চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশর উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটি আজ

ক্রিয়া ডেস্ক, এবিসিনিউজবিডি,ঢাকা: চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ ভারত ও পাকিস্তানের ক্রিকেটীয় লড়াই সব সময়ই ছড়ায় বাড়তি উত্তেজনা। এশিয়া কাপের আসরে উত্তাপ-উত্তেজনার পারদ যেন চড়ে যায় আরো কয়েক ধাপ। গত তিনটি আসরেই রোমাঞ্চকর সব মুহূর্তে ঠাসা উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ উপহার দিয়েছে প্রতিবেশী এই দুই দেশ। এবারের এশিয়া কাপেও ধোনি-আফ্রিদিদের তেমন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চালাতে দেখা যাবে- এমন প্রত্যাশা নিয়েই অপেক্ষা করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।

শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হবে ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটীয় লড়াই।

২০১৪ সালে এশিয়া কাপে প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচটা দারুণভাবে জিতে গিয়েছিল পাকিস্তান। শেষ ওভারে টানা দুইটি ছয় মেরে দলকে অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দিয়েছিলেন শহীদ আফ্রিদি। এবার তাঁর নেতৃত্বেই এশিয়া কাপ শিরোপা জয়ের মিশন শুরু করতে যাচ্ছে পাকিস্তান।

ঢাকার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে শুরুতে ব্যাটিং করে ভারত সংগ্রহ করেছিল ২৪৫ রান। ভারতের অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজার সহজ একটি ক্যাচ মিস করেছিলেন মোহাম্মদ হাফিজ। ১২ রানে জীবন পেয়ে জাদেজা শেষপর্যন্ত খেলেছিলেন ৪৯ বলে ৫২ রানের অপরাজিত ইনিংস।

২৪৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের শুরুটাও হয়েছিল দারুণভাবে। প্রথম ১১ ওভারে ৭১ রান জমা করে দলকে জয়ের পথে অনেকখানি এগিয়ে দিয়েছিলেন সারজিল খান ও আহমেদ শেহজাদ। তবে এরপর অল্প সময়ের মধ্যে তিন-চারটি উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে পড়ে যায় পাকিস্তান। ৭৫ রানের ইনিংস খেলে হাফিজ অবশ্য লড়াই চালিয়েছিলেন দারুণভাবে। ৪৪তম ওভারে হাফিজ আউট হওয়ার পর আফ্রিদি যখন উইকেটে আসেন তখন পাকিস্তানের স্কোর ছিল ২০০/৫। জয়ের জন্য শেষ ৩৬ বলে প্রয়োজন ছিল ৪৪ রান। তখনও জয়ের পাল্লা ভারি ছিল পাকিস্তানেরই। ৪৫তম ওভারে ৩৮ রান করা শোয়েব মাকসুদ রান আউট হয়ে গেলে পাকিস্তানের জয়ের স্বপ্ন অনেকটাই ফিকে হয়ে যায়। ৪৯তম ওভারে আরো দুইটি উইকেট হারানোর পর শেষ ওভারে পাকিস্তানের জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৬ বলে ১০ রান। শেষ ওভারের প্রথম বলে অশ্বিন তুলে নেন আরো একটি উইকেট। ম্যাচের ভাগ্য দুলতে শুরু করে পেণ্ডুলামের মতো। কিন্তু আফ্রিদি ব্যাটিংয়ে এসেই টানা দুইটি বলে ছয় মেরে পাকিস্তানকে জিতিয়ে দেন অবিশ্বাস্যভাবে।

২০১২ সালের এশিয়া কাপেও দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ উপহার দিয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। শুরুতে ব্যাটিং করে মোহাম্মদ হাফিজ ও নাসির জামশেদের দারুণ শতকে ভর করে ৩২৯ রান জমা করেছিল পাকিস্তান। জয়ের পথেও এগিয়ে গিয়েছিল অনেকখানি। কিন্তু ১৪৮ বলে ১৮৩ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে ভারতকে ছয় উইকেটের জয় এনে দিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। একদিনের ক্রিকেটে এটাই কোহলির ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। পাকিস্তানের বিপক্ষে এটাই ভারতের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড।

২০১০ সালের এশিয়া কাপেও ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ ছিল উত্তেজনার বারুদে ঠাসা। ২৬৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪৫.১ ওভার শেষে ভারত হারিয়েছিল ছয়টি উইকেট। শোয়েব আকতার ও মোহাম্মদ আমিরের বলে দুইটি ছয় মেরে ভারতকে সেই ম্যাচটি দারুণভাবে জিতিয়েছিলেন হরভজন সিং। শোয়েব আকতারের সঙ্গে মাঠেই তর্ক-বিতর্কে জড়িয়েছিলেন হরভজন। ভারতের ইনিংস চলার সময় গৌতম গম্ভীরও কথার লড়াইয়ে জড়িয়েছিলেন পাকিস্তানের উইকেটরক্ষক কামরান আকমলের সঙ্গে। গম্ভীরই খেলেছিলেন ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৩ রানের ইনিংস।

এশিয়া কাপে সব মিলিয়ে ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হয়েছে ১১বার। দুই দলই পেয়েছে পাঁচটি করে জয়। পরিত্যক্ত হয়েছিল একটি ম্যাচ। এই পরিসংখ্যান থেকেও টের পাওয়া যায় যে, এশিয়া কাপের মঞ্চে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ কতটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে ওঠে। এবারের আসরেও ভারত-পাকিস্তানের জমজমাট একটা ম্যাচ উপভোগ করা যাবে- এমন আশা নিয়েই অপেক্ষা করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
ব্রেকিং নিউজ