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে দেশ ছেড়েছে। অন্যরা যাবে কাল। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে নয় দিনের প্রস্তুতি ক্যাম্প হবে নিউজিল্যান্ড সফর সামনে রেখে।
নতুন লক্ষ্যের ঘোষণা পরশু রাতেই দিয়েছেন টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, ‘অবশ্যই এটা একটা নতুন চ্যালেঞ্জ। তবে বিশ্বকাপে সেখানে আমরা ভালো খেলেছি। সেটা নিশ্চয়ই আত্মবিশ্বাস জোগাবে। আমাদের নতুন লক্ষ্য বিদেশের মাটিতে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলা।’
লক্ষ্য পূরণে ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বটাই বেশি দেখছেন বিপিএলের পঞ্চম সেরা ব্যাটসম্যান, ‘আমরা আসল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হব যখন ব্যাটিংয়ে নামব। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের সুইং সামলানোটাকেই বড় চ্যালেঞ্জ মনে করছি। ব্যাটসম্যানরা সম্মিলিতভাবে চেষ্টা করলে সফরটা ভালো হবে, ইনশা আল্লাহ।’
ব্যাটসম্যানদেরই একজন ইমরুল কায়েসের কণ্ঠে আত্মবিশ্বাস, অচেনা কন্ডিশন জয় করতে পারলে নতুন লক্ষ্য পূরণও অসম্ভব নয়, ‘এই সফর আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ। নিজেদের প্রমাণের অনেক কিছু আছে। দেশে ভালো খেললেও দেশের বাইরে আমরা এখনো ততটা ভালো খেলতে পারিনি। মুখে যতই বলি ভালো ক্রিকেট খেলব, ওখানে গিয়ে ভালো না খেললে লাভ নেই। আশা করি, কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে আমরা সেটা পারব।’
বাংলাদেশ দল নিউজিল্যান্ডে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছে ২০১৫ বিশ্বকাপে। তবে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে ২০১০ সালের পর আর নিউজিল্যান্ডে যাওয়া হয়নি। ছয় বছর আগের সেই সফরে ইমরুলের আছে একটা সুখস্মৃতি। যে ক্রাইস্টচার্চে এবার প্রথম ওয়ানডে, ২০১০-এর সফরের শেষ ওয়ানডেটা হয়েছিল সেখানেরই আরেক মাঠে। তাতে সেঞ্চুরি করেছিলেন এই বাঁহাতি ওপেনার। তবে সুখের হলেও ইমরুল সেই স্মৃতি আঁকড়ে থাকতে রাজি নন, ‘ছয় বছরে অনেক কিছু বদলে গেছে। ওটা নিয়ে ভাবতে গেলে হবে না। এখন সব নতুন করে শুরু করতে হবে।’
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের পর থেকেই বাজে সময় যাচ্ছে সৌম্য সরকারের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পর বিপিএলও ভালো যায়নি। অস্ট্রেলিয়ার ক্যাম্পে তাঁর প্রথম লক্ষ্যই থাকবে নিজেকে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা, ‘ওখানে যত বেশি সম্ভব অনুশীলন করা যায়, এটাই লক্ষ্য।’ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সিডনি সিক্সার্স ও সিডনি থান্ডারের বিপক্ষে ১৪ এবং ১৬ ডিসেম্বর দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। সৌম্য আপাতত পাখির চোখ করছেন এই ম্যাচ দুটিকেই, ‘প্রস্তুতি ম্যাচে লম্বা সময় ব্যাটিং করার চেষ্টা করব।’
নতুন লক্ষ্যের নিউজিল্যান্ড সফরে সাফল্যের সূত্র হতে পারে এটাই, ব্যক্তিগত লক্ষ্যগুলোয় সফল হওয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ