পরিচালক সমিতির ওপর খোকনের পরিবারের অভিযোগ

বিনোদন ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি,ঢাকা: দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রপরিচালক শহীদুল ইসলাম খোকন। তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছে গত ২৫ জানুয়ারি থেকে। প্রায়ই ‘ও পজেটিভ’ রক্তের প্রযোজন হচ্ছে তাঁর। জরুরি এই প্রয়োজন মেটানো খুবই কঠিন হয়ে পড়ছে তাঁর পরিবারের জন্য। পরিচালক সমিতিও এ বিষয়ে কোনো ধরনের সহযোগিতা করছে না বলে আক্ষেপ করেছে তাঁর পরিবার।

শহীদুল ইসলাম খোকনের ভাতিজা রাইসুল রনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, “যেহেতু চাচার শরীর কাজ করছে না আর কৃত্রিমভাবে তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখা হয়েছে, তাই প্রায়ই উনার ‘ও পজেটিভ’ রক্তের প্রয়োজন হয়। গত বৃহস্পতিবার হঠাৎই উনার রক্তের প্রয়োজন হয়। আমরা এফডিসির পরিচালক সমিতিতে যোগাযোগ করলেও কোনো প্রকার সাহায্য তারা আমাদের করেনি। পরে আমার বন্ধুস্থানীয় কয়েকজন এসে সেই অবস্থা থেকে উদ্ধার করে। আমরা তো পরিচালক সমিতির কাছ থেকে এমন আশা করি না। আমার চাচা সারাজীবন চলচ্চিত্র নিয়ে কাজ করেছেন। পরিচালক সমিতিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমাদের একটা প্রত্যাশা থাকতেই পারে পরিচালক সমিতির কাছে।”

এ বিষয়ে পরিচালক সমিতির মহাসচিব মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই বিভিন্নভাবে উনার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা সব বিষয়ে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এমনকি প্রতি মাসে উনার ঔষধের খরচ পরিচালক সমিতি বহন করছে, যা এর আগে অন্য কোনো পরিচালকের বেলায় হয়নি। কিন্তু রক্তের বিষয়টা আসলে, সবাই তো আর রক্ত দিতে সাহস পায় না। আবার ও পজেটিভ হতে হবে! আমরা চেষ্টা করে না পেলে আসলে কী করার আছে?’

মহাসচিব যোগ করেন, ‘পরিচালক সমিতি বা চলচ্চিত্রের অন্য সংগঠনগুলোতে জানানো হলে আমাদের নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ বোর্ডে লিখে রাখি, খাতা দেখে যাদের রক্তের গ্রুপের সাথে মিলে তাদের ফোন করি। দেখা যায়, অনেকেই ঢাকার বাইরে বা কিছুদিন আগেই রক্ত দিয়েছে। আবার এমনও আছে রক্তের গ্রুপ মিলেছে কিন্তু রক্ত দিতে ভয় পায়। কিন্তু আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি থাকে না।’

২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর সকালে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এ নির্মাতাকে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ‘মটর নিউরন ডিজিস’ (এএলএস)-এ আক্রান্ত। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া ‘ম্যাডাম ফুলি’ সিনেমাটির এ নির্মাতা অভিনেতা ও প্রযোজক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানার সহকারী হিসেবে চলচ্চিত্রাঙ্গনে যুক্ত হন। টানা ১০ বছর তিনি সোহেল রানার সহকারী হিসেবে কাজ করেন। ‘রক্তের বন্দী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে খোকন তাঁর পরিচালনার অধ্যায় শুরু করেন। কিন্তু ছবিটি সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। তাঁর পরিচালিত দ্বিতীয় ছবিটিও ব্যর্থ হয়।

এরপর সোহেল রানার ছোট ভাই রুবেলকে নিয়ে খোকন নির্মাণ করেন ‘লড়াকু’। এ ছবিটির মাধ্যমে পরিচিতি পান খোকন। মার্শাল আর্ট এবং অ্যাকশনধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণ করে খোকন বাংলা চলচ্চিত্রে অনেক নতুন মুখ উপহার দেন। এঁদের মধ্যে ড্যানি সিডাক, সিরাজ পান্না, ইলিয়াস কোবরা, চিত্রনায়িকা শিমলা রয়েছেন। সমাজের নানা অসঙ্গতি রুপালি পর্দায় চিত্রায়নের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির অপচেষ্টাকে খোকন তাঁর চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ